ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ কর্মীদের অস্ত্র হাতের ছবিকে শিবির-সমন্বয়কদের ছবি দাবিতে প্রচার

গত জুলাই মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন শুরুর দিকে অহিংস হলেও সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনে বাঁধা দেওয়ায় ধীরে ধীরে তা সহিংসতায় রূপ নেয় এবং এক পর্যায়ে গত ০৫ আগস্ট তারিখে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের মাধ্যমে আন্দোলনটির সমাপ্তি ঘটে। উক্ত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা হামলার ঘটনাও ঘটেছিল।

সম্প্রতি, “ছাত্র জনতার আন্দোলনে গুলি ১২৬ অস্ত্রধারী শনাক্ত, গ্রেপ্তার ১৯” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে প্রথম আলোর একটি ফটোকার্ড প্রচার করে ফটোকার্ডটিতে থাকা অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের জামায়াত-শিবির এবং সমন্বয়ক বলে দাবি করা হচ্ছে।

ছাত্র আন্দোলনে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “ছাত্র জনতার আন্দোলনে গুলি ১২৬ অস্ত্রধারী শনাক্ত, গ্রেপ্তার ১৯” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে প্রথম আলো কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডে থাকা ব্যক্তিরা জামায়াত-শিবির কিংবা সমন্বয়ক নয় বরং, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে থাকা অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে প্রথম আলোর লোগো দেখা যায়। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির হুবহু মিল রয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner

উক্ত পোস্টের কমেন্টে একটি প্রতিবেদন লিংক পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি পড়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় প্রচারিত ছবির অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের মধ্যে ফটোকার্ডের ডানপাশের ব্যক্তিটি ঢাকার মোহাম্মদপুর ৩৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আসিফ, মাঝের ব্যক্তিটি চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের কর্মী মো. তৌহিদ এবং বাম পাশের ব্যক্তিটি রাজধানীর তুরাগ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুরতাফা বিন ওমর।

Image By Rumor Scanner

অর্থাৎ, অস্ত্রধারী তিনজনই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। 

সুতরাং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অস্ত্র হাতে ছবিকে জামায়াত-শিবির এবং সমন্বয়কদের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img