নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে আজান শোনেননি এবং ইসলামও গ্রহণ করেননি

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের একজন বক্তার একটি ভিডিও ক্লিপ এবং ভিডিওর বক্তব্যের সাথে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন ক্লিপ ব্যবহার করে “যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম চাঁদে আজান শুনতে পায়, মিজানুর রহমান আজহারী” শীর্ষক শিরোনাম সহ বিভিন্ন শিরোনামে দুইটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ইউটিউবে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

আজান

ভিডিওতে দাবি করা হয় “নিল আর্মস্ট্রং এর চন্দ্রাভিযানের সময়ে চাঁদের মাটিতে পা রেখে খেয়াল করে দেখে, চাঁদের এই মাথা থেকে ওই মাথা মাঝখান থেকে ফাটল রয়েছে। (এছাড়াও), চাঁদে অবস্থানকালে সে একটা মিউজিক শুনতে পেল। পরে ,আমেরিকার এক প্রেয়ার হল (মসজিদের) পাশ দিয়ে সে হেটে যাওয়ার সময় মসজিদের ভেতর থেকে আজান দেওয়া আজান শুনে সে ধরতে পারে যে এই মিউজিক-টি সে চাঁদে শুনেছে। মসজিদের মুয়াজিন নিল আর্মস্ট্রং-কে জানায় এটা হচ্ছে আজান। ” [সারাংশ] 

Screenshot: CrowdTangle

দাবি দুটি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরো একটি দাবি ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Crowdtangle

এরকম কিছু পোস্ট (ভিডিও) দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

আলোচিত দাবি দুটি (ভিডিও) বিভিন্ন বক্তাদের নামে তৈরি করা ফেক পেজ বা গ্রুপেও আপ্লোড করা হয়েছে।

Screenshot: CrowdTangle

ইন্টারনেটে দাবিগুলোর অস্তিত্ব

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যপকভাবে প্রচার করা হলেও এই দাবিগুলো বেশ আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে প্রচার হয়ে আসছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বক্তারা এই দাবিগুলো (একটি, দুটি অথবা সবগুলো) তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন এবং পরবর্তীতে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি দাবি সম্বলিত পোস্ট ছাড়াও কোনো পোস্টে দুটি দাবি উল্লেখ করা হয়েছে আবার কোনো পোস্টে সবগুলো দাবিই উল্লেখ করা হয়েছে। 

এমনকি একটি দাবি সম্বলিত ফিচার  প্রতিবেদনও (ভিডিও) খুঁজে পাওয়া যায়। প্রশ্নবোধক শিরোনামে ক্যাপশন দেওয়া হলেও প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা হয়েছে সিদ্ধান্তমুলক তথ্য হিসেবে।

Screenshot: alorroshi page

দাবি তিনটির একটি, দুইটি কিংবা একসাথে তিনটি দাবি সম্বলিত ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (ভিডিও) দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

Screenshot: youtube

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন নিচে

  • মিজানুর রহমান আজহারী এর বক্তব্য এখানে
  • দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এর বক্তব্য এখানে
  • তারেক মনোয়ার এর বক্তব্য এখানে এবং এখানে
  • আমির হামজা এর বক্তব্য এখানে 
  • আব্দুর রহমান জামী এর বক্তব্য এখানে
  • আঃ অহিদ সাহেব এর বক্তব্য এখানে
  • হাবিবুর রহমান মিসবাহ এর বক্তব্য এখানে
  • সাখাওয়াত হুসাইন এর বক্তব্য এখানে
  • আবুজার গিফারী এর বক্তব্য এখানে
  • রবিউল ইসলাম বিন ইয়াকুব এর বক্তব্য এখানে
  • এরশাদ আলি নোমানি এর বক্তব্য এখানে
  • পশ্চিমবঙ্গের একজন বক্তার বক্তব্য এখানে

দাবিসমূহ

অনুসন্ধানে নিল আর্মস্ট্রং এর চাঁদে গমন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পরবর্তীতে মোট তিন ধরণের দাবি অনলাইনে পাওয়া যায়।

  • নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে বিশাল ফাটল দেখেছেন ———--(দাবি নং ১) [এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত]
  • নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে আজান শুনেছেন ——————(দাবি নং ২)
  • নিল আর্মস্ট্রং পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন (দাবি নং ৩)

