সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ দাবিতে শেওড়াপাড়ায় সাম্প্রতিক খুনের ঘটনার ভিডিও প্রচার 

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বরে ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় অভিনেতা সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় ২৯ বছর পর সম্প্রতি সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘হত্যা’ হিসেবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি প্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ। ৩০ বছর পর এই সিসিটিভি ফুটেজ হঠাৎ করে ফাঁস করে দেওয়া হয় কোনো এক অজানা সাইট থেকে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আগে সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ নয় বরং, গত ১৪ আগস্ট ঢাকার শেওড়াপাড়ায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে সালমান শাহ নিহত হওয়ার ঘটনায় চিত্রনায়িকা শাবনূরকেও অভিযুক্ত করা হয়। 

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘শেওড়াপাড়ায় স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন, মরদেহ যেভাবে বের করলো খু-নিরা’ শিরোনামে গত ১৪ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে একটি সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য প্রদর্শিত হয় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও, সিসিটিভি ফুটেজেও তারিখ হিসেবে ‘১৪ আগস্ট ২০২৫’ দেখা যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, শেওড়াপাড়ার নারী মৃত্যুর ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দাবিতে আরো একাধিক গণমাধ্যমেও আলোচিত সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য প্রচার হতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১৪ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার শেওড়াপাড়ার শামীম স্মরণীর একটি বহুতল ভবন থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১৪ আগস্ট রাতে তার স্বামী তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। নিহতের নাম সৈয়দা ফাহমিদা তাহসিন কেয়া। তার স্বামীর নাম সিফাত আলি।’

এ বিষয়ে গত আগস্টে আরো একাধিক গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, প্রচারিত ফুটেজটি প্রায় ৩০ বছর পূর্বে সালমান শাহ’র নিহত হওয়ার সময়কালের নয় এবং এই সিসিটিভি ফুটেজের সাথে সালমান শাহ’র নিহত হওয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

সুতরাং, গত ১৪ আগস্ট ঢাকার শেওড়াপাড়ায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজকে প্রায় ৩০ বছর আগে সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img