সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ: বিসিবি সভাপতি ফারুক পদচ্যুত হওয়ার পর এই মুহূর্তে গ্রেফতার বিস্তারিত কমেন্টে’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ গ্রেফতার হননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘amardeesh247’ নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। অপরদিকে আমার দেশের আসল ডোমেইন নাম ভিন্ন। উক্ত ‘amardeesh247’ নামের এই ব্লগস্পটের সাইটে “অবশেষে বাতিল হলো ফারুক আহমেদের বিসিবি সভাপতির পদ” শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ গত ২৯ মে ২০২৫ প্রকাশ করা হয়েছে।
কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের পরিচালক পদ বাতিল করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। বৃহস্পতিবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর ফলে, তিনি সভাপতির পদেও আর বহাল থাকতে পারছেন না। পদটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। বিসিবির ৮ পরিচালক স্বাক্ষরিত এক অনাস্থা চিঠিতে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আনা হয়। চিঠিটি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কাছে পাঠানো হয়। স্বাক্ষরকারী পরিচালকরা হলেন: নাজমুল আবেদিন ফাহিম, মাহবুব আনাম, ফাহিম সিনহা, সাইফুল ইসলাম স্বপন চৌধুরি, ইফতেখার রহমান মিঠু, কাজী ইনাম আহমেদ, মঞ্জুর আলম, মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী (তবে সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি)। ফারুকের পদ হারানোর পর বিসিবির নতুন সভাপতি হিসেবে আলোচনায় এসেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
উক্ত সংবাদটি পর্যালোচনা করে এতে গ্রেফতারের দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
বিসিবির সভাপতির মতো ব্যক্তি গ্রেফতার হলে সে বিষয়ে গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও উক্ত দাবির সত্যতা মেলেনি। বরং, ৩০ মে ফারুক আহমেদ দেশ ছাড়ার গুঞ্জন সম্পর্কে যমুনা টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জানান, তিনি দেশেই আছেন এবং আজ (৩১ মে) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান তুলে ধরবেন।
উল্লেখ্য, ফ্রি ডোমেইনের ব্লগসাইট ব্যবহার করে অপতথ্য ছড়ানোর এই পদ্ধতি গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। সম্প্রতি রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে বেরিয়ে এসেছে এসব সাইটের পেছনে কারা আছেন, কারাই বা এসব সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এবং কাদের এসব অপতথ্যের শিকার বানানো হচ্ছে। পড়ুন এখানে।
সুতরাং, সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ গ্রেফতার হয়েছেন শীর্ষক তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Jamuna Television – দেশ ছাড়ার প্রশ্নই আসে না: ফারুক আহমেদ
- Rumor Scanner’s analysis