গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে সিলেটের শাহপরান (রহ.) মাজারে ওরসের শেষরাতে গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও মাজারভক্তদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এরই প্রেক্ষিতে, উক্ত সংঘর্ষে মাজারের একজন ফকির মৃত্যুবরণ করেছেন দাবিতে হাসপাতালের বেডে রক্তাক্ত এক ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেটের শাহপরান (রহ.) এর মাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় আলোচিত ছবির ব্যক্তি মারা যাননি বরং আহত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে একদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। এছাড়া এই ঘটনায় এখন অবধি কোনো ব্যক্তি মারা যাননি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম আজকের পত্রিকার সিলেট ভিত্তিক সাংবাদিক ইয়াহ্ইয়া মারুফ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত পোস্টে প্রচারিত মৃত্যুর দাবিটি ভুয়া বলে দাবি করেন তিনি। তিনি তার পোস্টে মৃত্যুর দাবি করা ব্যক্তির চিকিৎসা পরবর্তী একটি ছবি ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাড়পত্র যুক্ত করেন। এছাড়াও, তার পোস্টের মন্তব্যের ঘরে মৃত দাবি করা ব্যক্তির আরো ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
এবিষয়ে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজকের পত্রিকা’র সাংবাদিক ইয়াহ্ইয়া মারুফ এর সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রচারিত মৃত্যুর দাবিটি ভুয়া এবং তিনি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানান। এছাড়াও, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তীর বরাতে ইয়াহ্ইয়া মারুফ জানান, উক্ত সংঘর্ষের পর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত হয়ে সাতজন ভর্তি হন এবং সকলকেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয় এবং তারা কোনো মৃত্যুর খবর পাননি।
এছাড়াও, একই বিষয়ে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে (১, ২) মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, সিলেটের শাহপরান (রহ.) মাজারে গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে মাজার ভক্ত ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষে একজন ফকির মারা গেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Yahya Maruf: Facebook Post
- Statement from Yahya Maruf
- Rumor Scanner’s own analysis