সম্প্রতি,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ অনুষ্ঠিত হবে। আরো দাবি করা হচ্ছে যে একই দিনে হবে গণভোট এবং তফসিল ঘোষণা হবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত পোস্টগুলোতে তফসিল সংক্রান্ত দাবিটি সঠিক হলেও গণভোট ও নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, এখনও নির্বাচন ও গণভোটের সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ অক্টোবরের এক সংবাদ থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে এবং ভোটগ্রহণ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে। ৩১ অক্টোবর পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থাৎ, তফসিল সংক্রান্ত দাবিটি সত্য।
জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ০৪ নভেম্বরের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে হবে। গত কয়েকদিনের আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক আলোচনার ভিত্তিতে সরকার এ ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ০৩ নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তবে আরেক জাতীয় দৈনিক সমকালের একই সভা সংক্রান্ত সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে বিরোধে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সমঝোতার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোকে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক সপ্তাহের মধ্যে না পারলে সরকার সনদ ও গণভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
দুজন উপদেষ্টা সমকালকে বলেছেন, গত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে প্রায় সব উপদেষ্টা একই দিনে নির্বাচন এবং গণভোট আয়োজনে মত দিলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া হয়েছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা বৃহস্পতিবার থেকে চার দিন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির সঙ্গে কথা বললেও সমঝোতা হয়নি। আগামী নির্বাচন থেকে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) প্রত্যাহারে বিএনপিকে রাজি করানো যায়নি। উচ্চকক্ষে পিআরের দাবি পূরণ হলে নিম্নকক্ষে পিআরের দাবি জামায়াত ছাড়তে রাজি হলেও ঘোষণা দিতে রাজি হয়নি। তাই সোমবারের বৈঠকে সপ্তাহখানেক সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাও এতে একমত।
অর্থাৎ, গণভোট কবে হবে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে জাতীয় দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের গত ২৯ অক্টোবরের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২৯ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ০৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়৷
সুতরাং, সংসদ নির্বাচনের তারিখ, তফসিল ঘোষণা এবং গণভোট সংক্রান্ত প্রচারিত দাবিগুলো আংশিক সত্য।





