জুনাইদ আহমেদ পলকের কারামুক্তির গুজব

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হয়ে যায়। সরকারের পতনের পর মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য আত্মগোপনে চলে গেছেন, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরই মধ্যে গত ১৪ই আগস্ট সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গ্রেপ্তার হন। এরই প্রেক্ষিতে জুনাইদ আহমেদ পলক মুক্তি পেয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ২১ হাজার ৮ শত বার ভিডিওটি দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে এক হাজার ৯ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ২ শত ৪৬ বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জুনাইদ আহমেদ পলক মুক্তি পাননি বরং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। ভিডিওটির একটি দৃশ্যে জাতীয় দৈনিক কালবেলার লোগো লক্ষ্য করা যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত সূত্রের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক কালবেলার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ নভেম্বর “হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন আনিসুল ও পলক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

উভয় ভিডিওতে জুনাইদ আহমেদ পলককে পুলিশদের সাথে সামনের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় একই ধরনের অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায়।

অধিকতর অনুসন্ধানে অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে গত ১৮ নভেম্বর “দুই হাত তুলে দোয়া চাইলেন পলক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সাবেক ৯ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিবকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইদিনে ট্রাইব্যুনাল থেকে একে একে ১৩ জনকে বের করে পুলিশের প্রিজনভ্যানের দিকে নেওয়ার সময় পলক সাংবাদিকদের সামনে দুই হাত তুলে দোয়া চান।

এছাড়া, জুনাইদ আহমেদ পলক মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, কারাগারে পাঠানোর ভিডিও জুনাইদ আহমেদ পলক মুক্তি পাওয়ার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img