সম্প্রতি, চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে টিকলি নামের একজন হিন্দু নারীকে হত্যা করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এক্সে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে টিকলি নামের হিন্দু এনজিও কর্মীকে হত্যার দাবিটি সঠিক নয় এবং এর সাথে সাম্প্রদায়িকতার ঘটনারও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, মানসিক চাপে তার আত্মহত্যার ঘটনাকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে গত ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামে নারী এনজিও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত নারীর ছবিটির সাথে উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত নারীর ছবির মিল রয়েছে। এছাড়াও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবির নারীর নাম শুক্লা দে। তিনি রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৪ জানুয়ারি দিবাগত রাতে উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের পালপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেদককে তার স্বজনরা জানান, ঋণের কিস্তি আদায়ে প্রতিষ্ঠান তার ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিল। এজন্য হতাশ হয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
পাশাপাশি জানা যায়, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শুক্লার স্বামী সিদুল পাল। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, সংস্থাটির কানুনগোপাড়া শাখায় ২০২৩ সালের মে মাসে মাঠকর্মী হিসেবে যোগ দেন শুক্লা। সংস্থাটি এলাকায় লোকজনকে ক্ষুদ্রঋণ দেয়। গত ৫ আগস্টের পর থেকে কিস্তি আদায়ে ধীরগতি ছিল। এজন্য কয়েক মাস ধরে শুক্লা দের সঙ্গে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
গত নভেম্বরে সংস্থাটি শুক্লার মাসিক বেতন থেকে অনাদায়ী কিস্তির টাকা কেটে নেয়। ঋণের কিস্তি আদায়ে মানসিক চাপ ও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শুক্লা আত্মহত্যা করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
পরবর্তী অনুসন্ধানে ইনডিপেনডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে একই ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।
সুতরাং, শুক্লা দে নামের এনজিও কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হত্যাকান্ড দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Jamuna TV Website: চট্টগ্রামে নারী এনজিও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার
- Independent Television Youtube Channel: রান্নাঘরে ঝুলছিল এনজিও কর্মীর প্রাণহীন দেহ | Chattogram | Independent TV