জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এতে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আইনজীবী ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের মধ্যকার সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর প্রেক্ষিতে আইনজীবী সাইফুল হত্যার প্রতিবাদ ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি দাবি জানিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বিবৃতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, ‘ভারতে পলাতক স্বৈরাচার হাসিনা পুত্র জয় বলেছেন…হিন্দু উগ্র সংগঠন হলেও “ইসকন” আওয়ামীলীগের একটি ঘনিষ্ঠ অঙ্গসংগঠন। “ইসকন” কে নিষিদ্ধ করলে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিবো। বাংলাদেশ কার? শুধুমাত্র আমার নানা মুজিবের দেশ ও শুধুমাত্র আমার মা হাসিনার দেশ।’ শীর্ষক শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসকন নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য দাবিতে যমুনা টিভি এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভির লোগো ব্যবহার করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে৷
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে যমুনা টিভির লোগো রয়েছে এবং আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ নভেম্বর ২০২৪ উল্লেখ করা হয়েছে।
পরবর্তীতে উক্ত তারিখের সূত্র ধরে যমুনা টিভির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান করে এমন কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যমুনা টিভির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া, যমুনা টিভি কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। পাশাপাশি উক্ত ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে যমুনা টিভির ফটোকার্ডের ভিন্নতা রয়েছে।
অর্থাৎ, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।
সুতরাং, ইসকন নিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য দাবিতে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s Own Analysis