Home Blog Page 115

ট্রলার ডুবির পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে ট্রলার ডুবির মর্মান্তিক দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে ট্রলার ডুবির মর্মান্তিক দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয় বরং, ভিডিওটি অন্তত ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Fish Market in Kuakata’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট প্রকাশিত ‘বঙ্গোপসাগরে হারিয়ে গেলো কোটি টাকার সম্পদ|| ডুবে গেলো জয়দেব বাবুর ট্রলার|| ‪@fishmarketinkuakata4172‬’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ৭ মিনিট ১৩ সেকেন্ড অংশের ফ্রেমের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একটি ফ্রেমের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

এছাড়াও, ‘mahathe hasan’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আপলোডকৃত ‘জয়দেব বাবুর ট্রলার যে ভাবে সাগরে ডুবে যায়।’ শীর্ষক ক্যাপশনে উক্ত ঘটনার আরও একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। তবে, এই ভিডিওটি পূর্বের ভিডিও অনুযায়ী রিভার্স।

ভিডিওর বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, দুর্ঘটনার কবলে পড়া ট্রলারের মালিক হাতিয়ার জাহাজমারা আমতলি গ্রামের বাসিন্ধা লুৎফুল্লাহিল মজিব নিশান জানান, মঙ্গলবার ভোরে ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পড়ে পটুয়াখালীর জেলার দক্ষিনে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায়। পরে পাশে থাকা একটি ট্রলার চার জেলেকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া জেলেরা মঙ্গলবার বিকেলে মোবাইলে এই সংবাদ জানান তাকে।

দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় ট্রলার ও নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে চেষ্টা করা যাচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, ট্রলারটি জাহাজমারা আমতলী ঘাট থেকে গত এক সপ্তাহ আগে ১৭ মাঝি মাল্লা নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যায়। ট্রলারে থাকা সকল মাঝি মাল্লার বাড়ি হাতিয়ার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে একজন মো. সোহেল (২২) উপজেলার জাহাজমারা আমতলী গ্রামের এনায়েত মাঝির ছেলে।

জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট প্রকাশিত ‘বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলার ডুবি, ১৩ জেলে নিখোঁজ’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেনেও বলা হয়, নোয়াখালী হাতিয়ায় বঙ্গোপসাগরে মাছধরার ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে চার জেলে জীবিত উদ্ধার হলেও নিখোঁজ রয়েছে ১৩ জন। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) ভোরে ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পড়ে পটুয়াখালী জেলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, হাতিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কাঞ্চন কান্তি দাস।

এছাড়া, আরেক গণমাধ্যম ঢাকা প্রকাশ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়, নোয়াখালী হাতিয়ার বঙ্গোপসাগরে মাছধরা ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে চার জেলে জীবিত উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ১১ জন। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দুপুরে জীবিত উদ্ধার হওয়া জেলেরা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

দুর্ঘটনার কবলে পড়া ট্রলারের মালিক হাতিয়ার জাহাজমারা আমতলি গ্রামের বাসিন্দা লুৎফুল্লাহিল মজিব নিশান জানান, মঙ্গলবার ভোরে ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পড়ে পটুয়াখালীর জেলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায়। পরে পাশে থাকা একটি ট্রলার চার জেলেকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে নিয়ে আসে।

তবে, ভিডিওটি প্রতিবেদনে উল্লিখিত ট্রলার ডুবে যাওয়ার ঘটনা কিনা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এটা নিশ্চিত যে এটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়।

সুতরাং, ট্রলার ডুবে যাওয়ার পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক লাকি আক্তারের মৃত্যুর গুজব 

0

সম্প্রতি, ‘ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামী কণ্ঠ লাকী আক্তার নিহত’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারী লাকি আক্তারের মৃত্যুর দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, আজ (১৩ মার্চ) স্বাধীন নিউজ নামক একটি ওয়েবসাইটে ‘ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামী কণ্ঠ লাকী আক্তার নিহত’- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্যতম সংগঠক ও অধিকারকর্মী লাকী আক্তার আজ রাত ১২টায় দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হয়েছেন। রাজধানীর শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের এক সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে একদল মুখোশধারী সন্ত্রাসী তাকে ছুরি ও লাঠিসোঁটা দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে, প্রতিবেদনটিতে ডাক্তার বা  পুলিশের কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। এমনকি কোন হাসপাতাল বা কোন স্থানে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে সেটিও উল্লেখ করা হয়নি। 

