Home Blog Page 116

ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে ধরা শেখ হাসিনার ছবিটি সম্পাদিতে

সম্প্রতি ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ’ শীর্ষক ক্যাপশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে একটি ফাইলে ‘বিজয় আসবেই…’ শিরোনামে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন ক্রিস্টালিনা জজিভা আইএমএফ প্রধান’ লিখিত ছবি প্রদর্শনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে থাকা ফাইলে শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শনের ভিডিওটি আসল নয়। বরং, ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম NBC News এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ জানুয়ারি ‘Trump signs several executive orders, including withdrawal from Paris Climate Treaty’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক প্যারেডের পরপরই ক্যাপিটাল ওয়ান অ্যারেনায় ২০,০০০ সমর্থকের সামনে বসে বেশকিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন; ভিডিওটি ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরকালীন সময়ের৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির ০২:৫৩ থেকে ০৩:০২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি যেখানে ‘Directive issued to address the cost of living crisis’ রয়েছে, তা আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে৷ তবে এই অংশটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার স্বাক্ষরিত একটি নথি প্রদর্শন করতে দেখা যায়, উক্ত নথিতে ‘বিজয় আসবেই…’ শিরোনামে শেখ হাসিনার ছবি ও ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন ক্রিস্টালিনা জজিভা আইএমএফ প্রধান’ লিখিত ছবি দেখা যায়নি৷ 

অর্থাৎ, মূল ভিডিওর উল্লিখিত অংশে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘বিজয় আসবেই…’ শিরোনামে শেখ হাসিনার ছবি ও ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন ক্রিস্টালিনা জজিভা আইএমএফ প্রধান’ লিখিত ছবি প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

পরবর্তীতে, যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমে The Telegraph এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ জানুয়ারি ‘Trump signs executive orders and throws pens into crowd live on stage’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়৷ 

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শন করেছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

রকমারির নামে প্রচারিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ‘রকমারি ডটকম’ এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি দাবিতে একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ‘রকমারি ডটকম’ এর কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত এই তথ্যটি সঠিক নয় বরং ফেসবুকে ভুয়া পেজ তৈরি করে ‘রকমারি ডটকম’ এর নামে কর্মী নিয়োগের ডিজিটাল ব্যানার প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘রকমারি ডটকম’ এর কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোচিত ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশের চেষ্টা করা হলে ওয়েবসাইটটির লিংকটি কাজ না করায় প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। 

এছাড়া, রকমারির ওয়েবসাইট এবং লিংকড ইন অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মী নিয়োগের এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাহী ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুল হাসান সোহাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেন।

সোহাগ জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই লড়াই করছি। একটি বন্ধ হয় আরেকটি চালু হয়। আমাদের জিডি করা আছে, বিটিআরসিকে জানানো আছে। এটি পুরোপুরি সমাধান করা যাচ্ছে না৷ আমরা আমাদের কাস্টমারদেরও অনেকদিন ধরে সতর্ক করার চেষ্টা করছি, বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি৷ কিন্তু সবাই আসলে সবকিছু খেয়াল করে না। ফলে অনেক মানুষই প্রতারিত হচ্ছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি।

সুতরাং, অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান রকমারি ডটকমের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ডিজিটাল ব্যানার প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আগে বিচার পরে সংষ্কার শীর্ষক মন্তব্য তাসনিম জারা করেননি

সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারার ছবি সংযুক্ত করে দাবি প্রচার করা হয়েছে যে তাসনিম জারা বলেছেন “আগে বিচার পরে সংস্কার, বিচার ছাড়া আমরা নির্বাচন চাই না।”

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: একাত্তর টিভি

পরবর্তীতে উক্ত গণমাধ্যমটির ফটোকার্ডের মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি নানা ফেসবুক ব্যবহারকারী ফেসবুকে প্রচার করেন। 


ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “আগে বিচার পরে সংস্কার, বিচার ছাড়া আমরা নির্বাচন চাই না” শীর্ষক কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা করেননি বরং, কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে তাসনিম জারার এরূপ কোনো মন্তব্য করার সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাসনিম জারা এরূপ কোনো মন্তব্য করে থাকলে তার ভিডিও ফুটেজ বা নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ থাকার কথা। কিন্তু, এরূপ কোনোকিছুই মেলেনি।

