সম্প্রতি “চিড়িয়াখানায় আনা ছাগল খেয়ে ফেললেন কর্মকর্তারা” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কর্মকর্তাদের দ্বারা চিড়িয়াখানার ছাগল খেয়ে ফেলার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি মেক্সিকোর এক চিড়িয়াখানায় ঘটেছে।
ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টগুলোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, দেশীয় সংবাদমাধ্যম ভোরের কাগজ, জাগোনিউজ২৪, চ্যানেল২৪ সহ একাধিক গণমাধ্যমে “চিড়িয়াখানার ছাগল খেয়ে ফেললেন পরিচালক!” (কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম পরিচালকের স্থলে লিখেছে, কর্মকর্তারা) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনগুলোর বিস্তারিত অংশে এটি মেক্সিকোর ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম ‘DBC NEWS’ এর ফেসবুকে পেজে এ বিষয়ে প্রকাশিত পোস্টে “চিড়িয়াখানার বিশেষ জাতের ছাগল খেয়ে ফেললেন কর্মকর্তারা” শীর্ষক শিরোনাম থাকলেও মূল প্রতিবেদনে “মেক্সিকোতে চিড়িয়াখানার জন্য আনা বিশেষ জাতের ছাগল খেয়ে ফেললেন কর্মকর্তারা” শীর্ষক শিরোনাম ব্যবহার করা হয়েছে।
বিভ্রান্তির নমুনা
আলোচিত বিষয়ে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত খবর পোস্ট করা হলে বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী বিষয়টি যথাযথ যাচাই না করে শুধুমাত্র শিরোনামটি কপি-পেস্ট করে ফেসবুকে প্রচার করছেন। ফলে ঘটনাটি মেক্সিকোর হলেও মেক্সিকো শব্দটি উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ঘটনা ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকেই ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্ত হয়ে দেশের সমালোচনা করছেন।
মো: জুয়েল রানা নামে জনৈক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এই এই দেশেই সম্ভব।”
Amanullah Aman নামে একজন লিখেছেন, “অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটা বাংলাদেশ।

কী ঘটেছে মেক্সিকোতে?
মেক্সিকোর গুয়েরো রাজ্যের জুচিলপান চিড়িয়াখানার সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে কিছু পিগমি ছাগলের (বিশেষ প্রজাতির ছোট আকৃতির ছাগল) মাংস রান্না করে খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গত ৩১ জানুয়ারী গুয়েরোর পরিবেশ বিভাগের বন্য প্রাণী-বিষয়ক পরিচালক ফার্নান্দো রুইজ এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তুলেছেন।
রুইজ অভিযোগ করেন, চিড়িয়াখানায় পাঁচটি নারী ও পাঁচটি পুরুষ ছাগল ছিল। এর মধ্য থেকে চিড়িয়াখানার সাবেক পরিচালক জস রাব এন নাভা নোরিয়েগার উদ্যোগে নববর্ষের আগের দিন নৈশভোজে চারটি পুরুষ ছাগল রান্না করে খাওয়ানো হয়।
তবে নাভা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, চিড়িয়াখানার বাজেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য এমন ‘নোংরা খেলা’ চলছে।
মূলত, মেক্সিকোর গুয়েরো রাজ্যের জুচিলপান চিড়িয়াখানার সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে কিছু পিগমি ছাগলের মাংস রান্না করে খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমে ঘটনাস্থল অর্থাৎ মেক্সিকোর নাম না উল্লেখ করে “চিড়িয়াখানার ছাগল খেয়ে ফেললেন কর্মকর্তারা” শীর্ষক শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ করা হলে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিষয়টি যথাযথ যাচাই না করে শুধুমাত্র শিরোনামটি কপি-পেস্ট করে প্রচার করছেন। ফলে ঘটনাটি মেক্সিকোর হলেও মেক্সিকো শব্দটি উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
সুতরাং, মেক্সিকোতে কর্মকর্তাদের দ্বারা চিড়িয়াখানার ছাগল খেয়ে ফেলার খবরকে বাংলাদেশে ‘মেক্সিকো’ শব্দ উল্লেখ না করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।