এছাড়া স্বাধীন নিউজ ওয়েবসাইটটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ওয়েবসাইটটি একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট। 

সুতরাং, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারী লাকি আক্তার মারা যাওয়ার দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বহুতল ভবন থেকে লাফ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

সম্প্রতি, ‘অনেক গুলো ভুয়া ও মিথ্যা মা*মলা দেওয়াই সহ্য করতে না পেরে ছয় তলা থেকে লাফ দিয়ে জীবন দিলেন ১ যুবক আহারে জীবন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। @highlight Sheikh Parash #SaveBangladeshFromYunus #highlights2025 #AwamiLeague’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় সহ্য করতে না পেরে বহুতল ভবন থেকে লাফ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যার নয় বরং, এটি ভারতের ভিন্ন ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এক্সে (সাবেক টুইটারে) ‘Digraj‘ নামক অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ মার্চ ২০২৫ ‘Man Committed Suicide in Bhavnagar, Gujarat. Jumped from Government Building. There is huge unemployment and financial pressure on today’s youths of India. Hope our Country will wake-up early.’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে সংযুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে  প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘News 18’ এর ৭ মার্চ ২০২৫ ‘Leap to death: Retired employee jumps from municipal building, watching the video will make your hair stand on end’ (অনুদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের গুজরাটে একজন ব্যক্তি ভাবনগর পৌর কর্পোরেশন ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিকভাবে মারা যান। পৌর কর্পোরেশন ভবন থেকে লাফিয়ে পড়া ব্যক্তির নাম যতীন আন্ধারিয়া হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি পৌর কর্পোরেশনের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন। পুরো ঘটনায় মৃত ব্যক্তি কেন আত্মহত্যা করেছেন সে সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে পুলিশ এই বিষয়টি তদন্ত করছে।

একই বিষয়ে ভারতের স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন (, ) প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনগুলো থেকেও আলোচিত বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। 

সুতরাং, ভারতের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় সহ্য করতে না পেরে বহুতল ছয় তলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পুলিশের সামনে নৃশংস হত্যার এই ভিডিওটি ২০২২ সালের 

সম্প্রতি, #StepDownYounus #OnceAgainSheikhHasina হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ময়মনসিংহে গত ১০ মার্চ পুলিশের সামনে একজনকে হত্য করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, পুলিশ ও অনেক মানুষের উপস্থিতিতে একজন ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করছে কয়েকজন।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও, পুলিশের সামনে ১০ মার্চ ২০২৫ এর দৃশ্য দাবিতে ফেসবুকেও আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। এরূপ দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় । প্রকৃতপক্ষে, শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় ২০২২ সালের মার্চে পুলিশ ও অনেক মানুষের উপস্থিতিতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শেখবর আলী না‌মে ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার ভিডিও এটি। বর্তমানে ভিডিওটি সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ডেইলি সোনারগাঁ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল উক্ত ঘটনার একটি দীর্ঘ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ঘটনার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানিশিমুল ইউনিয়নের হালুয়াহাটি এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে শেখবর আলী (৪৫) নামের এক কাঠমিস্ত্রিকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। হত্যাকাণ্ডটি ঘটে ২০২২ সালের ২৩ মার্চ। ঘটনাটি ঘটে পুলিশের সামনেই।

মূল ধারার সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল প্রকাশিত ‘পুলিশের উপস্থিতিতে ‘হত্যা’, ভাইরাল ভিডিও নিয়ে তোলপাড়’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার প‌শ্চিম হালুয়াহা‌টি এলাকায় ২০২২ সালের ২৩ মার্চ জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পুলিশের উপস্থিতিতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শেখবর আলী না‌মে এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনার ভিডিও এটি।

প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়,  শনিবার ( ২০২২ সালের ৯ এপ্রিল) সিরাজুল নামে এক ফেসবুক আইডি থেকে ওই ঘটনার ভিডিও পোস্ট করা হয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিন জন পুলিশ সদস্য ও প্রায় অর্ধশত মানুষের উপস্থিতিতে কয়েকজন নারী-পুরুষ লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শেখবর আলীর ওপর হামলা চালায়। আঘাতে মুহূর্তেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। 