পরবর্তীতে তাসনিম জারার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, একাত্তর টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত উক্ত ফেসবুক পোস্টটি গত ১০ মার্চে তার পেজে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “এটা বানোয়াট উক্তি। আমি এমন কিছু কখনোই বলি নি। এটা বলার প্রশ্নই আসে না। একাত্তর টিভি কোন উদ্দেশ্যে এমন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।”

Screenshot: Facebook

উল্লেখ্য যে, পরবর্তীতে একাত্তর টিভি আলোচিত দাবিতে তাদের প্রচারিত ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে নেয় এবং প্রচারিত পোস্টের বিষয়ে ঐদিনই (১০ মার্চ) আরেকটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানায়, “শহীদ জাবিরের বাবার বক্তব্য ভুলক্রমে ডা. তাসনিম জারার ছবিসহ পোস্ট দেওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। -একাত্তর”

উল্লেখ্য যে, অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪ এ গত ১০ মার্চে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১০ মার্চে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে ছয় বছরের শহীদ জাবির ইব্রাহীমের বাবা বলেন, ‘আমাদের শহীদ পরিবার এবং আহতদের একত্রিত করায় শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। শহীদ ও আহত পরিবারের সবাই আগে বিচার চাই। আগে বিচার হবে, তারপর সংস্কার হবে। বিচার, সংস্কার না হইলে আরেকটা চব্বিশ হবে। বিচারের আগে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আহতের সুচিকিৎসা আরও দ্রুত করা দরকার।’

সুতরাং, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা বলেছেন, “আগে বিচার পরে সংস্কার, বিচার ছাড়া আমরা নির্বাচন চাই না” শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের ‘ব্যর্থ ক্যু’ সংক্রান্ত খবরটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সফর শেষে গত ০৬ মার্চ দেশে ফিরেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এরই প্রেক্ষিতে ভারতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, সেনাপ্রধান দেশে ফেরার পর তাকে বহনকারী বিমান ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেনি। অবতরণ করেছে তেজগাঁও বিমানবন্দরে। একই সাথে এও দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে। এই চেষ্টায় জড়িত হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমানসহ ১১ জন সেনা কর্মকর্তার বিষয়ে বলা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন আজতক বাংলা (ইউটিউব), আজতক বাংলাইকোনমিক টাইমসইন্ডিয়া টুডেটাইমস নাউ।  

একই দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সেনা অভ্যুত্থান সংক্রান্ত দাবিটি সঠিক নয় বরং প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পরে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া আলোচিত দাবিটি সম্পূর্ণ ভুয়া। আইএসপিআরের পক্ষ থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ বিষয় অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিগুলোর সূত্রপাতের খোঁজ চালায় রিউমর স্ক্যানার। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সেনাপ্রধান দেশে ফেরার পরদিন থেকেই ফেসবুকে এই দাবিটি করা হচ্ছিল যে, “তিনি নির্ধারিত সময়ের ৫-৬ ঘন্টা আগে ঢাকা পৌঁছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে না নেমে তেজগাঁও বিমানবন্দরে তাকে নিয়ে আসা বিমান অবতরণ করান।” হাওলাদার আব্দুর রশিদ নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ০৭ মার্চ রাত ৯ টা ৪৭ মিনিটে এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি করা হয়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমানের বিষয়ে আলোচিত দাবিটি প্রচারের সম্ভাব্য উৎস হিসেবে এক্সের নাম এসেছে। প্লাটফর্মটিতে গত ৯ মার্চ ‘Nepal Correspondence’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ‘𝐉𝐔𝐒𝐓 𝐈𝐍: 𝐂𝐎𝐔𝐏 𝐏𝐑𝐄𝐕𝐄𝐍𝐓𝐄𝐃 𝐈𝐍 𝐁𝐀𝐍𝐆𝐋𝐀𝐃𝐄𝐒𝐇 𝐀𝐑𝐌𝐘’ শিরোনামে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।


Nepal Correspondence নামের এই অ্যাকাউন্টটি পূর্বে থেকেই বাংলাদেশ বিষয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ও অপপ্রচারমূলক তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত।

অর্থাৎ, এ সংক্রান্ত দাবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রথম প্রচার হতে দেখা যায়। এসব পোস্ট বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার দাবিগুলোর বিপরীতে কোনো প্রমাণ বা সূত্রের উল্লেখ পায়নি।

