সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পিলারে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে লেখা একটি রাজনৈতিক চিকার ছবি প্রচার করা হয়েছে যেখানে লেখা রয়েছে, “কাঁঠাল পাতা ছাগলের লাদী, জামাতি মানেই মিথ্যাবাদী।”

উক্ত ছবি সংযুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত ছবি সংযুক্ত করে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উল্লেখ্য যে, উক্ত ছবিটি ২০২৩ সালেও ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছিল৷ সেসময় উক্ত ছবি সংযুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে প্রচারিত চিকার ছবিটি আসল নয় বরং, ভিন্ন একটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত চিকার ছবিটি কবে কার বা কোথাকার এসব আনুষঙ্গিক বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে স্টক ফটোগ্রাফি কোম্পানি অ্যালামি’র ওয়েবসাইটে “Pillars of Moghbazar-Mouchak Flyover are covered with advertising posters of various products. Dhaka, Bangladesh” শীর্ষক শিরোনামে সংযুক্ত একটি ছবি পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির তুলনা করলে রাজনৈতিক চিকা ব্যতীত ছবিটিতে প্রদর্শিত গাড়ি, রিকশা, যানবাহনের অবস্থান, মানুষের অবস্থানসহ পারিপার্শ্বিক সবকিছুর হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। কিন্তু, জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে প্রচারিত রাজনৈতিক চিকার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বরং, চিকার স্থানের কিছুটা উপরে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলনের একটি পোস্টার দেখা যায়।

উক্ত ছবিটি ২০১৬ সালের ১৫ মে’তে তোলা হয়েছে বলে অ্যালামিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, বিডিস্টকফটো নামের উক্ত একই কন্ট্রিবিউটরের আপলোড করা একই স্থানের নানা কোণ থেকে ধারণকৃত আরো একাধিক ছবি পাওয়া যায়। তবে সেগুলোতেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত চিকা দেখতে পাওয়া যায়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি মূলত ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উল্লিখিত উক্ত ছবিটি সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে চিকার নিচে মোজোর ‘MOJO CAR তুমি কার’ শীর্ষক একটি প্রোগ্রামের পোস্টার দেখা যায়। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে মোজো’র ফেসবুক পেজে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিলে “MOJO Car Tumi Kar….Program has started….lets see who will be the winner of MOJO Car….” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়৷ উক্ত পোস্টে প্রোগ্রামটি নিয়ে একটি পোস্টারের ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছিল যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটিতে প্রদর্শিত মোজো’র পোস্টারের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

মোজো’র উক্ত ফেসবুক পোস্টের মন্তব্য সেকশনে একজনের প্রশ্নের উত্তরে মোজো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে প্রোগ্রামটি সম্পর্কে বলা হয়, “মোজো ৫০০ মিলি, ১ লিটার, ২ লিটার বোতলের ক্যাপ এর নিচে পাবেন নিশ্চিত উপহার। ক্যাপ এ একটি কোড থাকবে। আপনার মোবাইল থেকে mojo<>code<>location লিখে পাঠিয়ে দিবেন 16242 নম্বরে। পেতে পারেন টি-শার্ট, ক্যাপ, মোবাইল, ফ্রিজ সহ একটি স্পোর্টসকার। অফারটি চলবে ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত।”
এছাড়াও, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কোমল পানীয় মোজো ব্রান্ডের ‘মোজো কার তুমি কার’ শীর্ষক শিরোনামের এই কনজ্যুমার প্রোগ্রামের বিষয়ে বাংলানিউজ২৪ নামক সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালে সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়৷ এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত পিলারের মূল ছবিটি ২০১৬ সালে ধারণ করা হয়েছে।
সুতরাং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একটি ছবি সম্পাদনা করে ছবির পিলারে “কাঁঠাল পাতা ছাগলের লাদী, জামাতি মানেই মিথ্যাবাদী।” শীর্ষক লেখা যুক্ত করা হয়েছে; যা সম্পাদিত।