বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচারের প্রবণতা বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচিত একটি বিষয়। তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক স্বীকৃত বাংলাদেশের অন্যতম তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ‘রিউমর স্ক্যানার’ও প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকেই বাংলাদেশের এবং বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) মোট ১৭৯ টি বিষয়ে দেশের ১৭৬ টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বমোট ১৪২৭ টি প্রতিবেদনে থাকা ভুল (তথ্য, ছবি, ভিডিও) শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
এবার ২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসের (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত সময়ের মধ্যে মোট ১১৮ টি বিষয়ে দেশের ২০৫ টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বমোট ১৫৫১ টি প্রতিবেদনে থাকা ভুল (তথ্য, ছবি, ভিডিও) শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। উল্লিখিত ১১৮ টি ঘটনায় ৫৭ টি মিথ্যা, ৬০ টি বিভ্রান্তিকর এবং ০১ টি বিকৃত তথ্যকে সত্য তথ্য হিসেবে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এই ব্যানারটি ডাউনলোড করুন এখানে। পুরো তালিকা দেখুন এখানে।
ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যমের বিকাশের ফলে ভুল তথ্যের প্রচার সহজ হয়ে উঠেছে। ফলশ্রুতিতে গণমাধ্যমগুলোতেও ভুল সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত। তথ্য যাচাইয়ে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়া, দ্রুত সংবাদ প্রকাশের প্রবণতাসহ নানান কারণে এই ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে লক্ষণীয়। এটি যেমন গণমাধ্যমের নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে, তেমনি মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি করছে। গণমাধ্যমে ভুল তথ্যের প্রচার গণমাধ্যমের ওপর পাঠক ও দর্শকের আস্থাকেও দুর্বল করছে। এজন্য ভুল তথ্য প্রচার কমিয়ে আনতে তথ্য যাচাই প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রযুক্তির অগ্রগতি যেমন ভুল তথ্য প্রচার করাকে আরও সহজ করে তুলেছে, তেমনি তথ্য যাচাই করার প্রক্রিয়াও আরও সহজতর হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার টিম বিশ্বাস করে, দর্শক ও পাঠকের কাছে যাচাই সাপেক্ষে সঠিক তথ্য তুলে ধরার মাধ্যমে গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ পরিবেশনের প্রবণতা কমিয়ে আনা এবং মানুষের নিকট আস্থার জায়গা হিসেবে গণমাধ্যমের সেই অবস্থান বজায় রাখা সম্ভব।