সম্প্রতি, ‘যাকে জনগন চায়না সে ক্ষমতায় ছিল ১৬ বছর আর যাকে জনগন চায় তাকে সরাতে উঠে পড়ে লেগেছে ক্ষমতালোভী আরেক দল- খালেদ মুহিউদ্দীন’ শীর্ষক দাবিতে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রসঙ্গে খালেদ মুহিউদ্দীনকে উদ্ধৃত করে কালের কণ্ঠ এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে খালেদ মুহিউদ্দীনের বক্তব্য নিয়ে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে৷
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে কালের কণ্ঠের লোগো রয়েছে এবং আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১ জুন ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।
কালের কণ্ঠেরলোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত ১ জুন গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথায় কথায় বিগত সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের কথা বলেন। একটা চুক্তি আপনি আমাকে দেখানতো যেটা ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাতিল করছেন এই নয় মাসে; ভারতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি এসে প্রথম টাকা দিয়েছেন আদানিকে। – খালেদ মুহিউদ্দীন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। কালের কণ্ঠের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথায় কথায় বিগত সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের কথা বলেন। একটা চুক্তি আপনি আমাকে দেখানতো যেটা ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাতিল করছেন এই নয় মাসে; ভারতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি এসে প্রথম টাকা দিয়েছেন আদানিকে। – খালেদ মুহিউদ্দীন’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘যাকে জনগন চায়না সে ক্ষমতায় ছিল ১৬ বছর আর যাকে জনগন চায় তাকে সরাতে উঠে পড়ে লেগেছে ক্ষমতালোভী আরেক দল- খালেদ মুহিউদ্দীন’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

অর্থাৎ, কালের কণ্ঠের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূল ফটোকার্ড সম্বলিত কালের কণ্ঠের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি একটি টকশো অনুষ্ঠানে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের বক্তব্যের বরাতে বলা হয়, ড. ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান এইটা আমি বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা থেকে দেখাতে পারি, এইটা তার ইচ্ছা। ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথায় কথায় বিগত সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের কথা বলে। একটা চুক্তি আপনি আমাকে দেখানতো যেটা ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাতিল করছে এই নয় মাসে। ভারতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম এসে তিনি প্রথম টাকা দিয়েছেন আদানিকে।
পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
খালেদ মুহিউদ্দীনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের লক্ষ্যে খালেদ মুহিউদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে রিউমর স্ক্যানার টিমকে নিশ্চিত করেন।
সুতরাং, ‘যাকে জনগন চায়না সে ক্ষমতায় ছিল ১৬ বছর আর যাকে জনগন চায় তাকে সরাতে উঠে পড়ে লেগেছে ক্ষমতালোভী আরেক দল- খালেদ মুহিউদ্দীন’’ শীর্ষক দাবিতে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।
তথ্যসূত্র
- Kaler Kantho – ড. ইউনূস ৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান : খালেদ মুহিউদ্দীন
- Statement of Khaled Muhiuddin
- Khaled Muhiuddin: Facebook Account
- Kaler Kantho: Facebook Post