এছাড়াও, যুগান্তর, চ্যানেল২৪ এবং বিবিসি নিউজ বাংলায় সেই সময় প্রকাশিত সংবাদ থেকেও জানা যায় ঘটনাটি ২০২২ সালের। 

অর্থাৎ, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের দৃশ্য দাবি করে সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের পদত্যাগ চেয়ে যে ভিডিও প্রচার হচ্ছে তা আদতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের।

সুতরাং, শেরপুরে পুলিশের সামনেই এক ব্যক্তিকে হত্যার ২০২২ সালের ভিডিওকে ময়মনসিংহের সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

প্রধান উপদেষ্টা ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য প্রদানের দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন একটি জনসভায় ‘ড. ইনুস আমাকে যা করতে বলে তা আমি করলে দেশের আর সার্বভৌমত্ব থাকে না আমি তাদের কথায় তা করতে পারিনা।’ শীর্ষক কথাগুলো বলেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে তাকে, ‘এই এই কাজ করতে হবে… যা করতে বলে তাহলে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকে না।… বলেন, দেশ বিক্রি করে দিব?… এখানে ড. ইউনূস আছে…এটা তুমি করো…আমি উপদেষ্টাকে বলেছি, আমি এটা করতে পারিনা…আমি বঙ্গবন্ধুর ছোয়া পেয়েছি।’ শীর্ষক কথাগুলো বলতে শোনা যায়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের আলোচিত বক্তব্য প্রদানের তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে পাবনায় রাষ্ট্রপতিকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদানের অনুষ্ঠানে তার দেওয়া বক্তব্যের কয়েকটি দৃশ্যের সমন্বয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম মাছরাঙা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৬ মে সরাসরি পাবনায় নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শীর্ষক শিরোনামে সরাসরি সম্প্রচারিত উক্ত অনুষ্ঠানের সম্পূর্ণ ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটির ৩ ঘন্টা ৩৬ মিনিট ২৮ সেকেন্ড সময় থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দেওয়া বক্তব্যের বেশকিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর বক্তব্যের মিল রয়েছে। মূলত, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তার বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ কাট করে সমন্বয়ের মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ওই মুহূর্তে পদ্মাসেতু নির্মাণের সময়কার এবং তার দুদকের কমিশনার থাকাকালীন সময়ের বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেন। 

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের জনসভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জড়িয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে করা আলোচনার ভিডিওটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

গোপালগঞ্জে হত্যার শিকার হওয়া এই ব্যক্তি হিন্দু নন, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী

সম্প্রতি, বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার লাখিরপাড় গ্রামে হিন্দু খোকন মজুমদারের বাড়িতে তার ছেলে পিয়াসকে হাত পা বেঁধে হত্যা করার ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া একই ভিডিও নাম ছাড়া হিন্দু দাবিতে এবং ফেসবুকে তৌহিদি জনতা খুন করেছে দাবিতে প্রচার হচ্ছে।  

এক্সে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল ভিডিওর হত্যাকাণ্ডের শিকার এই ব্যক্তি হিন্দু ধর্মাবলম্বী নন বরং তিনি একজন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ১১ মার্চ ফেসবুকে Tayef Rezuan Rupak নামের একটি অ্যাকাউন্টে ‘গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের লাখিরপাড় গ্রামে দিনে-দুপুরে ডাকাতি ও খুনের ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত ও দুবৃত্তরা খ্রিস্টান সম্প্রদায়স্থ খোকন মজুমদারের ছেলে পিয়াল মজুমদারকে হাত-পা বেঁধে হত্যা করে সমগ্র ঘর লুটপাট করেছে। বাড়িঘরেও কেউ নিরাপদ না! এই মৃত্যু উপত্যকা আমার বাংলাদেশ না!‘ শীর্ষক একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়, ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওর হাত-পা বাঁধা যুবক, যুবকের পরিহিত প্যান্ট, বিছানা, টিভি এবং মশারীর মিল পাওয়া যায়। 

