সম্প্রতি, ‘রাখাইন করিডোর নিয়ে বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনার কিছুই নেই। স্বৈরাচার হাসিনাকে তাড়িয়ে জনগণ আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমার যা ভালো মনে হয়েছে, তাই করেছি।’ শীর্ষক মন্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস করেছেন দাবিতে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাখাইন করিডোর নিয়ে রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস উক্ত মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, প্রথম আলোর আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডে প্রথম আলোর লোগো ও এবং তারিখ হিসেবে ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ উল্লেখ থাকার সূত্রে পত্রিকাটির ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষণে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজের ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির গ্রাফিক্যাল ডিজাইন ও ফন্টের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রথম আলোর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, এই ফটোকার্ড তারা প্রকাশ করেনি।
পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও ড. ইউনূসের উক্ত মন্তব্য সম্বলিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি৷
উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধের মধ্যে থাকা মিয়ানমারের রাখাইনে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর জন্য শর্তসাপেক্ষে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিষয়ে সরকার নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বলে সম্প্রতি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা একটি বক্তব্য দেন। পরবর্তীতে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, “আমরা এটা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে সরকার তথাকথিত ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘ অথবা অন্য কোনও সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করেনি। রাখাইন রাজ্যে যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে মানবিক সাহায্য দেয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে রাজি হবে, এটাই আমাদের অবস্থান।”
সুতরাং, ‘রাখাইন করিডোর নিয়ে বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনার কিছুই নেই। স্বৈরাচার হাসিনাকে তাড়িয়ে জনগণ আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমার যা ভালো মনে হয়েছে, তাই করেছি।- ড. ইউনূস’ শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলোর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।
তথ্যসূত্র
- Prothom Alo: Facebook Post
- Rumor Scanner’s own analysis