গত ০৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগে সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরই প্রেক্ষিতে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের চিঠির ছবি দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
টিকটকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ১৬ লক্ষাধিক বার ভিডিওটি দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ৩৫ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ২ হাজার ৮ শত বার শেয়ার করা হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের ছবি নয় বরং ভুয়া পদত্যাগপত্র বানিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পদত্যাগপত্রটি পর্যবেক্ষণ করে এটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ০৪.০০.০০০০.৪২১.৮৪.০০৮.১৯.২৮২ নং স্মারকে গত ১১ জানুয়ারি ২০২৪ এ শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করার তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়।
তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে গত ১০ জানুয়ারি ০৪.০০.০০০০.৪২১.৮৪.০০৪.২৪.২৫ শীর্ষক স্মারকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ০৪.০০.০০০০.৪২১.৮৪.০০৮.১৯.২৮২ নং স্মারকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায় এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টাগণ পদত্যাগ করার বিষয়ে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন।
অর্থাৎ, কথিত এই পদত্যাগপত্রে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নিয়োগের ভুয়া স্মারক নং ব্যবহার করা হয়েছে।
তাছাড়া, চিঠিটি পর্যবেক্ষণ করে আরো কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। যেমন, সরকারের কোনো পদ থেকে পদত্যাগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিসের সরকারি প্যাডের মাধ্যমে আবেদন করা হয়ে থাকে। কিন্তু আলোচিত এই চিঠিটি সাদা একটি কাগজে লেখা। এমনকি কতিপয় শব্দের বানানেও ভুল (যেমন, অব্যহতি) পরিলক্ষিত হয়েছে৷
তাছাড়া, বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এই পদত্যাগপত্রটি শেখ হাসিনার শীর্ষক কোনো প্রমাণ পায়নি রিউমর স্ক্যানার।
উল্লেখ্য, এর পূর্বেও শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দাবিতে একাধিক ভুয়া ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে।
সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত চিঠির ছবিটি ভুয়া।