Comparison: rumor scanner

উক্ত তথ্যের সূত্রে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকায় একইদিন প্রকাশিত ‘কোটালীপাড়ায় ঘরে ঢুকে যুবককে হাত-পা বেঁধে হত্যা, মালামাল লুট’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বসতঘরে ঢুকে পিয়াস মজুমদার (২২) নামের এক যুবককে হাত-পা বেঁধে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা ঘরের আসবাব ভাঙচুর করে স্বর্ণালংকার ও টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের লাকিরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

কোটালীপাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, পিয়াস নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে নিহত পিয়াস মজুমদার হিন্দু কিনা জানতে কোটালীপাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সে হিন্দু হওয়ার দাবিটি ভুয়া। সে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের। চুরি-ডাকাতির উদ্দেশ্যে তার ঘরে অপরাধী এসেছিল৷ ঘরে সে দেখে ফেলায় তাকে বেঁধে মেরে চলে গেছে। অপরাধী এখনও ধরা হয়নি। তদন্ত ও কাজ চলছে।

সুতরাং, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় খুন হওয়া একজন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ব্যক্তির ভিডিওকে বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিকে হত্যার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

জামায়াত আমির ও নাহিদ ইসলামের চুম্বনের ভাইরাল দৃশ্যটি ভুয়া 

গত ১১ মার্চ রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট নাগরিক, সাংবাদিক, ছাত্র-শ্রমিক, পেশাজীবী ও আলেমসহ সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষকে নিয়ে ইফতার মাহফিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পরবর্তীতে, এই ইফতার মাহফিলে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের চুম্বনরত দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এনসিপির ইফতার মাহফিলে নাহিদ ইসলাম ও শফিকুর রহমানের চুম্বনের ভাইরাল দৃশ্যটি বাস্তব নয়। বরং, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই দৃশ্যতে এআই-জনিত একাধিক অসংগতি পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া, সেদিনের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ভিডিও ও ছবি পর্যালোচনায়ও এমন কোনো ঘটনার প্রমাণ মেলেনি।

বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রিউমর স্ক্যানার টিম এনসিপির আয়োজিত ইফতার মাহফিলের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ও প্রতিবেদন ছাড়াও, মাহফিলে উপস্থিত ব্যক্তিদের ফেসবুকে শেয়ার করা ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করা হয়। তবে কোথাও এমন কোনো দৃশ্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এমন দৃশ্যের প্রমাণ না পাওয়ায় রিউমর স্ক্যানার টিম ভাইরাল ছবিটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে। পর্যবেক্ষণে বেশ কিছু অসংগতি ধরা পড়ে, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দ্বারা তৈরি ছবির ক্ষেত্রে দেখা যায়।

প্রথমত, ছবিতে নাহিদ ইসলাম ও শফিকুর রহমান—দুজনের হাতেই ঘড়ি দেখা যায়। তবে সেদিনের একাধিক ছবিভিডিও বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নাহিদ ইসলামের হাতে কোনো ঘড়ি ছিল না। দ্বিতীয়ত, ছবিতে শফিকুর রহমানের বাম হাতে একটি আংটি দেখা গেলেও ইফতার মাহফিলের ছবি পর্যবেক্ষণে তার হাতে কোনো আংটির অস্তিত্ব মেলেনি।

এছাড়া, ছবিতে থাকা দুই ব্যক্তির হাতের গঠনে লক্ষণীয় অসংগতি রয়েছে। তুলনা করে দেখা গেছে, হাতের কিছু বৈশিষ্ট্য নাহিদ ইসলামের সঙ্গে আংশিক মিলে গেলেও ৬৬ বছর বয়সী শফিকুর রহমানের হাতের সঙ্গে ছবির হাতের কোনো মিল নেই। বরং, ছবিতে থাকা হাত তুলনামূলকভাবে মসৃণ, বলিরেখাহীন এবং তরুণদের হাতের মতো দেখাচ্ছে। সাধারণত ৬৬ বছর বয়সে হাতের চামড়ায় ভাঁজ ও বলিরেখা দেখা যায়, যা সেদিনের ছবি পর্যালোচনায় শফিকুর রহমানের হাতেও প্রতীয়মান হয়েছে।

এসব অসংগতি দেখে রিউমর স্ক্যানার নিশ্চিত হয় যে ছবিটি আলোচিত ইফতার মাহফিলের কোনো ভিডিওর ওপর এআই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে তৈরি করা হয়েছে। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে, ‘Chemical Ali’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে একই চুম্বনরত দৃশ্যের একটি ভিডিও পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে, ‘Muhammad Ferdous Pramanik’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১১ মার্চ  প্রকাশিত মূল ভিডিওটি পাওয়া যায়। মূল ভিডিওটিতে দেখা যায়, নাহিদ ইসলাম ও শফিকুর রহমান কেবল চেয়ার বদল করছিলেন। একই ভিডিও সেদিন দৈনিক ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজ থেকেও প্রকাশিত হয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner.