পরবর্তীতে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে আজতক বাংলা ১০ মার্চ সকাল ৮.৩০ টা মিনিটে সমজাতীয় দাবি নিয়ে তথ্য প্রচারের পর দেশটির অন্যান্য গণমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।  

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস “Bangladesh Army coup plot thickens as pro-Pakistan Lt General put under surveillance” শিরোনামে গত ১০ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, “লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি অংশ বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা করছে। অভ্যুত্থানের প্রতি সমর্থন যাচাই করার জন্য রহমান একটি সভা ডেকেছিলেন কিন্তু তার উপস্থিতি সীমিত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা এখন তার উপর নজর রাখছে এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও খারাপ হতে পারে। এই ষড়যন্ত্রে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা জড়িত।”

ইকোনমিক টাইমসের এই প্রতিবেদনটি দীপাঞ্জন রায় চৌধুরী নামের এক ভারতীয় সাংবাদিক লিখেছেন, যার আগে থেকেই বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক, অপপ্রচারমূলক প্রতিবেদন প্রকাশের ইতিহাস রয়েছে। ৫ আগস্টের পরেও তিনি বাংলাদেশ নিয়ে কয়েকটি অপপ্রচারমূলক প্রতিবেদন করেছেন। যার মধ্যে আছে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা।

এছাড়াও, এর পূর্বে একই বিষয়ে একই গণমাধ্যম গত ২৬ জানুয়ারি “বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে” (অনূদিত) শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ না পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালকের সাথে কথা বলে রিউমর স্ক্যানার৷ তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, সেনাপ্রধানের সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সফরে তিনি নিজেও সফরসঙ্গী ছিলেন। তাদের বহনকারী বিমান ০৬ মার্চ শাহজালাল বিমানবন্দরেই অবতরণ করে।  

একই সাথে জেনারেল ফয়জুর রহমানের সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা, এর ফলে তাকে সরিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত দাবিগুলো ভুয়া বলে উল্লেখ করেছে আইএসপিআর কর্তৃপক্ষ।  

বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে গতকাল রাতে রিউমর স্ক্যানারের কাছে একটি প্রতিবাদলিপির কপি পাঠিয়েছে আইএসপিআর। পরবর্তীতে প্রতিবাদলিপিটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়েছে। ‘Rejoinder: Response to False Reports on Bangladesh Army by Certain Media Outlets from India’ শিরোনামে এই প্রতিবাদলিপিতে লেখা হয়,

 “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম, বিশেষ করে The Economic Times ও India Today, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা এবং কমান্ড চেইনের ভঙ্গুরতা নিয়ে একাধিক ভিত্তিহীন ও মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর এবং বাংলাদেশ ও এর সশস্ত্র বাহিনীর স্থিতিশীলতা ও ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে চালানো একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।”

সুতরাং, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের ‘ব্যর্থ ক্যু’ সংক্রান্ত খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

Rumor Scanner’s own investigation

Statement from ISPR

তাসনিম জারাকে জড়িয়ে জনকণ্ঠের নামে ‘রমজানে সহবাসের নিয়ম’ শীর্ষক সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘রমজানে সহবাসের নিয়ম’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক জনকণ্ঠের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘রমজানে সহবাসের নিয়ম’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে জনকণ্ঠেরর একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃত করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে জনকণ্ঠের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১০ মার্চ, ২০২৫ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, গত ১০ মার্চ জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির মিল রয়েছে। 

Photocard Comparison By Rumor Scanner

তবে উক্ত ফটোকার্ডটিতে থাকা শিরোনামটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, আলোচিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

সুতরাং, ‘রমজানে সহবাসের নিয়ম’ শীর্ষক শিরোনামে জনকণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

  • Janakantha Facebook Page 
  • Janakantha Facebook Post 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে ‘র’-এর চারজন এজেন্ট আটক হওয়ার ভুয়া দাবি প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর চারজন এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর চারজন এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। বরং, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে নেত্রকোণায় সেনাবাহিনীর হাতে ভারতীয় চিনিসহ ৪ চোরাকারবারী আটক হওয়ার ছবি ও ভুঁইফোড় ওয়েব পোর্টালে প্রকাশিত কথিত সংবাদের মাধ্যমে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, পোস্টের ‘বিস্তারিত কমেন্টে’ উল্লেখিত সূত্র হিসেবে একটি লিংক দেওয়া হয়েছে। লিংকটিতে ক্লিক করলে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ইন্টারফেস দেখা যায়, যেখানে আলোচিত দাবির সঙ্গে সম্পর্কিত কথিত একটি প্রতিবেদন প্রদর্শিত হয়। প্রতিবেদনে কিছু বস্তার সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং হাতকড়া পরিহিত তিনজন ব্যক্তিকে দেখা যায়। তবে প্রতিবেদনে আলোচিত বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই লিংকটি রিডাইরেক্ট হয়ে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বিজ্ঞাপনে নিয়ে যায়।

Screenshot: Fake Website.