দাবিগুলো গণমাধ্যমেও

দৈনিক নয়া দিগন্ত এর অনলাইনে ২০১৫ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর ধর্ম-দর্শন ক্যাটাগরিতে “মাওলানা মুহাম্মাদ আবুল বাশার মিরাজী” এর লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই লেখাটিতেও দুটি ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

Screenshot: Nayadiganata online

কলাম বা মতামত হিসেবে লেখা হলেও পত্রিকাটি তা প্রকাশ করে সরাসরি নিউজ ইউআরএল-এ। লেখাটিতে ২ ও ৩ নং দাবি উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot: archive.org

এছাড়াও লন্ডনবিডিনিউজ২৪ পোর্টালের একটি প্রতিবেদনেও ২ ও ৩ নম্বর দাবি দুটি উপস্থাপন করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে; এ সংক্রান্ত খবর দেশীয় গণমাধ্যম প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, ইত্তেফাক প্রচার করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায় (৩ নম্বর দাবিটি)। যদিও ইন্টারনেট সহ কোনো মাধ্যমেই গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো কিংবা কপি খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। 

Screenshot: shongshoy.com

এছাড়াও একটি ব্লগ পোস্ট থেকে; ২০০৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দৈনিক যুগান্তর এর ইসলামি পাতায় আলোচিত দাবিসমূহের মধ্যে দুটি দাবি সম্বলিত “হাবিবুর রহমান সরকার” নামক একজনের লেখা প্রকাশিত হয় বলে তথ্য পাওয়া যায় (১ ও ৩ নম্বর দাবি)।

Screenshot: mukto-mona.com

পাশাপাশি, ৪ঠা মার্চ ২০০৮ সালে প্রকাশিত আরো একটি ব্লগে; যুগান্তর এর ইসলামি পাতায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যটির উল্লেখ পাওয়া যায় (১ ও ৩ নম্বর দাবিটি)।

Screenshot: somewhereinblog.net

এমনকি ইসলামি বক্তা শায়েখ সৈয়দ হাসান আল আযহারী এর একটি বক্তব্যেও তিনি জানান,”আমি যুগান্তর পত্রিকায় পড়েছি (দাবিটি)”। পাশাপাশি আরো জানান, “মিশরের একটা ম্যাগাজিনেও এটা আছে”।

Screenshot: Facebook/Bibi Morium Liza in Modinar Feriwala group 

একই তথ্য পাওয়া যায় বেশকিছু ফেসবুক পোস্ট থেকেও। তবে যুগান্তর পত্রিকার এই কপিটি-ও (প্রিন্ট) সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

দাবিগুলো বেসরকারি রেডিওতে-ও !

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একজন ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন যে তিনি দেশীয় এফ রেডিও স্টেশন “রেডিও ফূর্তি”তে ২ ও ৩ নং দাবি দুটি প্রচার হতে শুনেছেন।

Screenshot: Facebook/Alim al Razi

দাবিগুলো ইসলামিক গ্রন্থে!

ড. মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব তার সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) গ্রন্থে (নবীদের কাহিনী-৩) তিনি ১ ও ৩ নম্বর দাবিদুটি উল্লেখ করেছেন ( ১১৮ ও ১১৯ নম্বর পৃষ্ঠায়– পিডিএফ)।

Screenshot: ahlehadeethbd/ Seeratur Rasool (SM) PDF, Page 118 & 119

এই দাবিগুলোর শুরু সম্পর্কে কি জানা যায়?

১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই নিল আর্মস্ট্রং চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিলেন। পরবর্তীতে ২৪ জুলাই ১৯৬৯ এ প্রশান্ত মহাসাগরে পুনরুদ্ধার জাহাজ: ইউএসএস হর্নেট এর উপরে তারা অবতরণ করেন বা পৃথিবীতে ফিরে আসেন। 

এই দাবিগুলোর সূত্রপাতের বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা কঠিন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি এর বাংলা বিভাগের এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধর্মীয় দাবিগুলোর পাশাপাশি নিল আর্মস্ট্রং এর চন্দ্র বিজয়ের পরে পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ডালপালা ছড়াতে থাকে। নিল আর্মস্টং-কে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ১১ টি মিথ সম্পর্কে আরো জানা যাবে সিবিএস নিউজের এই প্রতিবেদন থেকে।

