সম্প্রতি, ‘শিশুটির চিকিৎসার জন্য ১৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। দয়া করে কেউ এড়িয়ে যাবেন না, সাহায্য করতে না পারলেও দয়া করে পোস্টটি শেয়ার করুন যাতে কোনো দানশীল ব্যক্তির নজরে আসে।’ শীর্ষক ক্যাপশনে চারটি ছবিসহ একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিশু আবির নামে প্রচারিত ছবিটি কোনো বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং এটি ভারতের রোগাক্রান্ত এক শিশুর ছবি।
অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম ‘Ketto’ এর ওয়েবসাইটে “Rahmatullah’s brain disease has put his life at risk. Please help!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিতে প্রার্থনারত যে নারীর ছবি তার সাথে পোস্টের নারীর ছবির সাথে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, ছবিটি ভারতের রহমতুল্লাহ নামে এক শিশুর। গত ফেব্রুয়ারী মাসে অসুস্থ হয়ে পড়লে রহমতুল্লাহকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হলে তাকে হায়দ্রাবাদ নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শিশুটির মস্তিষ্কের রোগ ধরা পড়ে। ফান্ডরাইজিং ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায়, শিশুটির চিকিৎসার জন্য ১ লাখ ডলার প্রয়োজন। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৬১০ ডলার সংগ্রহ করতে অক্ষম শিশুটির পরিবার।
এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে আবির নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ফেসবুক পোস্টগুলোয় উল্লিখিত ব্যক্তিগত বিকাশ ও নগদ এবং রকেট নাম্বারে যথাক্রমে (01820859521, 01820859521, 01820859521-5) যোগাযোগ করা হলে উক্ত দাবির বিষয়েকোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভারতীয় রোগাক্রান্ত শিশুর ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে বাংলাদেশের কথিত রোগাক্রান্ত শিশু আবিরের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রিউমর স্ক্যানার টিম পূর্বেও বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আর্থিক সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোকে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সুতরাং,বাংলাদেশের কথিত রেগাক্রান্ত শিশু আবিরের চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক এবং মিথ্যা।