এছাড়া, সেদিন নাহিদ ইসলাম ও শফিকুর রহমানের চেয়ার বদলের পুরো ঘটনার ভিডিও পর্যালোচনা করেও তাদের চুম্বনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, ওই ইফতার মাহফিলের একটি ভিডিও সংগ্রহ করে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করা হয়েছে এবং সেটিই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সুতরাং, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ছবি এনসিপির ইফতার মাহফিলে নাহিদ ইসলাম ও শফিকুর রহমানের চুম্বনরত বাস্তব দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বক্তব্য দেওয়া এই ব্যক্তি নিহত হননি, জীবিত আছেন

সম্প্রতি, এই মানুষটাকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে যে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন- দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দিচ্ছেন। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়নি বরং, তিনি এখনো জীবিত আছেন এবং তার ওপর কোনো ধরনের হামলাও হয়নি। ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ব্যক্তি দুইজন ভিন্ন। 

অনুসন্ধানে Kamrul Hasan নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৫ মার্চ প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Video Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে বক্তব্যরত ব্যক্তিটি পোস্টকারী নিজে দাবি করে বলেন, আমি জীবিত আছি! অনেকেই দেখলাম আমার এই বক্তব্য শেয়ার/পোস্ট করে বলছেন সাতকানিয়া শহীদ ২ জনের ১জনের বক্তব্য এটা। এটা গুজব। আমি নিহত কিংবা শহীদ হইনি। আমি জীবিত আছি আলহামদুলিল্লাহ। 

পরবর্তীতে Kamrul Hasan নামক ফেসবুকে অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে বক্তব্যরত ব্যক্তিই উক্ত ব্যক্তি। 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ০৪ মার্চ প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৩ মার্চ রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণার পর পিটুনিতে দুজন নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)। 

প্রথম আলোকে জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোছেনের দেওয়া বক্তব্যে বলা হয়, নিহত ব্যক্তিরা জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি নয় বরং, ভিন্ন দুই ব্যক্তিকে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।

সুতরাং, জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

শাওন ও রুমিন ফারহানাকে নিয়ে ড. আসিফ নজরুলের পোস্ট দাবিতে সম্পাদিত স্ক্রিনশট প্রচার

0

সম্প্রতি, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার একটি ছবি ব্যবহার করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে ‘নারী দুই অথচ পুরুষের ছোঁয়া অগণিত’ শীর্ষক শিরোনামে একটি পোস্ট করেছেন দাবিতে একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মেহের আফরোজ শাওন ও রুমিন ফারহানাকে নিয়ে করা উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের পোস্ট দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, নারী দিবস উদযাপনে সম্প্রতি ফ্রান্স অ্যাম্বাসেডরের বাসভবনে যান শাওন ও রুমিন ফারহানা। সে মুহুর্তে ধারণ করা তাদের একটি ছবি ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ড. আসিফ নজরুলের পোস্ট দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ওই পোস্টটি চার দিন আগে করা হয়েছে। এদিকে আলোচিত দাবিটি গত ১১ তারিখ থেকে ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। সে বিবেচনায় ড. আসিফ নজরুলের পোস্টটি গত ৭ মার্চের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কিন্তু উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের ফেসবুক পেজ পর্যালোচনা করে সেসময় বা তার আগে ও পরের পোস্টগুলো পর্যালোচনা করেও এমন কোনো পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে মেহের আফরোজ শাওন ও রুমিন ফারহানার ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে শাওনের ফেসবুক প্রোফাইল পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ১০ মার্চ প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে তিনিসহ বেশ কয়েকজন নারীর ফ্রান্স অ্যাম্বাসেডরের বাসভবনে যাওয়ার ছবি পোস্টটিতে দেখতে পাওয়া যায়। ‍উক্ত পোস্টেই রুমিন ফারহানার সাথে তার আলোচিত ছবিটিও খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির ক্যাপশনে তিনি বলেন, ‘বহুবছর পর কলেজের বন্ধুর সাথে’। 

