সম্প্রতি “এটা একটি মহান শব্দ, এটা কি সিংহ রাজার কন্ঠস্বর” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানেও এখানে।
যা দাবি করা হচ্ছে
ভিডিটির ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, “আলহামদুলিল্লাহ………আমেরিকার একটি পরিবার. বিশ্বকাপ খেলা দেখতে আসা কাতারে একটা শপিং মলে আসে শুনতেই পাই আযানের শব্দ,তখন এই ছোট মেয়েটি বার বার জিজ্ঞেস করতেছে বাবা মার কাছে ,এটা একটি মহান শব্দ , এটা কি সিংহ রাজার কন্ঠস্বর”
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি শিশুর শপিং মলে আযান শুনে প্রশ্ন করার ভিডিও কাতার বিশ্বকাপ চলাকালীন নয়, বরং এটি দুবাই শপিংমলে ধারণ করা ১০ বছর আগের একটি ভিডিও।
ভিডিওটির বিবরণীতে লেখা আছে, “ দুবাই শহরে ভ্রমণের কিছু ক্লিপ। প্রথমবারের মতো আযান শুনলাম। বেশ দারুণ। আপনাদের দোওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি মুসলিম না হতে পারি, তবু আমি আমেরিকায় আমার বন্ধু আর পরিবারের সবাইকে আমার মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণের কথা বলি। ইসলাম কতটা সুন্দর তা বলি যাতে ইসলামের প্রতি তাদের ভীতি কমে।”
এছাড়া, ভিডিওর বিবরণীতে স্পষ্ট করে উল্লেখ আছে এটি দুবাই শপিং মলে এক আমেরিকান পরিবারের ঘুরে বেড়ানোর সময় ধারণকৃত ভিডিও।
তাছাড়া, পুনরায় রিভার্স ইমেজ সার্চে ফরাসি অলংকার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘Van Cleef & Arpels‘-এর ফেসবুক পেজে “Van Cleef & Arpels © Photo By Photo Solutions The Poetry of Time exhibition by Van Cleef & Arpels at the Grand Atrium in The Dubai Mall until October 20th, 2012.”” শীর্ষক শিরনামে ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবরে করা একটি ফেসবুক পোস্টের ছবির স্টলের সাথে আলোচ্য ভিডিওটির স্থানের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
পোস্টটির ক্যাপশনেও দুবাই মলের কথা উল্লেখ রয়েছে।
মূলত, ২০১২ সালে এক আমেরিকান পরিবার আরব আমিরাতে বেড়াতে গিয়ে দুবাই শপিংমলে প্রথমবারের মতো আযান শোনেন। তাদের সাথে থাকা শিশুটি প্রথমবার আযান শুনে অবাক হয়ে যায় এবং আযানের শব্দটি কোথা থেকে আসছে তা খুঁজতে থাকে। তখন শিশুটির বাবা শিশুটিকে বুঝিয়ে বলে এটি প্রার্থনার জন্য ডাক। উত্তরে শিশুটি জানায় শব্দটি তার কাছে সিংহরাজের মতো লাগছে। ভিডিওটি ঐ পরিবারই প্রথম ইউটিউবে আপলোড করে। ঐ ভিডিওটিই সম্প্রতি কাতার বিশ্বকাপ দেখতে আসা শিশুর আযান শুনে অবাক হবার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ কে কেন্দ্র করে ছড়ানো একাধিক গুজবকে শনাক্ত করে প্রতিনিয়ত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে এসে আযান শুনে আমেরিকান শিশুর বিমোহিত হয়ে যাওয়ার দাবিতে যে তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- ইউটিউব চ্যানেল: f0t0b0y
- ফেসবুক অ্যাকাউন্ট: Van Cleef & Arpels