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘tmnews.online’ -এ কথিত প্রতিবেদনটি পাওয়া যায়।

Screenshot: tmnews.online

কথিত প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত ছবিটি রির্ভাস সার্চ করে দৈনিক ইনকিলাব-এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট প্রকাশিত ‘নেত্রকোণায় সেনাবাহিনীর হাতে ভারতীয় চিনিসহ ৪ চোরাকারবারী আটক’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে ব্যবহার করা ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি একই।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নেত্রকোণায় সেনাবাহিনী একটি টিম জেলার দূর্গাপুরের আত্রাই খালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনি সহ ৪ জন চিনি চোরাচালানকারীকে আটক করেছে।

নেত্রকোণায় দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিসানুল হায়দার সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি টিম রবিবার গভীর রাতে জেলার দূর্গাপুর উপজেলা আত্রাই খালী বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনি সহ ৪ চোরাকারবারিকে আটক করেছে।

আটককৃত চিনির আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। চিনি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার জন্য আটককৃত ৪ চোরাকারবারি নাম প্রকাশ করা হয়নি।

সোমবার (২০২৪ সালের ১২ আগস্ট) দুপুরে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনি সহ আটককৃত ৪ জন চোরাচালানকারীকে ৩১ বিজিবি এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়াও, নেত্রকোণা জার্নালআমার সংবাদ এর ওয়েবসাইটে সেই সময় এই বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

তাছাড়া, গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর চারজন এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর চারজন এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফেসবুকের ফ্যাক্টচেকিং বিষয়ে পিনাকী ভট্টাচার্যের ডিপফেক ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করে ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, “how Facebook’s Fact-Checking System Is Being Hijacked by Indian BJP IT cell. ইন্ডিয়ান্স আর অন এটাক!  চেক কমেন্টবক্স!”

প্রচারিত ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন এবং বলছেন, ভারত ফ্যাক্টচেকিংকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। শেখ হাসিনা ও ভারতের নীতির বিরুদ্ধে যাওয়া পোস্টগুলো পদ্ধতিগতভাবে দাবানো হচ্ছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নষ্ট করছে। ফ্যাক্টচেকাররা নিরপেক্ষ নয়। তারা বিজেপি ও হাসিনার প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। এছাড়াও তাকে কয়েকটি ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের নাম ও তাদের দ্বারা ফ্ল্যাগড হওয়া পোস্ট স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয়। ভিডিওটির মন্তব্য সেকশন পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ককে এসব বিষয় জানিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ইমেইল দিতে বলা হয়েছে এবং একটি ইমেইল টেমপ্লেটও দেওয়া হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় ফ্যাক্টচেকাররা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছেন এবং শেখ হাসিনা ও বিজেপির হয়ে ফ্যাক্টচেকাররা কাজ করছেন শীর্ষক দাবি করা পিনাকী ভট্টাচার্যের এই ভিডিওটি আসল নয় বরং, ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় ফ্রান্স ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ফ্রান্স ২৪ ইংলিশ’ এ পিনাকী ভট্টাচার্যের দেওয়া সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিওতে ভুয়া অডিও সংযুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে পিনাকী ভট্টাচার্য এরূপ দাবি কোন প্রেক্ষাপটে, কখন করেছেন সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রমাণও মেলেনি।

তবে, অনুসন্ধানে ‘ফ্রান্স ২৪ ইংলিশ’ এর ইউটিউব চ্যানেলে “Bangladesh’s revolution: Exiled blogger Pinaki Bhattacharya on fall of ‘fascist regime’” শীর্ষক শিরোনামে গত ১৭ ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত পিনাকী ভট্টাচার্যের দেওয়া সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে পিনাকীর পরিধেয় পোশাক, টাই, পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং লক্ষ্য করা যায় এই ভিডিওটির দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্য মূলত উক্ত ভিডিও থেকেই নেওয়া হয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner

