Home Blog Page 118

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুর ছবি দাবিতে বাঁশখালীর ভিন্ন মেয়ের ছবি প্রচার

0

গত ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আট বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে শিশুদের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) লাইফ সাপোর্ট রাখা হয়েছে। সম্প্রতি, হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা এক মেয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এই মেয়েটিই মাগুরার ধর্ষণের শিকার হয়েছে। 

মাগুরায় ধর্ষণের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ছবি দেখুন আর্কাইভ (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিটি সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হওয়া মাগুরার ৮ বছরের শিশু নয় বরং, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ভিন্ন এক মেয়ের ছবি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে HM Elias Hasan Hossain নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ০৭ মার্চ বিকেলে প্রচারিত একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই পোস্ট থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মনছুরিয়া বাজারের পশ্চিমপাশে নাপেড়া বাজারে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় মেয়েটি। তার নাম ফাহিমা আক্তার। মেয়েটির বাবার নাম ছগির। মেয়েটি সে সময় বাঁশখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানানো হয় পোস্টে। যদি কোনো পরিচিত কেউ চিনে থাকেন তার পরিবারের কাছে সন্ধান পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে পোস্টে একটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়।  

Screenshot: Facebook 

রিউমর স্ক্যানার উক্ত নাম্বারটি যাচাই করে জানতে পারে, এটি বাঁশখালীর মোঃ মুশফিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তির নাম্বার। তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, মেয়েটিকে ইতোমধ্যেই তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।  

জনাব মুশফিকুরের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে গত ০৭ মার্চ একই পোস্ট পাওয়া যায়। ০৭ মার্চ দুপুরে মেয়েটির পরিবারের সন্ধান চেয়ে তিনিই প্রথম এই পোস্ট করেন। পরবর্তীতে আজ (১১ মার্চ) পোস্টটি এডিট করে তিনি জানিয়েছেন, মেয়েটি এখন পরিবারের হেফাজতে আছে।

Collage: Rumor Scanner 

সুতরাং, চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার এক মেয়ের ছবিকে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হওয়ার ৮ বছরের শিশুর ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • HM Elias Hasan Hossain: Facebook Post
  • Statement from Md Mushfiqur Rahman

শেখ হাসিনা মহানবীর রওজা মোবারক জিয়ারত করছেন দাবিতে ২০২৩ সালের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সৌদি আরবের মদিনায় মহানবীর রওজা শারিফ জিয়রতের পর মোনাজাতে অংশ নেন, এ সময় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। #আলহামদুলিল্লাহ #আমার_নেত্রী_শেখ_হাসিনা #আমার_নেত্রী_আমার_অহংকার #আমার_নেত্রী_আবার_ফিরবে_ইনশাআল্লাহ #জয়_বাংলা_জয়_বঙ্গবন্ধু #বাংলাদেশ_আওয়ামী-লীগ #বাংলাদেশ_ছাত্রলীগ #bdtiktokofficial #unfrezzmyaccount #viralvideo #foryoupage” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানবীর রওজা জিয়ারতের কোনো ঘটনার নয়, বরং ২০২৩ সালের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইলেকট্রিক গণমাধ্যম ‘Rtv News’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৫ নভেম্বর ‘মদিনায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা মোবারক জিয়ারত করলেন প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে একই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত ‘একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumour Scanner 

পরবর্তীতে, উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম কালবেলার ২০২৩ সালের ০৬ নভেম্বর “মহানবী (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করলেন প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মদিনায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ নভেম্বর (রোববার) স্থানীয় সময় দুপুরে তিনি মদিনায় পৌঁছান। এর পরই প্রধানমন্ত্রী পবিত্র মসজিদে নববীতে যান। সেখানে তিনি মহানবী (সা.)-এর রওজা জিয়ারত ও দোয়া করেন। মসজিদে নববীতে তিনি আসরের নামাজ আদায় করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।

একই বিষয়ে সেসময় দেশের মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে (, ,) প্রকাশিত হয়।

সুতরাং, ২০২৩ সালের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনা মহানবীর রওজা মোবারক জিয়ারতের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর ।

তথ্যসূত্র 

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটি মারা যায়নি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

0

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত ০৬ মার্চ দুপুরে আট বছরের একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয় বলে সম্প্রতি অভিযোগ করে শিশুটির পরিবার। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হচ্ছে যে, শিশুটি মারা গেছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুটি মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং শিশুটি বর্তমানে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক সমকাল পত্রিকার ওয়েবসাইটে আজ (১০ মার্চ) দুপুরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আজ জানিয়েছেন, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে। তার অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে।  

আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ শিশুটির বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আজও তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে। তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিকে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দুই এক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে। 

এদিকে আজ রাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী শিশুটির প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং তদানুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে শিশুটি লাইফ সাপোর্টে আছে।

এর আগে আজ সকালে জানা গিয়েছিল, শিশুটির জ্ঞান চার দিনেও ফেরেনি। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) কর্তৃপক্ষ। সিএমএইচের চিকিৎসকরা তখন জানিয়েছিলেন, বুকে প্রচণ্ড চাপ দেওয়ায় শিশুটির ফুসফুসের বিভিন্ন জায়গায় বাতাস জমে গেছে। রোববার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অতিরিক্ত বাতাস বের করে বুকে টিউব বসানো হয়েছে। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে তার মস্তিষ্কেও ক্ষতি হয়েছে।

সুতরাং, মাগুরায় সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটি মারা গেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রীর মুখে ব্লেড দিয়ে জখম করার পুরোনো ঘটনা সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “বাংলাদেশ | রোহান নামে এক জিহাদবাদী তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর, একটি নাবালিকা হিন্দু মেয়েকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে। পরে, মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ধরনের অপরাধ ঘনঘন ঘটে, কিন্তু এদের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার হয় না।” (অনূদিত)

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে যে ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে। উল্লেখ্য যে, সংযুক্ত ভিডিওটিতে উক্ত মেয়েকে অভিযুক্তের নামসহ ঘটনা বর্ণনা করতে শোনা যায়।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটির ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং প্রায় ২ বছর পূর্বের উক্ত ঘটনাটিকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘সিআইএনটিভি২৪-নিউজ-পোর্টাল’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১ মার্চে একটি ভিডিওটি প্রচার হতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, “#এইমাত্র পাওয়া : অভয়নগরে বখাটেদের ছু‌রিকাঘা‌তে স্কুল ছাত্রী আহত। বিস্তা‌রিত আস‌ছে। #নওয়াপাড়া #অভয়নগর”

Comparison : Rumor Scanner

পরবর্তীতে এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২ মার্চে “প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ছাত্রীর মুখে ব্লেড দিয়ে জখম” শীর্ষক শিরোনামে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় যশোরের অভয়নগরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর মুখে ব্লেড দিয়ে জখম করেছে এক যুবক। বুধবার (২০২৩ সালের ১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার গরু হাটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রোহান ইসলাম (২১) একই উপজেলার বুইকরা গ্রামের ড্রাইভার পাড়ার হায়দার আলীর ছেলে।

আহত ওই স্কুলছাত্রী বলেন, বখাটে রোহান দীর্ঘদিন ধরে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বুধবার (২০২৩ সালের ১ মার্চ) বিকেলে প্রতিদিনের মতো আমি স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। এসময় পথে গরু হাটের সামনে রোহান আমার গতিরোধ করে আবারও প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় রোহান ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মুখে ব্লেড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় আমার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসে এবং আমাকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।” উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে আহত উক্ত স্কুলছাত্রীর একটি অস্পষ্ট ছবিও সংযুক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাক এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২ মার্চে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একইরকম তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি বা ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং প্রায় ২ বছর পূর্বের।

সুতরাং, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রীর মুখে ব্লেড দিয়ে জখম করার প্রায় ২ বছর পুরোনো ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে মৃত লাশ ধর্ষণের সংবাদটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২০ সালের

0

সম্প্রতি, ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত লাশ ধর্ষণ দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

পোস্টগুলোতে বলা হয়, ‘সোনার বাংলাদেশে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মৃত্যু লাশ ধর্ষণ হয়’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত লাশ ধর্ষণের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, হাসপাতালটির মর্গে নারী মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করার সত্যতা পাওয়ায় ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হয় মুন্না নামে এক ডোম সহকারী। উক্ত ঘটনাকেই সাম্প্রাতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। পর্যবেক্ষণে ‘Nusrat Jahan Shemu’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচিত দাবিতে করা পোস্টটির মন্তব্যের ঘরে তথ্যসূত্র হিসেবে যমুনা টিভির ইউটিউবে প্রচারিত সংবাদের থাম্বনেইলসহ ডার্ক মোডে নেওয়া একটি স্ক্রিনশট দেখতে পাওয়া যায়।

সংবাদটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ‘লাশ পাহারার দায়িত্ব নিয়ে মৃত নারীদের সঙ্গে যৌনাচার করতো মুন্না | Rapist Dom’। ক্যাপশনের নিচের অংশে ভিডিওটি ৪ বছর আগের বলে উল্লেখ করা হয়।

Screenshot: Nusrat Jahan Shemu (Facebook)

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ইউটিউবে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ‘লাশ পাহারার দায়িত্ব নিয়ে মৃত নারীদের সঙ্গে যৌনাচার করতো মুন্না | Rapist Dom’ শীর্ষক ক্যাপশনে একই থাম্বনেইলের সংবাদটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jamuna TV (YouTube)

সংবাদটি থেকে জানা যায়, রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আত্মহত্যা করা কম বয়সী নারীদের সাথে বিকৃত যৌনাচার করে আসছিলো মুন্না নামে এক ডোম সহকারী। সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে, অন্তত ৫ জন নারীর ওপর এমন বিকৃত যৌনাচারের কথা স্বীকার করেছে সে। 

সে সময় এ বিষয় নিয়ে  প্রথম আলোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে মৃত লাশ ধর্ষণের সংবাদটি

এটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২০ সালের সংবাদ।

তাছাড়া, সম্প্রতি ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ২০২০ সালে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নারী মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের ঘটনাকে সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

হাসনাত আবদুল্লাহ গ্রেফতারের ভুয়া দাবি প্রচার

0

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ গ্রেফতার হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি অন্তত গত ০৫ মার্চ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসনাত আবদুল্লাহ গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইট ব্যবহার করে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদ সত্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফেসবুক পোস্টগুলোর কমেন্টে সূত্র হিসেবে একটি সংবাদের লিংক দেওয়া হয়েছে।  

উক্ত লিংকে প্রবেশ করে দেখা যায়, এটি ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ‘স্বাধীন নিউজ’ নামের এই ডোমেইন সাইটে ব্রেকিং নিউজ: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ গ্রেফতার শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি গত ০৫ মার্চ প্রকাশিত হতে দেখা যায় এবং এটিই আলোচিত দাবিটির সম্ভাব্য উৎস বলে প্রতীয়মান হয়। 

কথিত সংবাদটি পড়ে দেখা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

হাসনাতের গ্রেফতারের দাবিটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূল ধারার গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোয়ও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে তা মূলধারা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার কথা।

তাছাড়া, হাসনাতকে বর্তমানে নিয়মিত রাজনৈতিক কার্যক্রমে দেখা যাচ্ছে। গত ০৮ মার্চ সন্ধ্যায় নিজ উপজেলা কুমিল্লার দেবীদ্বারে দোয়া ও ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। 

সুতরাং, হাসনাত আবদুল্লাহ গ্রেফতার হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis

থালাপতি বিজয়ের ইসলাম গ্রহণের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, দক্ষিণ ভারতের তামিল সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ থালাপতি বিজয়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের করতেছেন দাবিতে তার সাদা পোশাক ও টুপি পরিহিত কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, থালাপতি বিজয়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দাবিটি সত্য নয়। বরং, সম্প্রতি রমজান উপলক্ষ্যে তার ইফতার অনুষ্ঠানের কিছু ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে এই দাবি প্রচার করা হলেও বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে বিজয়ের ধর্ম পরিবর্তনের তথ্য নিশ্চিত করেনি। এছাড়া, তার আগের বক্তব্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে তিনি নিজেকে নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের অনুসারী হিসেবে ঘোষণা করেননি, তবে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম ফ্রি প্রেস জার্নালে ৭ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৭ মার্চ, শুক্রবার, রমজান উপলক্ষ্যে চেন্নাইয়ে এক বিশেষ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন বিজয়। সে সময় তাকে সাদা পোশাক ও টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তিনি মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে সন্ধ্যার নামাজ আদায় করেন এবং ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন।তবে এই প্রতিবেদনে তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগাম (টিভিকে) দলের প্রধান বিজয় ২০২৬ সালের তামিলনাডু বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট না বেঁধে এককভাবে নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছেন।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই)-এর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে গত ৭ মার্চ প্রকাশিত একটি পোস্টে এই ঘটনার একটি ভিডিও পাওয়া যায়। পোস্টের ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয় যে, এটি তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান বিজয়ের রমজান মাসে চেন্নাইয়ে আয়োজিত ইফতার মাহফিলের ভিডিও।

