বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের যৌথ অনুশীলন মহড়া ঘিরে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্সের পোশাক পরিহিত অবস্থায় একটি হোটেলে অবস্থানের দৃশ্য ঘিরে একটি ভিডিও নানান ভাবে প্রচার করা হয়েছে। বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ঘিরে জনমনে চলমান উদ্বেগ ও আলোচনা কেন্দ্র করে উল্লিখিত ভিডিও ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ও প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ একটি পোস্টে ভিডিওটি সংযুক্ত করে বলা হয়েছে, “তাহলে কি শেখ হাসিনার কথাই সত্যি হলো বাংলাদেশ অন্য কারো হাতে চলে গেল চট্টগ্রাম শহরে সেনাবাহিনীর হোটেল রেডিসন ব্লু তে রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি ছাড়া ১০০ এর অধিক মার্কিনসেনা রুম বুকিং নিয়েছে। চট্টগ্রাম নৌঘাঁটি, এয়ারপোর্ট, বন্দর, কক্সবাজার, মহেশখালী, সেন্টমার্টিন পুরোটাই অরক্ষিত।খ্রিস্টান ইহুদি মার্কিনীদের আধিপত্যকে যদি ভাবেন ইসলাম কায়েম হচ্ছে তাহলে আপনার সর্বনাশ হতে আর বাকী নেই।”

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে মার্কিন প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের উপস্থিতির ভিডিও যেভাবে প্রাসঙ্গিক তথ্য ছাড়া ভীতিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর। বাস্তবতা হলো—এই ভিডিও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নির্দেশনা ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ০৭ (সাত) দিনব্যাপী ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ শীর্ষক যৌথ মহড়া উপলক্ষে মার্কিন প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের সদস্যদের চট্টগ্রামে হোটেলে অবস্থানের। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশে এসে এ ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান নতুন কোনো বিষয় নয়; বরং গত কয়েক বছর ধরেই নিয়মিতভাবে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর উক্ত সদস্যরা হোটেলের গেস্ট বুকে রেজিস্ট্রেশন করা ছাড়াই উঠার দাবিটিও হোটেল কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করে জানিয়েছে, অন্যান্য অতিথিদের যেভাবে হোটেলে পাসপোর্ট, ভিসা কপি দিয়ে উঠতে হয় ঠিক সেভাবেই তাদের বেলায়ও সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত হোটেলের লবির ডিজাইনের সাথে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু এর লবির ডিজাইনের তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও প্যাসিফিক এয়ারফোর্স, যুক্তরাষ্ট্র এর যৌথ অনুশীলন মহড়া

মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘আজকের পত্রিকা’র ওয়েবসাইটে গত ১৭ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ৭ দিনব্যাপী ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ যৌথ মহড়া চলমান। এই যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকে। এছাড়াও, আরো একাধিক গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর ওয়েবসাইটে গত ১৪ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়, “সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নির্দেশনা ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ০৭ (সাত) দিনব্যাপী ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ শীর্ষক যৌথ মহড়া ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (রবিবার) তারিখ হতে শুরু হয়েছে।..

‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ মূলত মেডিভ্যাক (উদ্ধার অভিযান) সমন্বয়, বিমান রক্ষণাবেক্ষণ ও বৈমানিক কার্যক্রম, প্যারাসুট ও লিটার রিগিং, রোটারি-উইং হোইস্ট অপারেশন, সামুদ্রিক ও বন্যা মোকাবিলা কার্যক্রম, কমব্যাট রাবার রেইডিং ক্রাফট (CRRC), জঙ্গল সারভাইভাল ও দুর্ঘটনাস্থল ব্যবস্থাপনা, মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ প্রতিরোধ (HA/DR) এর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরণের অনুশীলন করা হবে। এই মহড়ায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান, একটি এম আই-১৭ হেলিকপ্টার এবং প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের দুইটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান অংশগ্রহণ করছে। অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩ এ বিমান বাহিনীর মোট ১৫০ জন সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের ৯২ জন সদস্য অংশ নিবেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদস্যগণ উক্ত মহড়ায় অংশগ্রহণ করবে। এই মহড়া দুই দেশের বিমান বাহিনীর পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়, আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সহযোগিতা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও বিমানবাহিনী, চিকিৎসা, প্রকৌশল ও লজিস্টিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে স্থানীয় জনগণকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস এবং দুই দেশের বিমান বাহিনীর মধ্যকার বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে।”

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ফেসবুক পেজেও গত ১৪ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি পোস্ট থেকেও একইরকম তথ্য জানা যায়।

এছাড়াও, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পেজেও এ বিষয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত পোস্টে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যৌথভাবে চট্টগ্রামে মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি মহড়া প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল ২০২৫ আয়োজন করেছে। এই সহযোগিতা একটি আরও নিরাপদ ও সুরক্ষিত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের অভিন্ন প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।”

বাংলাদেশে মার্কিন বাহিনীর এরূপ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নতুন কিছু নয়

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও প্যাসিফিক এয়ারফোর্সের এরূপ যৌথ অনুশীলন মহড়া এর আগেও নানাসময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুসন্ধানে আইএসপিআর এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি বিবৃতি পাওয়া যায়। বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ব্যবস্থাপনায়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ১০ দিনব্যাপী ‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ-২০২৪’ শীর্ষক যৌথ মহড়াটি ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, বুধবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে সমাপ্ত হয়েছে। ‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ-২০২৪’ এ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০জে ও একটি এএন-৩২ পরিবহন বিমান এবং প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের দুইটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২৫০ জন সদস্য এবং ইউএস প্যাসিফিক এয়ারফোর্স এর ৭৭ জন সদস্য অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১২ জন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩০ জন সদস্য এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৪০ জন প্যারাট্রুপার অংশগ্রহণ করেন।

‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ’- এ আপদকালীন এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পরিবহন বিমানগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরণের অনুশীলন পরিচালনা করা হয়। এই যৌথ অনুশীলনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের মধ্যে আন্তঃসক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ বিনিময়, পরিবহন বিমানের উন্নত রক্ষণাবেক্ষণের বিভিন্ন কার্য পদ্ধতি, প্রশিক্ষণকালীন ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতির কার্য উপযোগিতা মূল্যায়নসহ উন্নত ব্যবহার এবং ভবিষ্যতে এই কার্যক্রমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যে সকল যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে তা নির্ণয় সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়। উভয় দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ-২০২৪’ মহড়াটি উভয় দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে দূর্যোগ মোকাবেলার সামর্থ বৃদ্ধির পাশাপাশি পারস্পরিক সমঝোতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে। এছাড়াও ইহা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করবে।”

এছাড়াও, আইএসপিআর এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আরেকটি বিবৃতি পাওয়া যায়। বিবৃতিতে বলা হয়, “সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নির্দেশনা ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ০৬ দিনব্যাপী ‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ-২০২২’ শীর্ষক যৌথ অনুশীলন ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (শুক্রবার) তারিখে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে সমাপ্ত হয়েছে।.. ‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ’- এ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান, একটি এএন-৩২ পরিবহন বিমান এবং প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের দুইটি সি-১৩০জে পরিবহণ বিমান, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২০০ জন সদস্য এবং ইউএস প্যাসিফিক এয়ারফোর্স এর ৮০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ব্রিগেড এর ৫৫ জন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১২ জন প্যারাট্রুপার অংশগ্রহণ করেন।”

এছাড়াও, আইএসপিআর এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আরেকটি বিবৃতি পাওয়া যায়। বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ-২০২০’ শীর্ষক যৌথ অনুশীলন সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০) সিলেটের পানিছড়ায় অনুষ্ঠিত হয়।

আজকের অনুশীলনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১টি সি-১৩০ বিমান এবং মার্কিন বিমান বাহিনীর ২টি সি-১৩০ বিমান অংশগ্রহণ করে। সিলেটের পানিছড়ায় সেনা ও নৌ বাহিনীর মোট ৪৭ জন প্যারাকমান্ডো প্যারাজাম্পিং এ অংশ নেয়। ‘এক্সারসাইজ কোপ সাউথ-২০২০’ এ মূলত আপদকালীন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পরিবহণ বিমানগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরণের অনুশীলন করা হয়।”

ফলে এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মার্কিন বিমান বাহিনীর বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাথে যৌথ অনুশীলন নতুন কোনো ঘটনা নয়। গত কয়েক বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন শহরে এ ধরণের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত চলমান প্রশিক্ষণটিও সেই ধারাবাহিক সহযোগিতার অংশ হিসেবেই প্রতীয়মান হয়। এসব প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো দুই দেশের বিমান বাহিনীর পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়, আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সহযোগিতা জোরদার করা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর সদস্যরা কি চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু’র গেস্ট বুকে রেজিস্ট্রেশন করা ছাড়াই হোটেলে উঠেছেন?

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর উক্ত সদস্যরা চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু তে রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি ছাড়া রুম বুকিং নিয়েছেন কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি বাংলা’র ওয়েবসাইটে গত ১৭ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তিকে এমন অভিযোগ করতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ওই সদস্যরা হোটেলের গেস্ট বুকে রেজিস্ট্রেশন করা ছাড়াই সেখানে উঠেছেন।

কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, এমন অভিযোগ সত্য নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোটেল কর্তৃপক্ষের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ” ইউএসের একটা গ্রুপ এসেছে এখানে। অ্যারাউন্ড ওয়ান হানড্রেড(প্রায় একশত)।”

তিনি জানান, অন্যান্য অতিথিদের যেভাবে হোটেলে পাসপোর্ট, ভিসা কপি দিয়ে উঠতে হয় ঠিক সেভাবেই তাদের বেলায়ও সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। কিন্তু তারা যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারফোর্স সদস্য কি না তা তিনি নিশ্চিত নন বলে উল্লেখ করেন। তবে তারা সামরিক বাহিনীর বলে অনুমান করেন এই কর্মকর্তা।

“অন্য আট -দশটা গেস্টের সাথে যে প্রসেস সেই প্রসেস ফলো করেই তারা আমাদের হোটেলে স্টে করছেন। রেডিসনের মতো একটা চেইন হোটেলের প্রটোকল প্রত্যেকটা গেস্টের জন্য সমান। যে কোন গেস্ট এখানে আসলে তার পাসপোর্ট, ভিসার কপি দিয়েই ঢুকতে হয় ” বলেন এই কর্মকর্তা। তারা সব ধরনের ডকুমেন্ট হোটেল কর্তৃপক্ষকে দিয়েই ওই হোটেলে থাকছেন বলে জানান তিনি।”

সুতরাং, চট্টগ্রামে মার্কিন বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাথে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের ঘটনাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ভিডিওগুলোর সাথে নানা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে তা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img