সম্প্রতি “আমার নাম হাফেজা তানিয়া আক্তার তন্নী।আমরা দুই বোন। আমার ছোট বোনের হার্টের একটি ভাল্প নষ্ট হয়ে গেছে। ডাক্তার বলছেন জরুরী অপারেশন করাতে না পারলে ওকে বাঁচানো যাবে না।” শীর্ষক শিরোনামে কিছু ছবি সংযুক্ত করে ফাতেমা নামের এক মেয়ের জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। এবং আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্ট
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রচারিত ছবিগুলো ফাতেমা নামের কোনো নারীর নয় বরং ছবিগুলো ৭ বছর পূর্বে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কেয়া খাতুন নামের এক নারীর।
মূলত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী পারভেজ খান ও রাজবাড়ী সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী কেয়া খাতুন ২০১৫ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কয়েকমাস পরেই কেয়া খাতুনের শরীরে ব্লাড ক্যান্সারে শনাক্ত হয়। পরবর্তীতে তাকে ২০১৫ সালের ৮ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ক্যান্সার আক্রান্ত কেয়ার চিকিৎসা জন্য প্রায় ৩০-৪০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন ছিল যা সেসময় সদ্য মাস্টার্স সম্পন্ন করা স্বামী পারভেজ খানের পক্ষে এককভাবে জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছিলো না। পারভেজ খানের ঐ প্রতিকূল সময়ে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রজ ও অনুজরা তার পাশে দাঁড়ান।
২০১৫ সালের ২৫ জুন ফারাবি হাফিজ নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডি হতে কেয়া খাতুনের চিকিৎসার জন্য টাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে মানবিক সাহায্যের আবেদন জানিয়ে কেয়ার স্বামী পারভেজের বিকাশ নাম্বারসহ একটি পোস্ট করেন। এরপরই কেয়া খাতুনের জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদনের পোস্টটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং সে-সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৎকালীন উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনও কেয়ার জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন চেয়ে তার ফেসবুক পেজ হতে একটি পোস্ট করেন।
সর্বশেষ, ঐ বছরের জুলাই মাসের ২২ তারিখে ফারাবি হাফিজের দেয়া এক ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায় কেয়া খাতুনের চিকিৎসার জন্য প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা সংগ্রহ হয়েছিলো।
তবে, সাম্প্রতিক সময়ে কেয়া খাতুনের ই একটি ছবি ব্যবহার করে কথিত ফাতেমার চিকিৎসার জন্য মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে কথিত ফাতেমার নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ভিন্ন ভিন্ন ফেসবুক পোস্টগুলোতে উল্লিখিত বিকাশ, রকেট ও উপায় নাম্বারে (01708349397) একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পূর্বেও একই ছবিগুলো ব্যবহার করে ফাতেমা দাবিতে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তখনও বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।