Screenshot: BBC Bangla

দেশীয় কমিউনিটি ব্লগসাইট “সামহোয়ারইনব্লগ”-এ ২০০৮ সালে লেখা এক ব্লগে উল্লেখ করা হয় যে এজাতীয় গুজব ১৯৮০ এর দিকে ছড়িয়ে পড়ে। 

Screenshot: somewhereinblog

অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে মিশর, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের দূতাবাসে নিল আর্মস্ট্রং এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দাবিটিকে সত্য নয় জানিয়ে এক চিঠি প্রেরণ করা হয়েছিলঅর্থাৎ, ১৯৮৩ (চাঁদে পা রাখার ১৪ বছর) এর মার্চ মাসের আগে থেকেই এই দাবিটি (নিল আর্মস্ট্রং এর মুসলিম হওয়া) ছড়িয়ে পড়েছিল।

পরবর্তীতে, একই বছরের (১৯৮৩ সালের) ৫ই মে দিল্লীতে অবস্থিত ইসলামিক সেন্টার এর প্রেসিডেন্ট ওয়াহু দুদ্দিন খান এর কাছে লেখা এক চিঠিতে নিল আর্মস্ট্রং “চাঁদে আজান শোনা এবং ইসলাম গ্রহণ করার দাবিদুটি সত্য নয়” জানিয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়

এছাড়াও, ১৯৮৩ সালের ১৪ই জুলাই আর্মস্ট্রংয়ের প্রশাসনিক সহকারী ভিভিয়ান হোয়াইট তার (আর্মস্ট্রং এর) মুসলিম হওয়া ও চাঁদে আজান শোনার বিষয়টি অস্বীকার করে এশিয়ান রিসার্চ সেন্টার ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপের সেসময়কার পরিচালক ড. ফিল পারশাল-কে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন বলে তথ্য পাওয়া যায়

অর্থাৎ, ১৯৮৩ এর মে মাসের আগে থেকেই (মুসলিম হওয়া দাবির প্রায় সমসাময়িক সময়েই) চাঁদে আজান শোনার দাবিটি-ও ছড়িয়ে পড়েছিল।

বর্ণিত তথ্য থেকে জানা যায় যে ২ ও ৩ নং দাবি দুটি ১৯৮৩ সালের মার্চ (প্রায়) মাসের আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। তবে এই তথ্য গুলোতে (১ নং দাবি) চাঁদে ফাটল দেখার বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। হতে পারে তখন পর্যন্তও নিল আর্মস্ট্রং কর্তৃক চাঁদে ফাটল দেখার দাবিটি প্রচলিত ছিলনা।

নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে ফাটল দেখেছেন; বাংলাদেশে এমন দাবি ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগে থেকেই প্রচলিত ছিল সেটা নিশ্চিত করে বলা যায়। কেননা ২০০৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি দৈনিক যুগান্তরের এক কলামেও দাবিটি উল্লেখ করা হয়েছে (ইতোমধ্যে এই প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে)।

Collage by Rumor Scanner

এছাড়াও, অনুসন্ধানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “চাঁদে ফাটল” শিরোনামে পাবলিক পোস্টের মধ্যে প্রথম দিককার (১লা জুন ২০১২ সালে) আপ্লোড করা ছবিসহ একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook/Mahamud Sohel

ফ্যাক্টচেক

নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে আজান শোনেননি, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি এবং তিনি চাঁদে ফাটল-ও দেখেননি বরং নিল আর্মস্ট্রং নিজেই চাঁদে আজান শোনা এবং ধর্মান্তরিত হওয়ার দাবিকে সত্য নয় বলে জানিয়েছিলেন। এছাড়াও, তিনি চাঁদে ফাটল দেখেছেন এমন কথাও তিনি কোথাও বলেননি, এমনকি এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়না।

হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর আঙ্গুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়ার হাদিস

Screenshot: shongshoy

অনুসন্ধানে বাংলা ভাষার একটি ব্লগ পোস্ট থেকে এই বিষয়ের হাদিস সমূহ সম্পর্কে সমন্বিত তথ্য (বাংলায়) পাওয়া যায়। হাদিস গ্রন্থ, প্রকাশনীর নাম ও হাদিস নম্বর সহ সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

  • সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৫ 
  • সহিহ মুসলিম, ইসলামিক সেন্টার, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৬০ 
  • সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত), হুসাইন আল-মাদানী প্রকাশনী, হাদিস নম্বরঃ ৩২৮৯ 
  • সহীহ আত তিরমিযী, আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানীর তাহকীককৃত, হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ২০২
  • সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী), হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৬ 
  • সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৯ 
  • সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৮ 
  • সহীহ বুখারী (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৩৩৭৭ 
  • আশ-শিফা, প্রথম খণ্ড (ইফা), ইমাম কাযী আয়ায আন্দুলুসী, পৃষ্ঠা ৫৮৯, ৫৯০
Screenshot: shongshoy

অর্থাৎ, হাদিসে বর্ণিত আছে যে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর ইশারায় চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়েছিল। আমাদের ফ্যাক্ট-চেকিং মেথোডোলজি বা নীতিমালা অনুযায়ী ধর্মীয় অলৌকিক ঘটনা যাচাই করা যায়না বা যাচাইযোগ্য নয়। একইসাথে চাঁদে ফাটল আছে কিনা তা-ও যাচাই করা হয়নি এই আর্টিকেলে।

এখানে আমরা কেবল নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে কোনো ফাটল দেখেছেন কিনা সে বিষয়টি যাচাই করবো।

এছাড়াও চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা এমন দাবিও অনলাইনে প্রচার হতে দেখা যায়।

Screenshot: Our WORLD page

১নং দাবি অনুসন্ধান (নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে বিশাল ফাটল দেখেছেন)

অনুসন্ধানে নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে ফাটল (এক প্রান্ত- অন্য প্রান্ত পর্যন্ত) দেখেছেন শীর্ষক কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়না। নিল আর্মস্ট্রং নিজে কখনও কোথাও এমনটি দাবি করেননি।

এছাড়াও, নাসার লুনার সায়েন্স ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ব্র্যাড বেইলি ২০১০ সালে-ই জানিয়েছেন, “চাঁদ দুই (বা ততোধিক) অংশে বিভক্ত হওয়ার বিষয়ে বর্তমানে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায়না …………..। নাসার সাইটে বিষয়টি উল্লেখ করা আছে।

Screenshot: lunarscience.nasa.gov

অর্থাৎ, চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা এমন দাবিও সঠিক নয়।

নিল আর্মস্ট্রং ও তার সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলো ১৯৮৩, ১৯৮৫ সালে ২ ও ৩ নং দাবি (অসত্য) এর বিষয়ে সত্যতা জানিয়েছেন। এছাড়াও, ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ২০০৫ সালে মালয়েশিয়াতেও তিনি (নিল আর্মস্ট্রং) সরাসরি ২ ও ৩ নং দাবি দুটি নাকচ করে দিয়েছেন, তাই ধারণা করা যায় ১ নং দাবিটি (নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে ফাটল দেখেছেন) ততদিনেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি এবং ফলে এই দাবির বিষয়ে কেউ জিজ্ঞেস-ও করেনি। কেননা এই দাবির ব্যাপারে যেহেতু কোনো উত্তর ইতোপূর্বের কোনো চিঠি কিংবা প্রতিবেদনে পাওয়া যায়নি। আর যদি কেউ প্রশ্ন করে উত্তর না পেত তাহলেও সে বিষয়ে ইন্টারনেটে তথ্য পাওয়া সম্ভাবনা ছিল। এমন হলে, উত্তর না পাওয়ার  বিষয়টিও সবাই লিপিবদ্ধ করে রাখতো।

যেহেতু ২০০৫ সালে মালয়েশিয়াতেও তাকে (নিল আর্মস্ট্রং) ফাটল দেখার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়নি এবং ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে চাঁদে ফাটল দেখার অস্তিত্ব পাওয়া যায়, সেহেতু ধরে নেওয়া যায় এই দাবিটির প্রচলন ২০০৫ এর সেপ্টেম্বরের পরে এবং ২০০৮ এর ফেব্রুয়ারির আগের সময়টাতে শুরু হয়েছে।

