সম্প্রতি ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ ইউটিউব চ্যানেলে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন সঞ্চালিত এক ভার্চ্যুয়াল টকশোতে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু দাবি করেছেন, ‘এনসিপি পর্দার অন্তরালে আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছে। ৭০ বা ৫০টি আসন নিয়ে তারা সমঝোতার কথা বলেছে। যদি পর্দার আড়ালে আসন ভাগাভাগি হয়ে যায়, তাহলে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হয়ে যেতে পারে।’ এরই প্রেক্ষিতে, “বিএনপির সাথে আসন ভাগাভাগি সমঝোতার দাবি সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। কোন দলের সাথে এনসিপির আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনা হয়নি। তবে সমঝোতা হবে না এটার নিশ্চয়তা নাই, রাজনীতিতে এটা কমন বিষয়। -হাসনাত আব্দুল্লাহ” শীর্ষক দাবিতে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি ও সমঝোতার প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্য দাবি করে কালের কণ্ঠ এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য নিয়ে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে৷
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে কালের কণ্ঠের লোগো রয়েছে এবং আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ৩১ মে ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।
কালের কণ্ঠেরলোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবিসম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত ২৬ মে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। কাজেই সম্মানিত ওই রাজনীতিবিদের বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। – হাসনাত আব্দুল্লাহ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। কালের কণ্ঠের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। কাজেই সম্মানিত ওই রাজনীতিবিদের বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। – হাসনাত আব্দুল্লাহ’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘বিএনপির সাথে আসন ভাগাভাগি সমঝোতার দাবি সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। কোন দলের সাথে এনসিপির আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনা হয়নি। তবে সমঝোতা হবে না এটার নিশ্চয়তা নাই, রাজনীতিতে এটা কমন বিষয়। -হাসনাত আব্দুল্লাহ’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

অর্থাৎ, কালের কণ্ঠের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূল ফটোকার্ড সম্বলিত কালের কণ্ঠের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, যে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে কোনোরকম আসন ভাগাভাগির সমঝোতা করছে না।
পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি ও সমঝোতার দাবি প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্য দাবিতে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।
তথ্যসূত্র
- Kaler Kantho – বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগির দাবি নিয়ে যে বার্তা দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
- Kaler Kantho: Facebook Post
- Kaler Kantho: Website
- Kaler Kantho: Youtube