চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ঘরবাড়ি হারিয়ে এক ইসরায়েলি তরুণী কান্না করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ইউটিউবে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে।
ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ঘরবাড়ি হারিয়ে ইসরায়েলি তরুণীর কান্নার দৃশ্য নয়; বরং এটি সাবেক সিরীয় সাঁতারু ইউসরা মার্দিনির এক দশক পর নিজ এলাকায় ফেরার আবেগপ্রবণ মুহূর্তের ভিডিও।
বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে ‘Yusra Mardini’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ১৪ মার্চ পোস্ট করা একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা, “আমি ঘরবাড়িতে, কিন্তু আমার ঘরবাড়ি আর দাঁড়িয়ে নেই। আমার মনের কথা তোমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই, কারণ এটা শুধু আমার গল্প নয়, এই মুহূর্তে অনেক সিরিয়ানই একই রকম হারানো, কষ্ট আর মানসিক আঘাতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এটাই ছিল সেই ঘরবাড়ি, যেখানে আমি বড় হয়েছি, স্বপ্ন দেখেছিলাম নিজেকে একজন সেরা নারী হিসেবে গড়ে তোলার, আর বাবার সঙ্গে পাড়ায় দাঁড়িয়ে গাড়ি ধুয়েছিলাম। হ্যাঁ, আমার ঘরবাড়ি এখন শুধু ধ্বংসস্তূপ, কিন্তু সেই স্মৃতিগুলো সবসময় আমাকে এগিয়ে যেতে শক্তি দেবে। আলহামদুলিল্লাহ।”
পবর্তীতে, মিডেল ইস্ট আইয়ের ইউটিউব চ্যানেলেও গত ১৪ মার্চ প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর বর্ণনায় বলা হয়, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছাদূত ও সাবেক সিরিয়ার সাঁতারু ইউসরা মার্দিনি এক দশক পর নিজ দেশে ফিরে দেখেন, দারায়ার তার এলাকা প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, এমনকি তার বসবাসের ভবনটিও।

সৌদি আরব ভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়াতে গত ২৮ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অলিম্পিক সাঁতারু ও ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছাদূত ইউসরা মার্দিনি ১৭ বছর বয়সে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে পালিয়ে যান। এক দশক পর প্রথমবার দেশে ফিরে তিনি পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখতে চান। ২৭ বছর বয়সী এই সাঁতারুর জীবন নিয়ে নেটফ্লিক্সে নির্মিত ‘দ্য সুইমারস’ চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে, কীভাবে ইউসরা ও তার বোন দামেস্ক থেকে পালিয়ে এজিয়ান সাগর সাঁতরে পার হন।
সুতরাং, সিরিয়ার সাবেক সাঁতারু ইউসরা মার্দিনির স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আবেগপ্রবণ ভিডিওকে ইসরায়েলি নারীর কান্নার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Yusra Mardini: Instagram Post
- Middle East Eye: Syrian Swimmer returns home after 10 years to find her house destroyed
- Al Arabiya: ‘I left as a child’: Yusra Mardini returns to Syria after a decade of fleeing war