সম্প্রতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে টকশো সঞ্চালক ও সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের মন্তব্য দাবিতে একটি লেখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
পোস্টগুলোতে খালেদ মুহিউদ্দীনকে উদ্ধৃত করে জুলাই শহীদদের নিয়ে জামায়াতের প্রকাশিত দশ খণ্ডের গ্রন্থে প্রায় ছয় শত শহীদের জীবনী ও আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে দলটির প্রশংসা করা হয়। আরো বলা হয়, জামায়াত গোপনে প্রায় ৬০০ শহীদ পরিবারকে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত সহায়তা দিয়েছে, বিভেদ না করে সবার পাশে থেকেছে।

উক্ত দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।

পাশাপাশি, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে একই দাবিটি প্রচার হতে দেখা যায়। দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে এই লেখাটি সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন লিখেননি। খালেদ মুহিউদ্দীন নিজেই রিউমর স্ক্যানারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে খালেদ মুহিউদ্দীনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, এক্স অ্যাকাউন্ট এবং ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্যের সন্ধান মেলেনি।
এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা অন্য কেনো বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটি সমর্থন করে এমন তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে চলতি বছরের ১০ এপ্রিলে একই লিখা ‘Khalid Muhammad’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের বরাতেও ছড়াতে দেখা যায়।
এছাড়া, উক্ত দাবি সম্বলিত পোস্টে খালেদ মুহিউদ্দীনের নামের বানান ঠিক নেই বলে প্রতীয়মান হয়। তার নামের সঠিক বানান ‘খালেদ মুহিউদ্দীন’ হলেও উক্ত পোস্টগুলোতে ‘খালেদ মহিউদ্দিন’ লেখা হয়েছে।
বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আলোচিত লিখনি তার কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার লেখা নয় এবং পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত নামের বানানটিও আমার নয়।
অর্থাৎ, জামায়াতে ইসলামী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া লেখাটি খালেদ মুহিউদ্দীনের নয়।
উল্লেখ্য, ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের নিয়ে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতায় শহীদ যারা’ শিরোনামে দশ খণ্ডের স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ‘জামায়াত অনলাইন লাইব্রেরি’ নামক একটি ওয়েবসাইটে বইগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Khaled Muhiuddin: Facebook
- Khaled Muhiuddin: X Account
- Khaled Muhiuddin: Youtube (ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন)
- Khalid Muhammad: Facebook Post
- Statement from: Khaled Muhiuddin
- জামায়াত অনলাইন লাইব্রেরি: দ্বিতীয় স্বাধীনতায় শহীদ যারা