কিন্তু, পিনাকী ভট্টাচার্যের উক্ত আসল সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ফ্যাক্টচেকার কর্তৃক মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে বিজেপি ও হাসিনার জন্য কাজ করার বিষয়ে আলোচিত দাবির অনুরূপ কোনো কথা পিনাকী ভট্টাচার্যকে বলতে শোনা যায়নি। উক্ত ভিডিওতে পিনাকী ভট্টাচার্যকে বরং জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের নানা বিষয়, তার ভূমিকা, নির্বাচন, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ, করোনার সময় তার অভিজ্ঞতা, ফেসবুকের কন্টেন্ট রেস্ট্রিকশনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়।

তাছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে সংযুক্ত অডিও এর সাথে পিনাকী ভট্টাচার্যের অঙ্গভঙ্গির কিছুটা অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়, যেটি মূল ভিডিওতে পরিলক্ষিত হয়নি।

এই ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, তারা নিয়মিতভাবে এআই এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি এমন ভুয়া কনটেন্ট প্রচার করে থাকে। উক্ত ফেসবুক পেজটি থেকে এর আগে এরকম একাধিক এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও আসল দাবিতে প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

উল্লেখ্য যে, ডিপফেক হল বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু নকল বা কিছুটা পরিবর্তিত কন্টেন্ট যা ভিডিও বা অডিওর উপাদান সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়। ডিপফেক ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তির মুখের অবয়ব বা ভয়েসকে অন্য কারোর সাথে বা নিজেরই ভুয়া ভিন্ন ঘটনার ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রযুক্তির সহায়তায় একজন ব্যক্তির এমন কিছু ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা তিনি নিজে বলেননি বা করেননি।

সুতরাং, ভারতীয় ফ্যাক্টচেকাররা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছেন এবং শেখ হাসিনা ও বিজেপির হয়ে ফ্যাক্টচেকাররা কাজ করছেন শীর্ষক দাবি করা পিনাকী ভট্টাচার্যের সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

আমার চেহারাটাই গাঁজাখোরের মতো শীর্ষক মন্তব্য করেননি ড. ইউনূস, আরটিভির নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘আমার চেহারাটাই গাঁজাখোরের মতো: প্রধান উপদেষ্টা’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম আরটিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আমার চেহারাটাই গাঁজাখোরের মতো: প্রধান উপদেষ্টা’ শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে আরটিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আরটিভির একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃত করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে কথিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে আরটিভির লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১০ মার্চ ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্রে আরটিভির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ১০ মার্চ গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে ‘বাংলাদেশের অবস্থা ছিল গাজার মতো: প্রধান উপদেষ্টা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের ছবি ও গ্রাফিক্যাল ডিজাইনের সাথে এর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। শুধু আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ‘বাংলাদেশের অবস্থা ছিল গাজার মতো: প্রধান উপদেষ্টা’ শীর্ষক বাক্যের পরিবর্তে ‘আমার চেহারাটাই গাঁজাখোরের মতো: প্রধান উপদেষ্টা’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner. 

অর্থাৎ, আরটিভির এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

উক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া একই শিরোনামে গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিষয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি সোমবার (১০ মার্চ) প্রকাশিত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হন জানিয়ে সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, শেখ হাসিনা দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো।

তিনি আরও বলেন, তবে এতে কোনো ভবন ধ্বংস হয়নি। বরং পুরো প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়াও, আরটিভির ফেসবুক পেজে আজ (১১ মার্চ) আলোচিত ফটোকার্ডটির বিষয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে গণমাধ্যমটি আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া উল্লেখ করে।

সুতরাং, ‘আমার চেহারাটাই গাঁজাখোরের মতো: প্রধান উপদেষ্টা’ শীর্ষক শিরোনামে আরটিভির নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

সাম্প্রতিক সময়ে রিকশাচালককে মারধরের দৃশ্য দাবিতে ২০২১ সালের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, “রিক্সাওয়ালা বুঝে নাই_তৌ*হিদী জনতা, মৌ*ল*বাদীদের দা*পট চলছে… জয় হোক জ*ঙ্গি*বাদের….” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওর রিকশাচালককে মারধরের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০২১ সালে রাজধানীর বংশালে এক রিকশাচালককে মারধরের ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কি ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Liton Mahmud’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২১ সালের ০৪ মে ‘ বংশাল ৩৪নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলের কার্যালয়ের সামনে বিনা কারণেই এই রিকসাওয়ালাকে মারধর করলেন এই ব্যক্তি।’ ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner.