অনুসন্ধানে একটি ব্লগ থেকে আরো কিছু তথ্য পাওয়া যায়; ২০০৭ সালের অক্টোবরে মিশরীয় ভূতাত্ত্বিক ড. জগলুল আল নাজ্জার চাদের এই রিল সম্বলিত ছবি ব্যবহার করে দাবি করেছিলেন যে, নাসা চাঁদের দ্বিখণ্ডিত হওয়ার প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে। এমনকি এই দাবিটি সংবাদ মাধ্যম জাফারিয়া নিউজে-ও প্রকাশ করা হয়েছিল।

১ নং দাবিটি যাচাই করতে গিয়ে আলোচিত তথ্য সহ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। আমরা এই প্রতিবেদনে ছবিটি যাচাই করবো।

Screenshot: Facebook/Around Life

ছবির সাথে দাবি’র সামঞ্জস্যতা কতটুকু

আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপি এর একটি তথ্য যাচাই (ফ্যাক্ট-চেকিং) প্রতিবেদন বলছে আলোচিত ছবিটির ক্ষেত্রে “এটি চাঁদ দুইভাগে বিভক্ত হওয়ার অবস্থার ছবি” শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

Screenshot: AFP

তাহলে ছবিতে কি দেখা যাচ্ছে

চাঁদে এরকম রৈখিক বা ভিন্ন আকৃতির খাদ, উপত্যকা, পরিখা বা দাগ রয়েছে যা “রিল” হিসেবে পরিচিত। এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, খাদের বিষয়টি সম্পর্কে নাসা দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে; “রিমা আরিয়াডাসের মতো রিলগুলোকে টেকটোনিক কার্যকলাপের ফলে তৈরি হওয়া ত্রুটি বলে মনে করা হয়৷ একদল বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে রৈখিক রিলগুলি বড় কোনো ঘটনার (মহাজাগতিক) পরে গঠিত হতে পারে, অন্যরা বিশ্বাস করে যে রৈখিক রিলগুলি টেকটোনিক ক্রিয়াকলাপের ফলে তৈরি হয়েছিল৷ রিমা আরিয়াডাস (রিল) প্রায় ৩০০ কি.মি (১৮৬.৪ মাইল) দীর্ঘ হতে পারে।” রিল ও এর প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত পড়া যাবে এই আর্টিকেলে।

Screenshot: AFP 

এছাড়াও, এই ছবিটি নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে পা রাখার একমাস আগেই তোলা হয়েছিল।

Screenshot:AFP

২ নং দাবি অনুসন্ধান (নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে আজান শুনেছেন)

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম “সিবিএস” এই দাবিটিকে মিথ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

Screenshot: cbsnews

কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির ব্যবহার করে, মালয়েশিয়ান সংবাদ মাধ্যম “দ্য ভকেট১৯৮৩ সালের ৫ই মে দিল্লীতে অবস্থিত ইসলামিক সেন্টার এর প্রেসিডেন্ট ওয়াহু দুদ্দিন খান এর কাছে লেখা এক চিঠিতে নিল আর্মস্ট্রং “চাঁদে আজান শোনার দাবিটি সত্য নয়” বলে পাঠানো একটি চিঠি সম্বলিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “চাঁদে আজান শোনার দাবিটি সত্য নয়”।

Screenshot: The Vocket

চিঠিটির একটি কপি পাওয়া যাবে এই টুইট ও মালয়েশিয়ান এই সংবাদ মাধ্যমে

Image: hype.my

এছাড়াও, ১৯৮৩ সালের ১৪ই জুলাই আর্মস্ট্রংয়ের প্রশাসনিক সহকারী ভিভিয়ান হোয়াইট-ও চাঁদে আজান শোনার বিষয়টি অস্বীকার করে এশিয়ান রিসার্চ সেন্টার ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপের সেসময়কার পরিচালক ড. ফিল পারশাল-কে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন বলে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “চাঁদে আজান শোনার দাবিটি সত্য নয়”।

Screenshot: Wikiisalm

২০০৫ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়াতে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল লিডারশিপ ফোরামের প্রশ্নোত্তর সেশনে নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে আজান শোনার দাবিটি নিজে নাকচ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ান সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার এর প্রতিবেদন দেখুন এখানে

