বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুনে নিহত পরিবার দাবিতে জীবিত একটি পরিবারের ছবি প্রচার

গত ৫ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আগুনে পুড়ে এখন পর্যন্ত অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। 

বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুনে নিহত পরিবারের ছবি দাবি করে ফেসবুকে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। “এই পরিবারটি গতকাল বেনাপোল এক্সপ্রেসের ট্রেন দূর্ঘটনায় পুড়ে মারা গিয়েছিলো।” এবং “গতকাল বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্নিকাণ্ডে এই স্ত্রী ও তার সন্তানের পুড়ে যাওয়ায় নিজের জীবনটাও বিলিয়ে দিয়েছেন এই ভাই..!” ইত্যাদি শিরোনামে ওই ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে।  

এক্সপ্রেসের আগুনে নিহত

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যে ছবিটি প্রচারের মাধ্যমে বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুনে নিহত পরিবারের ছবি দাবি করা হয়েছে সেটি বেনাপোল এক্সপ্রেসে নিহত কোনো পরিবারের ছবি নয় বরং ওই ছবির প্রত্যেকে জীবিত। ছবিটি ভুলভাবে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনে নিহত হওয়ার ঘটনার সাথে যুক্ত করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে Chanchal Barman নামের ফেসবুক আইডির একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। চঞ্চল বর্মণ সেই পোস্টে ওই ছবির পরিবার বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুনে নিহত হয়েছে শীর্ষক দাবির দুটি পোস্টের স্ক্রিনশট যুক্ত করে লিখেছেন– “আমার এই ছবি নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে কেউ ভুয়া নিউজ ছড়াছে…. দয়া করে কেউ বিশ্বাস করবেন না।”

Screenshot: Facebook 

সেই পোস্টে তিনি তার স্ত্রী Babita Roy এর ফেসবুক আইডিও ট্যাগ করেছেন। ববিতা রায়ের আইডিতেও ওই একই পোস্ট পাওয়া যায়। চঞ্চল বর্মণ এবং ববিতা রায়ের সাথে ভাইরাল ওই ছবির স্বামী-স্ত্রীর হুবহু মিল রয়েছে। অর্থাৎ, ওই ছবির স্বামী-স্ত্রী হচ্ছেন চঞ্চল বর্মণ ও ববিতা রায় দম্পতি এবং তারা তাদের ছবি নিয়ে প্রচারিত ভুল তথ্য নিজেরাই ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। 

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে চঞ্চল বর্মণের আইডির একটি পোস্টে ভাইরাল ওই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। “রূপম বাবুর বছরের প্রথম পূজায় ঘুরাঘুরি” শিরোনামে গত বছরের ২৩ অক্টোবর তিনি ওই ছবিটিসহ মোট ৭টি ছবি যুক্ত করে পোস্টটি করেছিলেন।

Screenshot: Facebook

মূলত, গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুনের ঘটনায় মৃত পরিবার দাবিতে চঞ্চল বর্মণ ও ববিতা রায় দম্পতির তাদের সন্তানের সাথে তোলা গত বছরের পূজোর একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে। নিজেদের ছবি নিয়ে এই ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে ওই দম্পতি বিষয়টিকে ভুয়া নিশ্চিত করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

সুতরাং, বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুনে মারা যাওয়া পরিবার দেখিয়ে চঞ্চল-ববিতা দম্পতির পরিবারের ছবি প্রচার করে তাদের নিহত হওয়ার দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Chanchal Barman: Facebook Post
  • Rumor Scanner’s own analysis  

আরও পড়ুন

spot_img