শুক্রবার, মে 23, 2025

হাসপাতালে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বৃদ্ধের ছবি দাবিতে বানোয়াট গল্প প্রচার 

সম্প্রতি ‘যে নার্স এই ছবিটি তুলেছেন তিনি বলেছেন যে, বয়স্ক ভদ্রলোকটি হাসপাতালে ভর্তি হবার 3 দিন পরও পরিবারের তরফ থেকে একবারের জন্যও কেউ এসে উনার খোঁজ খবর নেয়নি, কিন্তু একটি কবুতর গত ২ দিন ধরে রোজ একবার এসে উনার শরীরের উপর বসে আবার চলে যেতো! পরবর্তী কালে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, এই হাসপাতালের পাশের এক পার্কে বসে রোজ সকালবেলা উনি এই কবুতরটাকে কিছু খাবার খেতে দিতেন ! ভালো কাজ করুন,ভালো কাজের ফল দুনিয়াতে ও পাবেন, আবার আখিরাতে ও পাবেন..! আল্লাহ সবাইকে ভালো কাজ করার জন্য তোফিক দান করুক’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে ৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবি কোন হাসপাতালের নার্সের তোলা নয় বরং, একজন গ্রিক ফটোগ্রাফারের তোলা তার বাবার ছবি। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ছবি শেয়ারিং প্লাটফর্ম ‘Flickr’ এ ‘Ioannis Protonotarios’ নামক একজন গ্রিক ফটোগ্রাফারের ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর প্রচারিত একটি ছবি পাওয়া যায়। উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। ছবিটির বিস্তারিত অংশে দেখা যায়, ছবিটি সে বছরের ১৯ অক্টোবর ‘Sony Ericsson LT26i’ ডিভাইস থেকে তোলা এবং ছবিটির তোলার স্থান গ্রিসের এথেন্স শহরে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত বিষয়ে ‘AFP Fact Check’ এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে আলোচিত ফটোগ্রাফার ‘Ioannis Protonotarios’ এর একটি বক্তব্য পাওয়া যায়। 

সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি ভেতরে উড়ে আসা একটি পাখির ছবি তুলেছি। আমি ঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি ছিলাম, এর বেশি কিছু নয়। রোগী এ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, পরিদর্শনের পুরো সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। আমি ঘরে খুব বেশি সময় থাকিনি, আমার বাবাকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করার মাত্র কয়েক ঘন্টা আগের ছবিটি। আমার বাবা ঠিক এই দিনটিতেই ছিলেন… জানালা খোলা ছিল, একটি পাখি উড়ে এসে রোগীর উপর বসেছিল, গল্পের শেষ। ‘

সুতরাং, হাসপাতালে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বৃদ্ধের ছবি দাবিতে প্রচারিত গল্পটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img