বিএনপির সমাবেশের ফলে রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্সে আটকে থাকা প্রসূতির মৃত্যুর তথ্যটি গুজব

সম্প্রতি “নয়াপল্টনে বিএনপি রাস্তা আটকে সমাবেশ করার কারণে এ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়ে হাসপাতাল যাওয়ার পথে একজন প্রসূতি (মা) মারা গেছে” শীর্ষক একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানেএখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নয়াপল্টনে বিএনপি রাস্তা আটকে সমাবেশ করার কারণে এ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়ে হাসপাতাল যাওয়ার পথে একজন প্রসূতি (মা) মারা যাওয়ারদাবিটি সত্য নয় বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই এই  দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েপড়েছে।    

গত ১১ আগস্ট নয়াপল্টনে বিএনপি রাস্তা আটকে সমাবেশ করার কারণে অ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়ে হাসপাতাল যাওয়ার পথে একজন প্রসূতি (মা) মারা যাওয়া সংক্রান্ত সংবাদ বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দিন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে। তিনি জানান, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে পল্টনে সমাবেশস্থল ও আশেপাশের এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সমাবেশস্থলের আশেপাশে অ্যাম্বুলেন্স আটকে কোনো প্রসূতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ তারা পাননি বলে জানান পল্টন থানার ওসি। 

পরবর্তীতে, রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশের মূল ধারার গণমাধ্যম মানবজমিনের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্লিজ, এম্বুলেন্সকে যেতে দিন শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে ব্যবহৃত ছবির সাথে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির মিল পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, ঢাকায় যানযটের কারণে সময় মত হাসপাতালে পৌছাতে না পারার কারণে পথিমধ্যেই এম্বুলেন্সের মধ্যে অনেক রোগীর মৃত্যু হয়। 

মূলত, কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই “নয়াপল্টনে রাস্তা আটকে বিএমপির সমাবেশ করার জন্য একজন প্রসুতি মা মারা গেছেন” শীর্ষক একটি ভিত্তিহীন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১১ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিএনপি এক সমাবেশের আয়োজন করে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং ও দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশ করা হয়।

সুতরাং, নয়াপল্টনে বিএনপি রাস্তা আটকে সমাবেশ করার কারণে এ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়ে হাসপাতাল যাওয়ার পথে একজন প্রসূতি (মা) মারা গেছে” শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দিন মিয়ার সাথে কথপোকথন 

মানবজমিন: প্লিজ, এম্বুলেন্সকে যেতে দিন 

জনকন্ঠ: বিএনপির সমাবেশে একাধিক ড্রোন 

আরও পড়ুন

spot_img