চাকসুর ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। এরই প্রেক্ষাপটে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হট্টগোলের দৃশ্য সংবলিত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয়, এটি চাকসু নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ও হাতাহাতির দৃশ্য।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি চাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এবং ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে কোনো হাতাহাতির তথ্যও পাওয়া যায়নি। বরং, ভিডিওটি গত মার্চে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক পদে নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে ঘটে যাওয়া হট্টগোলের দৃশ্য।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ৪ মার্চ মূল ধারার গণমাধ্যম একাত্তর টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যার শুরুর অংশের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। ভিডিওর বর্ণনা অনুযায়ী, এটি প্রশাসনিক পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইবি উপাচার্য কার্যালয়ে ঘটে যাওয়া হট্টগোলের দৃশ্য।

Comparison: Rumor Scanner.

একই দিন জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উপাচার্যের কক্ষে প্রশাসনের বিভিন্ন পদে দায়িত্বরত শিক্ষক–কর্মকর্তা, ছাত্রদলের নেতা–কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুমুল বাগ্‌বিতণ্ডা ও হট্টগোল হয়েছে। রেজিস্ট্রার পদসহ কয়েকটি পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া নিয়ে সেদিন বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছ। 

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক চাকসু নির্বাচনের নয়, বরং কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্চের পুরোনো ঘটনার।

উল্লেখ্য, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যে দিয়ে শেষ হওয়া চাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের এক নম্বর গেটে বিএনপি-ছাত্রদল ও জামায়াত-ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা মুখোমুখি অবস্থান নিলেও ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে কোনো হাতাহাতির তথ্য বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি।
ফলাফল অনুযায়ী, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থীরা ভিপি, জিএসসহ ২৪টি পদে জয়ী হন। ভিপি পদে মো. ইব্রাহিম হোসেন, জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব এবং এজিএস পদে ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান নির্বাচিত হন।

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনার একটি পুরোনো ভিডিওকে চাকসু নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ও হাতাহাতির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img