Collage by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ড. আসিফ নজরুলের পোস্ট দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটিতে দেখতে পাওয়া তারিখেরও বেশ পরে মেহের আফরোজ শাওন ছবিটি প্রচার করেছেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন অর্থাৎ ৮ মার্চও যদি ছবিটি ধারণ করা হয়। তবুও ড. আসিফ নজরুলের পোস্ট দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটির তারিখের সাথে অসামঞ্জস্যতা থাকে।

সুতরাং, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে মেহের আফরোজ শাওন এবং রুমিন ফারহানাকে নিয়ে আপত্তিকর শিরোনামে পোস্ট করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Meher Afroz Shaon Facebook Post

সুস্থ হয়ে ওঠা শিশুর পুরোনো ছবি ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ

0

সম্প্রতি, একজন অসহায় বাবার ছেলের জীবন বাঁচাতে কয়েকটি ছবি দিয়ে আর্থিক সহায়তার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টটিতে সাহয্যের জন্য বিকাশ ও নগদ হিসেবে ‘01538418389’ এবং রকেট হিসেবে ‘01538418389-0’ নাম্বার যুক্ত করা হয়েছে। 

‘তানিয়া আক্তার’ নামক ফেসবুক পেজ থেকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রচারিত ছবিগুলো কোনো ছেলের নয় বরং, তাজরীন নামের এক মেয়ের। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের অনলাইন ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম কেট্টো (Ketto) এর মাধ্যমে ২০২০ সালে তাজরীনের জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদনের ছবি ব্যবহার করে সম্প্রতি বর্তমানে আলোচিত দাবিতে পোস্টগুলো প্রচার করে আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের অনলাইন ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম কেট্টো (Ketto) এর ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ‘My daughter’s eye ball is dangling out because of a horrible disease. Please help me save her life:’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্টটিতে দেওয়া লিংককে প্রবেশ করে ‘Tajrin’s cancer is spreading, help me save her from this deadly disease’ শীর্ষক শিরোনামে শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের অনুরোধ করা এক মানবিক আবেদনেও আরও ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

অ্যাবাউট থেকে জানা যায়, ছবিগুলো অরবিটাল র‍্যাবডোমায়োসারকোমা (এক ধরনের বিরল ক্যান্সার) আক্রান্ত ৫ বছর বয়সী তাজরীন নামের এক শিশুর। শিশুটিকে সুস্থ করতে জরুরি ভিত্তিতে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি এবং অস্ত্রোপচার করতে প্রায় ২৬,৬৪৯.৭৯ মার্কিন ডলার প্রয়োজন ছিল। শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের অনুরোধ করা এক মানবিক আবেদন এটি।

তবে, ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এই তহবিল সংগ্রহ ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ শেষ হয়েছে।

Screenshot: Ketto

উক্ত তহবিল সংগ্রহের সর্বশেষ আপডেট তথ্যে ফাইন্ড রাইজার জসিম (মেয়ের বাবা) বলেন, আপনাদের দয়ায় আমার মেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। তার বয়স এখন ৫ বছর। তাজরীন এখন খুব ভালো আছে এবং খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তার কেমোথেরাপি শেষ হলেই সে স্কুলে যেতে প্রস্তুত। চিকিৎসার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তার হয়নি এবং সে আগের চেয়েও ভালো আছে। সে বাংলাদেশে তার বাড়িতে ফিরে এসেছে। আমার মেয়ে এখন ভালো খাচ্ছে এবং তার ওজন ২৪.৫ কেজি। পুনরায় কোনো সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে তাকে নিয়মিত ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। আপনাদের মতো দয়ালু মানুষদের সহায়তার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। আপনাদেরকে আবারও ধন্যবাদ!

সুতরাং, আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশি মেয়ে তাজরীনের অসুস্থতার পুরোনো ছবি ব্যবহার করে একজন অসহায় বাবার ছেলের জীবন বাঁচাতে আর্থিক সহায়তার আবেদন দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র