সম্প্রতি ‘একদল মুসলমান একটি মন্দিরের হাতিকে পায়ে শেকল বেঁধে লাঠিপেটা করছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) একাধিক ভারতীয় অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হচ্ছে৷

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি মুসলমান কর্তৃক মন্দিরের হাতিকে পায়ে শেকল বেঁধে লাঠিপেটা করার ঘটনার ভিডিও নয় বরং, ২০২৪ সালের ভিন্ন একটি ঘটনার ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে৷
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট ‘কুমিল্লায় নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হাতিটিকে বাঁচাতে আসলো না কেউ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৬ আগস্ট সকালে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সামনে একজন মাহুত ও তার সহযোগী একটি হাতিকে নির্যাতন করে এবং এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কুমিল্লা জেলার বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির জানান, ভিডিও দেখার পর থেকে তাদের টিম কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হাতিটি ও তার মাহুতকে খুঁজতে৷ ইতোমধ্যে ঢাকা থেকেও একটি বিশেষ টিম এসেছে।
পরবর্তীতে একই বিষয়ে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর এর ওয়েবসাইটে সে বছরের ৩১ আগস্ট ‘নির্যাতনের শিকার সেই হাতিটির ঠাঁই হলো গাজীপুর সাফারি পার্কে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সোনাই উল্ল্যাহ এলাকা থেকে হাতিটি উদ্ধার করা হয়, তবে মাহুতরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারের পর হাতিটিকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে নেওয়া হয়েছে। আরো জানা যায়, তিনজন মাহুত দোকানপাটে ঘুরে ঘুরে হাতিটিকে দিয়ে টাকা তুলতেন। টাকা তোলার সময় হাতিটি হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং দাউদকান্দি এলাকার বেশ কয়েকটি দোকানে তাণ্ডব চালায়। পরে হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে মাহুতরা সেটিকে পায়ে শেকল বেঁধে আঘাত করতে থাকে।
সুতরাং, কুমিল্লায় চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত হাতিকে নির্যাতনের ভিডিওকে মুসলমান ব্যক্তি কর্তৃক মন্দিরের হাতি নির্যাতন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।