সম্প্রতি, “আ’লীগ-বিএনপি রক্তাক্ত নিহত ১৭!সরকার ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ!” শীর্ষক শিরোনামের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিগুলো সত্য নয় বরং চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্যগুলো প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে, আন্তর্জাতিক খবর নামক ফেসবুক পেজে গত ১১ জানুয়ারি রাত ৯ টা ৩১ মিনিটে উক্ত দাবিতে প্রচারিত প্রথম ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন।
৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৯ সেকেন্ড সময়ে সংবাদের শিরোনাম জানাতে “ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ধাওয়া পালটা ধাওয়া” শীর্ষক সংবাদ উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও, সংবাদ শিরোনাম উপস্থাপনকালে ভিডিওর ১৫ সেকেন্ড সময়ে বাবু গয়েশ্বরের মন্তব্য দাবিতে “ক্ষমতা ছেড়ে আওয়ামী লীগকে জনগনের কাছে ক্ষমতা চাইতে হবে” শীর্ষক শিরোনাম উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও ৩০ সেকেন্ড সময়ে “যুবলীগ ছাত্রলীগের হামলায় বিএনপির গণ অবস্থান পন্ড, আহত অর্ধশতাধিক” শীর্ষক শিরোনাম উপস্থাপন করা হয়। সর্বশেষ সংবাদ শিরোনামে “পেরুতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নিহত ১৭, কারফিউ জারি” শীর্ষক শিরোনাম উপস্থাপন করা হয়।
পরবর্তীতে পুরো ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওর ৩ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময়ে জানানো হয়, ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে উক্ত সংবাদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রক্তাক্ত হয়ে ১৭ জন নিহতের দাবির কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি।
এছাড়াও, ভিডিওর ৪ মিনিট ২০ সেকেন্ড সময়ে জানানো হয়, সিলেটে গণ অবস্থান কর্মসূচিতে বাবু গয়েশ্বর বলেন, ক্ষমতা ছেড়ে সরকারকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। উক্ত সংবাদের বিস্তারিত অংশে এই তথ্যের বাইরে সরকারের ক্ষমা চেয়ে পদত্যাদের দাবির কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি।
ভিডিওর ৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ড সময়ে পেরুতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর প্রচার করা হয়। তবে উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন ও থাম্বনেইলে দেয়া তথ্য অনুযায়ী আওয়ামী লীগ-বিএনপির রক্তাক্ত সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য প্রদান করা হলেও উক্ত তথ্যের কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় নি।
মূলত, ভিডিওটি কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদনের সমন্বয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিনের ভিডিও। উক্ত নিউজ বুলেটিনের বিভিন্ন প্রতিবেদনের খন্ডিত অংশ বা অসম্পূর্ণ তথ্য প্রদানের মাধ্যমে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে উক্ত ভিডিওটি প্রচারিত হচ্ছে।
সুতরাং, ভিডিওতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত এবং সরকারের পদত্যাগ শীর্ষক তথ্য না থাকলেও ক্যাপশন ও থাম্বনেইলে উক্ত উক্ত তথ্য প্রচারিত হচ্ছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- রিউমর স্ক্যানার টিমের নিজস্ব অনুসন্ধান