একই ঘটনা ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ হিসেবে প্রকাশিত হলেও তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে কোনো প্রতিবেদনে উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তবে, তার এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচনা করেছেন অনেকেই।

বিজয়ের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে অনুসন্ধানে, ২০২২ সালে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন, “আমি একজন দৃঢ় বিশ্বাসী। আমি চার্চে যাই, এবং ‘থুপাক্কি’ ছবির শুটিংয়ের সময় মন্দির ও আমিন পীর দরগায়ও গিয়েছি। আমি সব জায়গাতেই এক ধরনের ঐশ্বরিক অনুভূতি পেয়েছি। আমার মা একজন হিন্দু এবং বাবা একজন খ্রিস্টান। তারা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। আমি এমন একটি পরিবারে বড় হয়েছি, যেখানে আমাকে কখনো কোথায় যাওয়া উচিত বা উচিত নয়—সেই বিষয়ে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। আমি আমার সন্তানদেরও একই শিক্ষা দিচ্ছি।”

সুতরাং, তামিল সিনেমার অভিনেতা থালাপতি বিজয়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ঈদ উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা বিকাশে ৮০০০ টাকা সালামি দিচ্ছেন শীর্ষক দাবিটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে মোবাইল ফোনভিত্তিক অর্থ স্থানান্তর (এমএফএস) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশে ৮০০০ টাকা সালামি দিচ্ছেন দাবিতে একটি লিঙ্ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে ডঃ ইউনূসের পক্ষ থেকে সবাইকে ৮০০০ টাকা করে সালামি দেওয়ার কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি বরং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে সালামি প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত লিঙ্কটি পর্যবেক্ষণ করলে, উক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশের শুরুতে পেজের ভেতরে “ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে দেশের সকল নাগরিকদের জন্য ৮০০০ টাকা ঈদ সালামী দিচ্ছেন ড. ইউনুস” শীর্ষক ঘোষণাটি লক্ষ্য করে রিউমর স্ক্যানার। 

পরবর্তীতে একটু নিচে স্ক্রল করলেই ভাতা আবেদনের নিয়মাবলি ও টাকা পাওয়ার জন্য একটি ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে বলা হয়। ফর্মটিতে নাম ও জেলা তথ্য আবেদনকারীর কাছে জানতে চাওয়া হয়।

Screenshot : Scamming website

রিউমর স্ক্যানার টিমের একজন অনুসন্ধানকারী নিরাপত্তাজনিত কারণে ভুল তথ্য দিয়ে উক্ত ফর্ম পূরণ করে জমা দিলে এটি আরেকটি নতুন পেজে নিয়ে যায়।

Screenshot : Scamming website

নতুন পেজের শুরুতেই লেখা থাকে “অভিনন্দন, প্রিয় গ্রাহক! আপনি টাকা বোনাস পেয়েছেন। আপনি যে বিকাশে বোনাসের টাকা নিতে চান, নিচে সেই বিকাশ নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য দিন।’’

তদন্তের অংশ হিসেবে একটি ভুয়া নম্বর ও পিন ব্যবহার করে পরবর্তী ধাপে গেলে, এটি ‘JOHARA BEGUM’ নামে একটি বিকাশ মার্চেন্ট পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে যায়।

অর্থাৎ, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত পিন নম্বর সংগ্রহ করা এবং বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে ৮০০০ টাকা সালামি দেওয়ার কোনো ঘোষনা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড সার্চ করলে Chief Adviser GOB ফেসবুক পেজ, গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে ৮০০০ টাকা সালামি দিচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ভারতীয় মৃত শিশু মারিয়ামকে বাংলাদেশি দাবি করে আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রতারণা

