গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে গত ৭ এপ্রিল দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাটাসহ কয়েকটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে এবং বাটার শোরুমে লুটপাটের দৃশ্য দাবিতে বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘মহানগর পশ্চিম শাখা শিবিরের স্কিল ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক, হাজ্জজ বিন রাহাত! চোর চোর জুতা চোর’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি ছবিকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখার এক নেতার জুতা চুরির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে Raju Norul নামক ফেসবুক প্রোফাইলে গত ০৭ এপ্রিল রাতে ওইদিন বাটার শোরুমে লুটপাটের ঘটনাকে ঘিরে প্রচারিত পোস্টের কমেন্ট বক্সে পোস্টকারী ব্যক্তি কর্তৃক প্রকাশিত আলোচিত ছবিটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। আমাদের অনুসন্ধানে এটিই উক্ত ছবিটির সম্ভাব্য প্রথম প্রকাশ বলে প্রতীয়মান হয়।

ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মূল ছবির ডানপাশে দুই হাতে কিছু ফাইল বহনকারী একজন ব্যক্তিকে দেখা যায়। মূলত, ছবিটি থেকে উল্লিখিত অংশটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা কর্তন করে নিয়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
উক্ত পোস্টটির শেষে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘(ছবি: কাউকে মিডিয়া ট্রায়ালে না ফেলতে এআই জেনারেটেড ছবি ব্যবহার করলাম)’। পোস্টটির সম্পাদনার ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায়, চতুর্থবার সম্পাদনার সময় পোস্টে একটি ছবি যুক্ত করা হয়। পরবর্তী সম্পাদনায় ছবি বাদ দেওয়া হয় এবং ষষ্ঠ সম্পাদনায় পোস্টদাতা উল্লেখ করেন, ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি। তবে, পোস্টদাতা ছবিটি পোস্টের কমেন্টে যুক্ত করেছেন।
আলোচিত ছবিটি সম্পর্কে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম রাজু নরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ছবিটি তিনি নিজেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তৈরি করেছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বাস্তব ছবি ব্যবহার করে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ চালাতে চাননি বলেই প্রতীকী হিসেবে একটি এআই এর সহায়তায় তৈরি ছবি পোস্টে যুক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, আলোচিত এআই ছবিটি ভাইরাল হলে রিউমর স্ক্যানার এ বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি ছবি থেকে ক্রপ করা হয়েছে।
সুতরাং, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখার এক নেতার জুতা চুরির দৃশ্য দাবিতে একটি ভাইরাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি ছবির অংশ ব্যবহার করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র
- Raju Norul – Facebook Post
- Statement of Raju Norul