১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার যুবলীগ নেতার বাড়িতে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগের দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিএনপি, জামায়াতের মব সন্ত্রাসীরা। তার অপরাধ সে গতকাল শোক দিবস পালন করেছিল। সেই এলাকার আরো অনেক নেতাকর্মী বাড়ি ছাড়া হয়েছে, শোক দিবস পালন করার কারণে!’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৫ আগস্টে ‘শোক দিবস’ পালন করায় সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লায় কোনো যুবলীগ নেতার বাড়িতে বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বিএনপির এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তের বাড়িতে জনতার আগুন দেওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ এর ময়মনসিংহের স্থানীয় সাংবাদিক সাব্বির রায়হান আকন্দের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, গয়েশপুর হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারকে বাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে অভিযুক্ত রুবেলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় জনতা। সেই সময়কার দৃশ্য এটি। 

অনলাইন গণমাধ্যম বাংলানিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি “গফরগাঁওয়ে বিএনপি নেতা হত্যা, অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে আগুন” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে গফরগাঁও উপজেলার পাইথল ইউনিয়নের গয়েশপুর বাজারে প্রকাশ্যে বিএনপি নেতা হোমিও চিকিৎসক মো. হারুন অর রশিদকে (৪৮) কুপিয়ে হত্যা করে রুবেল মিয়া। এরপর বিকেল ৩টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত রুবেলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। নিহত মো. হারুন অর রশিদ নিহত হোমিও চিকিৎসক মো. হারুন অর রশিদ উপজেলার পাইথল ইউনিয়নের গোয়ালবর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে। তিনি পাইথল ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করেছিলেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা ও পাগলা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আকতারুজ্জামান বাচ্চু।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য কালের কণ্ঠের সাংবাদিক সাব্বির রায়হান আকন্দের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। সাব্বির রায়হান জানান, ‘প্রচারিত দাবিটি ভুয়া। ঘটনাটি গত বছরের ১৫ জানুয়ারির। হোমিও চিকিৎসক মো. হারুন অর রশিদকে প্রকাশ্যে হত্যার প্রতিবাদে খুনির বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য এটি। তিনি বিএনপির নেতা ছিলেন।’

সুতরাং, গত বছর ময়মনসিংহে হত্যায় অভিযুক্ত রুবেল মিয়ার বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন দেওয়ার ভিডিওকে ১৫ আগস্ট ‘শোক দিবস’ পালন করায় বিএনপি-জামায়াত কুমিল্লায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img