ছোটদের বইয়ে বর্ণ দিয়ে বাক্যগঠন সম্বলিত পাতার এই ছবিটি সম্পাদিত

গেল ফেব্রুয়ারি থেকে ছোটদের একটি বইয়ের শব্দ দিয়ে বাক্য গঠন সম্বলিত একটি পাতার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত পাতায় দেখা যাচ্ছে, তিনটি বর্ণ দিয়ে বাক্য গঠন করা হয়েছে। গ-তে গনিমতে মুমিন খুশি, ঙ-তে মূর্তি ভেঙে করবো ভূষি এবং ছ-তে ছতর খুলো ওগো দাসী।

এই ছবি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতেও বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই ছবিটি পোস্ট করে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। 

বর্ণ

উক্ত ছবি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ছবি ব্যবহার করে ভারতের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই ছবি ব্যবহার করে এক্সেও (সাবেক টুইটার) সমালোচনা নজরে এসেছে রিউমর স্ক্যানারের৷ এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গ-তে গনিমতে মুমিন খুশি, ঙ-তে মূর্তি ভেঙে করবো ভূষি এবং ছ-তে ছতর খুলো ওগো দাসী শীর্ষক বাক্যগঠন সম্বলিত ছবিটি আসল নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত পাতার ছবি এডিট করে উক্ত বাক্যগঠনগুলো বসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইটে গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একই পাতার ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবিটির সাথে আলোচিত দাবির ছবিটির তিন বর্ণের বাক্যগঠনে অমিল পরিলক্ষিত হয়। দেশ রূপান্তরের প্রতিবেদনের ছবিতে থাকা বর্ণগুলোর বাক্যগঠন এরকম, গ-তে গান বাজনা ভালো নয়, ঙ-তে রঙ তামাশার সময় নাই, ছ-তে ছবি আঁকা ভালো নয়। 

Screenshot: Desh Rupantor 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ছবিটি শেয়ার করেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করা হচ্ছে। 

অর্থাৎ, আলোচিত পাতার মূল ছবিটি এডিট করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মুবিন নামে এক ব্যক্তি মূল পাতাটি সম্পাদনা করে আলোচিত দাবি সম্বলিত পাতাটি প্রথম ফেসবুকে পোস্ট করেন। 

Screenshot: Facebook 

জনাব মুবিন উক্ত পোস্টের কমেন্ট সেকশনে জানান, ফোনের এডিটর অ্যাপ দিয়ে তিনি এই ছবি সম্পাদনা করেছেন। 

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে, আলোচিত পাতাটি সম্পাদনার মাধ্যমে বাক্যগঠনগুলো বদলে দেওয়া হয়েছে। 

তাছাড়া, একই ব্যক্তি সম্প্রতি বাংলাদেশের কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজোর মোড়কে “তিনি ‘মোজো’ কে করেছেন হালাল এবং ‘কোক’ কে করেছেন হারাম” শীর্ষক লেখা যুক্ত করেও প্রচার করেছেন। এ সংক্রান্ত রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পড়ুন এখানে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম আলোচিত পাতাটি কোন বইয়ের তা নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে উক্ত পাতার মূল ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এরপরই জনাব মুবিন ফেসবুক থেকে উক্ত ছবি সংগ্রহ করে সম্পাদনা করেন৷ 

মূলত, গেল ফেব্রুয়ারি থেকে ছোটদের একটি বইয়ের শব্দ দিয়ে বাক্য গঠন সম্বলিত একটি পাতায় তিনটি বর্ণ দিয়ে বাক্য গঠনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বাক্যগঠনগুলো এমন, গ-তে গনিমতে মুমিন খুশি, ঙ-তে মূর্তি ভেঙে করবো ভূষি এবং ছ-তে ছতর খুলো ওগো দাসী। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত বাক্যগঠন সম্বলিত ছবিটি আসল নয়। মুবিন নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত পাতার ছবি এডিট করে উক্ত বাক্যগঠনগুলো বসিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, মূল পাতার ছবিতে লেখা রয়েছে, গ-তে গান বাজনা ভালো নয়, ঙ-তে রঙ তামাশার সময় নাই, ছ-তে ছবি আঁকা ভালো নয়।

সুতরাং, গ-তে গনিমতে মুমিন খুশি, ঙ-তে মূর্তি ভেঙে করবো ভূষি এবং ছ-তে ছতর খুলো ওগো দাসী শীর্ষক বাক্যগঠন সম্বলিত একটি বইয়ের পাতার ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img