পরবর্তীতে, উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ২০২১ সালের ৪ মে “রিকশাচালককে নির্যাতনকারী কে এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী?” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর বংশালে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিসের সামনে এক রিকশাচালককে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রিকশাচালককে নির্যাতনকারী ওই ব্যক্তির নাম মো. সুলতান আহমেদ। তিনি পেশায় বাচ্চাদের বাইসাইকেলের ব্যবসায়ী। রাজনৈতিক কোনো পরিচয় না থাকলেও বংশাল এলাকায় তার প্রভাব আছে। 

একই বিষয়ে সেসময় দেশের মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন (, ,) প্রকাশিত হয়।

সুতরাং, ২০২১ সালের রিকশাচালককে নির্যাতনের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

মাওলানা আবুল হাশেমের মৃত্যু, ছড়ানো হলো আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর মৃত্যু দাবিতে

0

সম্প্রতি, ‘সোনার মদিনা আমার প্রাণের মদিনা’ খ্যাত হুজুর আল্লামা আবুল কাশেম নূরী ইন্তেকাল করেছেন দাবিটি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর মৃত্যুর দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, চট্টগ্রামের ফয়জুল বারী ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল হাশেমের মৃত্যুবরণের খবর আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর মৃত্যুর ভুয়া দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Muhammad Abul Qashem Noori’ নামক ফেসবুক পেজে প্রচারিত গত ৯ মার্চ একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Muhammad Abul Qashem Noor (Facebook)

ভিডিওটিতে আল্লামা আবুল কাশেম নূরীকে দেখা যায়। এছাড়া, ভিডিওটিতে একজন ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, কিছু ফেসবুক আইডি থেকে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে হুজুর নাকি ইন্তেকাল করেছেন তাই আমি লাইভে আসতে বাধ্য হলাম। হুজুর সুস্থ আছেন। আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।

উক্ত ফেসবুক পেজটি পর্যেবেক্ষণ করে গত ১০ মার্চ আল্লামা আবুল কাশেম নূরী তারাবীর নামাজ নিয়ে আলোচনা করছেন এমন একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Muhammad Abul Qashem Noor (Facebook)

ভিডিওটিতে তারাবীর নামাজ নিয়ে আলোচনার পূর্বে তিনি জানান, কয়েকদিন আগে আমি হসপিটালে ছিলাম এখন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দয়ায় একটু সুস্থ হয়েছি।

এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য মাওলানা আবুল কাশেম নূরীর আত্মীয় মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবায়ের রজবী এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হুজুর অসুস্থ ছিলেন বর্তামানে ভালো আছেন এবং বাড়িতে আছেন। তবে, আল্লামা আবুল হাশেম নামে একজন হুজুর মারা গেছেন। বিভ্রান্তিকরভাবে হাশেম এর জায়গায় কাশেম মারা গেছেন বলা হচ্ছে।

উনার দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘শায়খুল হাদীস কাজী মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন আশরাফী’ নামক ফেসবুক প্রোফাইলে গত ৯ মার্চ একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: শায়খুল হাদীস কাজী মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন আশরাফী (Facebook)

পোস্টে বলা হয়, ফায়যুল বারী মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল আল্লামা আবুল হাশেম শাহ সাহেব ইন্তিকাল করেছেন!ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ পাক মরহুম কে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন, আমিন।

এছাড়াও, ‘Faizul Bari Fazil Madrasah’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৯ মার্চ করা একটি পোস্ট পাওয়া যায়।

Screenshot: Faizul Bari Fazil Madrasah (Facebook)

অর্থাৎ, মারা গেছেন মাওলানা আবুল হাশেম। 

সুতরাং, আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর মৃত্যুর দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Muhammad Abul Qashem Noori: Facebook Live Video
  • Muhammad Abul Qashem Noori: Facebook Live Video
  • Statement: Zubair Razavi
  • শায়খুল হাদীস কাজী মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন আশরাফী: Facebook Post
  • Faizul Bari Fazil Madrasah: Facebook Post