সম্প্রতি, চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দাবিতে কথিত বিজ্ঞপ্তিটির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। গত ১৯ মে এর তারিখে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তিতে চারটি পদে আবেদন করতে আহ্বান জানিয়ে [email protected] এই ইমেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, আবেদনের সময়সীমা ২৬ মে দুপুর ১২ টা।
উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতাল দেয়নি বরং হাসপাতালটির ২০২২ সালের পুরোনো একটি বিজ্ঞপ্তি সম্পাদনা করে ভুয়া এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে স্টাডি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক সাইটে (১, ২) ২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির খোঁজ মেলে। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র নং ছিল ০৩.০৬.১৫৩৫.৩৩৫.১১.০২৯.১০-৪৬৪৬। একই সূত্র নং দেখা যায় সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত কথিত বিজ্ঞপ্তিতেও। দুইটি বিজ্ঞপ্তির ছবির ডিজাইন, কালার গ্রেডিং এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তির ছবিটি ২০২২ সালের বিজ্ঞপ্তির ছবি থেকে সম্পাদনা করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পুরোনো বিজ্ঞপ্তিটির ছবিতে তারিখ, ঠিকানা, পদের বিষয়, আবেদনের মাধ্যম ও সময়সীমা সংক্রান্ত নির্দেশনা বদলে দিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালটি ‘বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)’র অধীনে পরিচালিত হয়ে থাকে। তাই এই হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো সাধারণত বেপজার ওয়েবসাইট এবং পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ২০২২ সালের বিজ্ঞপ্তিটিও জাতীয় একটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করতে বেপজার ওয়েবসাইটেই ফরম ডাউনলোড করে তা পূরণের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়ে থাকে। তবে কথিত এই বিজ্ঞপ্তিতে জিমেইল পরিষেবার একটি ইমেইল ঠিকানায় আবেদন করতে বলা হয়েছে।
অনুসন্ধানে বেপজার ওয়েবসাইট এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিভিন্ন কিওয়ার্ড সার্চ করে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কোনো অস্তিত্ব মেলেনি।
এ সংক্রান্ত তথ্য খুঁজতে গিয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট পাওয়া যায়, যেখানে এ বিষয়ে সত্যতা জানতে চেয়েছেন অনেকেই। ইমেইলে আবেদন করার পর আবেদনকারীর ফোনে +8809638967381 এই নাম্বার থেকে মেসেজ দিয়ে +8801317272527 এই নম্বরে নগদের মাধ্যমে ৩০৫ টাকা পাঠাতে বলা হচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম ইপিজেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।
ভুয়া নিয়োগের এই ধরনটি খুব সাধারণ। গেল কয়েক বছর ধরেই এই ধরনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা করে আসছেন প্রতারকরা। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট গত বছর এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরে। দেখুন এখানে।
সুতরাং, চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালে নিয়োগের ভুয়া বিজ্ঞপ্তিটি বানোয়াট ও প্রতারণামূলক।
তথ্যসূত্র
- Bepza Website: Link
- Rumor Scanner’s own analysis