Screenshot: Wikiisalm

আরো এক দাবি; চিঠিতে ঠিকানার স্থলে লেবানন নাম নিয়ে বিভ্রান্তি

চিঠির ঠিকানার স্থলে লেবাননের নাম দেখে অনেকেই এটি মধ্য এশিয়ার দেশ “লেবানন” ভেবে ভুল করতে পারেন। যদিও লেবানন শব্দের পাশে আমেরিকার একটি রাজ্যের নাম-ও উল্লেখ করা আছে। 

Screenshot: hype.my

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নিল আর্মস্ট্রং ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ লেবাননে চলে গেছেন দাবিও প্রচার করা হয়েছিল।

Screenshot: washingtonpost

চিঠিতে উল্লিখিত ঠিকানা অনুযায়ী কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখা যায় যে আমেরিকার ওহিও অঙ্গরাজ্যে লেবানন নামের একটি জায়গা (শহর) রয়েছে।

Screenshot: Google 

৩ নং দাবি অনুসন্ধান (নিল আর্মস্ট্রং পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন)

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম “সিবিএস” এই দাবিটিকেও মিথ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

Screenshot: cbsnews

কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ইসলামি তথ্য সম্বলিত সাইট “উইকি ইসলাম” এ  ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে মিশর, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের দূতাবাসে নিল আর্মস্ট্রং এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দাবিটিকে সত্য নয় জানিয়ে  প্রেরণ করা একটি চিঠি খুঁজে পাওয়া যায়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “নিল আর্মস্ট্রং-এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের (বিষয়টি) কথিত (সত্য নয়)”।

Screenshot: wikiislam

আলোচিত চিঠির কপিটি এই টুইটে-ও পাওয়া যাবে।

Photo Collage by Rumorscanner, Credit:shongshoy

পাশাপাশি, মালয়েশিয়ান সংবাদ মাধ্যম “দ্য ভকেট১৯৮৩ সালের ৫ই মে দিল্লীতে অবস্থিত ইসলামিক সেন্টার এর প্রেসিডেন্ট ওয়াহু দুদ্দিন খান এর কাছে লেখা এক চিঠিতে নিল আর্মস্ট্রং “ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন শীর্ষক দাবিটি সত্য নয়” বলে পাঠানো একটি চিঠি সম্বলিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: The Vocket

চিঠিটির একটি কপি পাওয়া যাবে এই টুইট ও মালয়েশিয়ান এই সংবাদ মাধ্যমে

Image: hype.my

এছাড়াও, ১৯৮৩ সালের ১৪ই জুলাই আর্মস্ট্রংয়ের প্রশাসনিক সহকারী ভিভিয়ান হোয়াইট-ও তার (আর্মস্ট্রং এর) মুসলিম হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে এশিয়ান রিসার্চ সেন্টার ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপের সেসময়কার পরিচালক ড. ফিল পারশাল-কে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন বলে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। এখানেও উল্লেখ করা হয়, “নিল আর্মস্ট্রং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন শীর্ষক দাবিটি সত্য নয়”।

Screenshot: Wikiisalm

এমনকি দাবিটিকে অসত্য হিসেবে উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট-ও।

নিল আর্মস্ট্রং এর অফিশিয়াল জীবনীগ্রন্থ First Man: The Life of Neil A. Armstrong এ তার মুসলিম হওয়ার দাবিটিকে “সত্য নয়” শীর্ষক বর্ণনা পাওয়া যায় উইকিইসলাম সাইটে-ও।

Screenshot: Wikiisalm

উইকি ইসলাম সাইট-এ উল্লিখিত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জেমস আর হানসেন কর্তৃক লিখিত নিল আর্মস্ট্রং এর আত্মজীবনী, First Man: The Life of Neil A. Armstrong এর একটি পিডিএফ কপি পাওয়া যায়। পিডিএফ কপির ৩৮৬ ও ৩৮৭ নম্বর পৃষ্ঠায় উইকিইসলামে উল্লিখিত (উপরে বর্ণিত রয়েছে) লেখাটুকু পাওয়া যায়। গুগল বুক এ দেখুন এখানে

Screenshot: Book/First Man: The Life of Neil A. Armstrong (PDF), Page: 386 & 387

২০০৫ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়াতে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল লিডারশিপ ফোরামের প্রশ্নোত্তর সেশনে নিল আর্মস্ট্রং তার মুসলিম হওয়ার দাবিটি নাকচ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ান সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার এর প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

