ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ০৫ আগস্ট তারিখে ক্ষমতা হারায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। উক্ত গণঅভ্যুত্থানকে অনেকেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলেও আখ্যায়িত করছেন। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একজন পুরুষ ব্যক্তির নাচের একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি নীলফামারী সদর উপজেলা শিবির নেতার স্বাধীনতা উদযাপনের দৃশ্যের।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উল্লিখিত তিনটি ভিডিও সম্মিলিতভাবে প্রায় ৬ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং সবচেয়ে ভাইরাল একক ভিডিওটিতে ১০ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওটিতে নৃত্যরত ব্যক্তি শিবির নেতার সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই, তাছাড়া ভিডিওটি গত জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সাথেও সম্পৃক্ত নয়। বরং প্রায় ৪ বছর আগে থেকেই এই ভিডিওটি পাকিস্তানের লাহোরের এবং শাহবাজ নামের এক ব্যক্তির নাচের ভিডিও দাবিতে অনলাইনে বিদ্যমান আছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওতে নৃত্যরত ব্যক্তি শিবিরের এমন দাবির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করতে দেখা যায়নি।
পরবর্তীতে ভিডিওটি থেকে একাধিক কী-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ইউটিউবে Waqas Sonu নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল তারিখে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।
উক্ত ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত ব্যক্তির নাচের আরো একাধিক ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়।
ভিডিওটির বর্ণনাতে পাকিস্তানের লাহোরের কথা উল্লেখ করা হয় এবং ঐ ব্যক্তির নাম মোলভি শাহবাজ বলা হয়। ভিডিওটিতে কোথাও বাংলাদেশ বা শিবিরের উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া, ভিডিওটি সম্প্রতি বাংলাদেশে হওয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানেরও প্রায় ৪ বছর পূর্বে অনলাইনে পোস্ট বা আপলোড করা হয়েছে।
পাশাপাশি, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও ঐ ব্যক্তি বা ঐ ভিডিও এর সাথে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, নীলফামারী সদর উপজেলার শিবির নেতার স্বাধীনতা উদযাপনের ভিডিও মর্মে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Waqas Sonu – YouTube Video
- Rumor Scanner’s own analysis