রাজশাহীর আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বিচারপতিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর 

সম্প্রতি, রাজশাহীর আদালত প্রাঙ্গণ থেকে একজন বিচারপতিকে সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে গিয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

এক্সে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বিচারপতিকে সন্ত্রাসীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তি কোনো বিচারপতি নন। তিনি একটি প্রতারণার মামলার আসামি। উক্ত ব্যক্তি আদালতে ওই মামলার হাজিরা দিতে গেলে তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। 

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধারে ‘বর্তমান রাজশাহীর খবর’ নামের একটি স্থানীয় গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে গত ২১ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিও পোস্টটির বিবরণীতে বলা হয়, ভিডিওতে যাকে তুলে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে তার নাম জিয়াউর রহমান। তিনি বিচারপতি নন বরং একটি মামলার আসামি। জিয়াউর রহমান চাকুরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয় এবং তাকে নিয়ে যাওয়া সেই যুবকেরা তার প্রতারণার শিকার।

পরবর্তীতে রাজশাহীর আইনজীবী Md Lutfar Rahman এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একইদিনে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, উক্ত ঘটনাটি গত ২০ ফেব্রুয়ারি বার ভবনের সামনে ঘটে। 

এছাড়াও ‘বরেন্দ্র টিভি’ নামের আরেকটি স্থানীয় গণামাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জিয়াউর রহমান প্রতারণা ও চেকের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আদালতে হাজিরা দিতে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনাটি বারের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এ সময় বারের সাধারণ সম্পাদক নিকটস্থ রাজপাড়া থানায় ফোন করেন। এর পরে সন্ত্রাসীরা তাকে ছেড়ে দেন।  

এ বিষয়ে আরো জানতে রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলমের যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, তুলে নিতে চাওয়ার ঘটনাটি সত্য তবে তিনি বিচারপতি নন। তার নাম জিয়াউর রহমান। তিনি একটি মামলার আসামি। উক্ত ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের দেওয়া তথ্য মতে মামলার বাদী পক্ষ তাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।

সুতরাং, মামলার আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তুলে নিওয়া যাওয়ার ভিডিওকে রাজশাহীর আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বিচারপতিকে সন্ত্রাসীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img