Screenshot; The Star

জুন ১৯৮৫ সালে, সম্পাদকের কাছে লিখিত এ সংক্রান্ত চিঠিটি জার্নাল আরাবিয়া (ইসলামিক ওয়ার্ল্ড রিভিউ)-তে ছাপা হয়েছিল বলেও তথ্য পাওয়া যায় উইকিইসলাম সাইটে

Screenshot: Wikiislam

পরবর্তীতে একটি ব্লগ পোস্টে জার্নাল আরাবিয়া এর সেই কপিও খুঁজে পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, “আর্মস্ট্রং এর ধর্ম পরিবর্তনের দাবিটি সত্য নয়”। [মরোক্কো ও ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে সেসময় দাবিদুটি ছড়িয়ে পড়েছিল]

Screenshot: shongshoy

দাবিগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের বিশ্লেষণ

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের বিশ্লেষণী কন্টেন্ট পাওয়া যায়। এরকম একটি ভিডিও কন্টেন্ট (পোস্ট) দেখুন  এখানে

পাশাপাশি, আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে বিশ্লেষণী ভিডিও কন্টেন্ট (পোস্ট) দেখুন এখানে

এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মহিউদ্দিন সরকার নামক একটি প্রোফাইল থেকেও বিশ্লেষণী একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

একটি ব্লগ পোস্ট থেকে পাওয়া এরকম একটি মতামতের (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা) ছবি দেখুন নিচে।

Screenshot: somewhereinblog

মূলত, ১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে পা রাখার পর ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসের আগে থেকেই নিল আর্মস্ট্রং এর মুসলিম হওয়ার দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি একই বছরের মে মাসের আগে থেকেই (মুসলিম হওয়া দাবির প্রায় সমসাময়িক সময়েই) চাঁদে আজান শোনার দাবিটি-ও ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়াও, আর্মস্ট্রং চাঁদে ফাটল দেখেছেন শীর্ষক দাবি বাংলাদেশে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। তবে, নিল আর্মস্ট্রং নিজেই চাঁদে আজান শোনা এবং ধর্মান্তরিত হওয়ার দাবিকে সত্য নয় বলে জানিয়েছিলেন। এছাড়াও, তিনি চাঁদে ফাটল দেখেছেন এমন কথাও তিনি কোথাও বলেননি, এমনকি এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়না। উল্লেখ্য যে, হাদিসে বর্ণিত আছে যে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর ইশারায় চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়েছিল। আমাদের ফ্যাক্ট-চেকিং মেথোডোলজি বা নীতিমালা অনুযায়ী ধর্মীয় অলৌকিক ঘটনা যাচাই করা যায়না এবং যাচাইযোগ্য নয়। একইসাথে চাঁদে ফাটল আছে কিনা তা-ও যাচাই করা হয়নি এই আর্টিকেলে। এখানে আমরা কেবল নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে কোনো ফাটল দেখেছেন কিনা সে বিষয়টি যাচাই করেছি।

উল্লেখ্য, নিল আর্মস্ট্রং ২০১২ সালের ২৫শে আগষ্ট (শনিবার) মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই ‘স্যাটার্ন ৫’ রকেটে চেপে চাঁদে পাড়ি দিয়েছিল ‘অ্যাপোলো ১১’। ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ হয়েছিল অ্যাপোলো ১১। তিন জন মার্কিন মহাকাশচারী সেদিন চাঁদের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। নিল আর্মস্ট্রং, এডুইন (বাজ) অলড্রিন এবং পাইলট মাইকেল কলিন‌্স। চাঁদের মাটিতে প্রথম মানুষ হিসেবে পা রাখেন নিল আর্মস্ট্রং তার পরে নামেন এডুইন অলড্রিন। কলিন‌্স মহাকাশযানেই ছিলেন, চাঁদে নামেননি

আরো পড়ুনঃ হিন্দুদের বাসা ভাড়া দেয়া যাবে না শীর্ষক মন্তব্য করেননি শায়েখ আহমাদুল্লাহ

সুতরাং, “নিল আর্মস্ট্রং চাঁদে ফাটল দেখেছেন এবং আজান শুনেছেন। পরবর্তীতে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন” শীর্ষক দাবিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img