সম্প্রতি পাকিস্তানের হামলায় ভারতীয় সৈন্যদের মরদেহের দৃশ্য দাবিতে ২০১১ সালের দৃশ্য প্রচার

গত ৬ মে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে একাধিক বিস্ফোরণের খবর মেলে। ভারত দাবি করে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক অভিযানে তারা জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তইয়েবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অন্তত গত ৭ মে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে পাকিস্তানের হামলায় ভারতীয় সৈন্যদের মরদেহের দৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের পাক-ভারত সংঘাতে পাকিস্তানের হামলায় ভারতীয় সৈন্যদের মরদেহের দৃশ্যের নয় বরং, ২০১১ সালের আগস্টে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হওয়া সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘Radio France Internationale’ এর ওয়েবসাইটে ২০১১ সালের ২৩ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। দৃশ্যটি কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্দেহভাজনদের মৃতদেহের বলে উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও স্টক ইমেজ, ভিডিও ইত্যাদি সম্পর্কিত ভিজ্যুয়াল মিডিয়া কোম্পানি ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটেও উপরোল্লিখিত ছবিটি পাওয়া যায়৷ ছবিটির বর্ণনায় এটি ২০১১ সালের ২০ আগস্টে আপলোড হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়৷ এবং ছবিটি সম্পর্কে বলা হয়, “নিহত সন্দেহভাজন জঙ্গিদের দেহ ও জব্দকৃত গোলাবারুদের সামনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পাহারা দিচ্ছেন, ২০ আগস্ট ২০১১ সালে, গুরেজ, কাশ্মীর, ভারতে। ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে তারা আজ উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার (LoC) কাছে অন্তর্ঘাতের একটি প্রচেষ্টা প্রতিহত করেছে এবং অন্তত ১২ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন এবং আরও দুই সেনা আহত হয়েছেন। ভারতীয় সামরিক মুখপাত্রের মতে, জঙ্গিরা একটি ডিঙি নৌকার সাহায্যে জলপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল।” (অনূদিত)

এছাড়াও, আরো একাধিক ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি ২০১১ সালের জানিয়ে প্রচার হতে দেখা যায়।

সুতরাং, ২০১১ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হওয়া সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দৃশ্য সম্প্রতি পাক-ভারত সংঘাতে পাকিস্তানের হামলায় ভারতীয় সৈন্যদের মরদেহের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img