0

সম্প্রতি, আমি মোছা:বেদেনা বেগম,আমি পেশায় একজন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকা।আমার স্বামী মো:কামাল হোসেন গ্রামের ছোট মুদি দোকানি।আমার মেয়ে মোছা : জান্নাতুন সাফরা,৮ম শ্রেণীর ছাত্রী।চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।আজ দুই মাস যাবত আমার মেয়ে ব্লাড ক্যান্সার এর সাথে লড়াই করছে,বর্তমানে রংপুর মেডিকেল এ ক্যান্সার বিভাগে ভর্তি আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়ার চেন্নাইয়ে নিতে ডাক্তারগন পরামর্শ দিয়েছেন।অনেক টাকা প্রয়োজন(১০/১১)লক্ষ টাকা দরকার। সাহায্য করতে আমার নাম্বারে যোগাযোগ করুন।(বিকাশ + নগদ)একাউন্ট আমার নামে করা আছে।(মোছা বেদেনা বেগম)
বিকাশ:01796838054(পারসোনাল) 
নগদ:01796838054(পারসোনাল)” শীর্ষক ক্যাপশনে (সংক্ষেপিত) একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিশু সাফরা নামে প্রচারিত ছবিটি কোনো বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং ভারতের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিশু মারিয়ামের ছবি ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া পোস্টের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম Ketto এর ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর “I watch my daughter suffer from cancer & I beg Allah for her life. Please help: bit.ly/SaveMariam” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এই ছবিটির সাথে আলোচিত পোস্টের শিশুর ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।  

Comparison: Rumor Scanner

প্লাটফর্মটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ছবিটি ভারতের ১২ বছর বয়সী শিশু মারিয়াম শাকিল আহমেদ। তার পিতা পেশায় অটো চালক। সে সময় কিটোর মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য চেয়ে ফান্ডরেইজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিটোর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত পরবর্তী আপডেট থেকে জানা যায়, মারিয়াম মারা গেছেন।

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি ভারতীয় মৃত এক শিশুর।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে সাফরা নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ফেসবুক পোস্টে উল্লিখিত ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বার 01796838054 এ যোগাযোগ করা হলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বাংলাদেশের কথিত রোগাক্রান্ত শিশু সাফরা চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক এবং মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে দেওয়া আছিয়া স্লোগানকে হাসিনা স্লোগান দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, “আমার ভাইয়ের কান্না – আর না, – আমার বোনের কান্না- আর না, আর না, তুমি কে আমি কে – হাসিনা, হাসিনা। মুজিব সৈনিকরা জেগে উঠেছে। দেশ বিরোধীদের স্থান বাংলায় আর হবে না।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।  

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত বিক্ষোভের ভিডিওতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে কোনো স্লোগান দেওয়া হয়নি বরং, মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের স্লোগানকে আলোচিত ভুল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত  ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ‘তুমি কে আমি কে আছিয়া আছিয়া আমার মায়ের কান্না – আর না, – আমার বোনের কান্না- আর না, আর না’ স্লোগানসহ নানা স্লোগান শুনতে পাওয়া গেলেও দাবিকৃত ‘তুমি কে আমি কে – হাসিনা, হাসিনা। মুজিব সৈনিকরা জেগে উঠেছে। দেশ বিরোধীদের স্থান বাংলায় আর হবে না।’ শীর্ষক স্লোগানটি শোনা যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে জাতীয় গণমাধ্যম চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুক পেজে উক্ত ঘটনার একটি ভিডিওসহ ০৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওটির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “ধ’র্ষ’ণে’র বিরুদ্ধে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়” সাথে  #Achiya #RUProtest #Channel24 হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যম জনকন্ঠের ওয়েবসাইটে ০৯ মার্চ  ‘’তুমি কে, আমি কে, আছিয়া আছিয়া’- স্লোগানে উত্তাল রাবি’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি  সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “দেশে চলমান ধর্ষণ প্রতিরোধ, ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত ও সার্বিক নিরাপত্তার দাবিতে ৮ মার্চ বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় মিছিল শুরু হয়ে ছাত্রী হলগুলোর সামনে দিয়ে অতিক্রম করে। দলে দলে সেখানে ছাত্রীরা যুক্ত হয়। ৮ টার দিকে মিছিলটি জোহা চত্বরে সমবেত হয়।

এসময় শিক্ষার্থীদের স্লোগান ছিল – ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’ , ধর্ষিতার কান্না, আর না আর না’, ‘ধর্ষকের শাস্তি, মৃত্যু মৃত্যু’, ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে জবাই কর’, ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’।” 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকেও এটি নিশ্চিত যে, আলোচিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে “তুমি কে? আমি কে? হাসিনা, হাসিনা” শীর্ষক স্লোগান দেওয়া হয়নি।

সুতরাং, ধর্ষণ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিন্ন স্লোগানকে শেখ হাসিনার পক্ষের স্লোগান দাবিতে  প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র