এটি শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে হোয়াইট হাউজের কোনো বক্তব্যের ভিডিও নয়

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত কিছু পোস্টে একটি ভিডিও যুক্ত করে ক্যাপশনে প্রচার করা হচ্ছে, “জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্রের সত্যতা খুঁজে পায়নি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। আজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউজ। আইন অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পদত্যাগ করেননি। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১১ টা ঘটিকায় অনুষ্ঠানিক ভাবে আমেরিকার হোয়াইট হাউজ থেকে এই তথ্য জানানো হবে।” 

উক্ত দাবিতে আলোচিত ভিডিওটি যুক্ত করে প্রচারিত ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বক্তব্য দেওয়ার ভাইরাল দৃশ্যটি যুক্তরাষ্ট্রে শেখ হাসিনার পদত্যাগ বিষয়ক কোনো বক্তব্যের ভিডিও নয় বরং ভাইরাল ভিডিওতে যাকে বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে তিনি অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন এবং বাংলাদেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সহিংসতা এবং দুর্দশার বিষয়ে দেওয়া বক্তব্যটি তিনি অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ফেডারেশন চেম্বারে দেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে ফেডারেশন চেম্বার সেকশনে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একই ভিডিওর পূর্ণ ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

ভিডিওটির একটি অংশে অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস বোয়েনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। উক্ত অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। 

তার বক্তব্যে ক্রিস বোয়েন বাংলাদেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সহিংসতা এবং দুর্দশার কথা উল্লেখ করেন। তবে তার পুরো বক্তব্য বিশ্লেষণ করে শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তাকে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি৷ 

ক্রিস বোয়েনের এই বক্তব্যের ভিডিওকে প্রচার করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে শেখ হাসিনার বিষয়ে বক্তব্যের দাবিতে। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে মূল ঘটনাই (অস্ট্রেলিয়ায় সংখ্যালঘুদের বিষয়ে বক্তব্য) প্রচার করা হয়েছে গত ১১ সেপ্টেম্বর।

যা পরবর্তীতে ভুল ক্যাপশনে ভাইরাল হয় একাধিক ফেসবুক পোস্ট। দাবি করা হয়, “জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্রের সত্যতা খুঁজে পায়নি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। আজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউজ আইন অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পদত্যাগ করেমনি। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১১ টা ঘটিকায় অনুষ্ঠানিক ভাবে আমেরিকার হোয়াইট হাউজ থেকে এই তথ্য জানানো হবে।” 

যাচাই করে দেখা যায়, এমন কিছুই ঘটেনি। হোয়াইট হাউজ বা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এই দাবিতে কোনো তথ্য প্রকাশ বা বক্তব্য দেয়নি। 

সুতরাং, অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী ক্রিস বোয়েনের ভিন্ন প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্যকে যুক্তরাষ্ট্রে শেখ হাসিনার পদত্যাগ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজের বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img