ইসরায়েলে ইরানের ড্রোন হামলার দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসের নিকটে ইসরায়েলের হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের একজন সিনিয়র কমান্ডার ও ছয় কর্মকর্তা নিহত হলে এই হামলার প্রতিবাদে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলে কয়েকশ ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালায় ইরান। এরই প্রেক্ষিতে ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে ড্রোন ও মিসাইল হামলার ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও দেখুন কালবেলা (ফেসবুক)।

ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও দেখুন কালবেলা

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে ড্রোন হামলার নয় বরং ভিডিওটি পুরোনো এবং ভিন্ন ঘটনার।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে world weapons নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি “Night volley of Russian MLRS “Grad”. Fire!!!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি বিস্তারিত বিবরণীতে দাবি করা হচ্ছে, এটি রাশিয়ার মিলিটারি বাহিনীর রাতে ফায়ারিং এর ভিডিও।

পরবর্তীতে coud.com ওয়েবসাইটে Slava Bodarev অ্যাকাউন্ট থেকে ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বরে রাশিয়ান ভাষায় প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) ফুটেজে আলোচিত দৃশ্যটি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ভিডিওটির দৃশ্যধারণের সঠিক স্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

Screenshot: coud.com

আরো অনুসন্ধানে ২০১৪ সালের নভেম্বরেও একই ভিডিও ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। দেখুন এখানে। 

অর্থাৎ, ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা ও স্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা না গেলেও এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি সম্প্রতি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে ড্রোন হামলার নয়।

মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল ইরান নিজেদের ভূখন্ড থেকে সরাসরি ইসরায়েলে ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে হামলা চালায়। সম্প্রতি, এই হামলার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি উক্ত ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি অন্তত ২০১৪ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান।

সুতরাং, ইন্টারনেটে বিদ্যমান পুরোনো ভিডিওকে গত ১৩ এপ্রিল ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে ড্রোন হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img