সম্প্রতি, ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, হিজাব পরিধান না করার কারণে বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একজন হিন্দু উপজাতি নারীকে উগ্র ইসলামপন্থীদের দ্বারা মারধরের ঘটনার ভিডিও এটি।
উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
গত সেপ্টেম্বরে এক্সে একই ভিডিও প্রচার করে উক্ত নারীকে খৃষ্টান, মারমা ও অমুসলিম দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ইন্সটাগ্রামে গত সেপ্টেম্বরে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিওটি বাংলাদেশি মুসলিম কর্তৃক কোনো হিন্দু নারীকে মারধরের ঘটনার নয় বরং, এই ভিডিওটির ব্যক্তি একজন তৃতীয় লিঙ্গের মুসলিম এবং তার নাম আরোহী ইসলাম।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ‘সৈকতে নারীকে হেনস্তা করা সেই ঘটনার নেপথ্যে কী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সে সময় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে উক্ত ব্যক্তি হেনস্তার শিকার হন। তবে এই প্রতিবেদন থেকে উক্ত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তার নাম আরোহী ইসলাম। তার বয়স ২০ বছর। তিনি একজন তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি।
হেনস্তার শিকার আরোহী ইসলাম বাদী হয়ে সে সময় দুজনের নাম উল্লেখ করে এ ঘটনায় মামলা করেন। মডেল থানা, মামলা নং ৪০/২৪।
তাছাড়া, বিবিসি বাংলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারী হেনস্তার ঘটনায় উক্ত হয়রানির সূত্রপাত লাঠি হাতে থাকা যে যুবকের মাধ্যমে, তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়েরের পর সে সময় তাকে আদালতে পাঠানো হয় বলে পুলিশ জানায়।
ভিডিও দেখে জড়িতের পরিচয় শনাক্ত করার পর পুলিশ জানিয়েছে, তার নাম ফারুকুল ইসলাম এবং তার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া।
সুতরাং, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আরোহী ইসলাম নামে তৃতীয় লিঙ্গের মুসলিম ব্যক্তিকে হেনস্তার ঘটনাকে হিন্দু উপজাতি নারীকে হেনস্তার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।