জাপার কার্যালয়ে সামনে সংঘর্ষ চলাকালে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় আটক এই ব্যক্তি শিবির নেতা নয়

গত ২৯ আগস্ট রাষ্ট্র পুনর্গঠন ও ফ্যাসিবাদ নির্মূলের দাবিতে বিজয়নগর কার্যালয়ের সামনে একটি সমাবেশ করে গণঅধিকার পরিষদ। সমাবেশে আওয়ামী লীগের দোসরদের রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করা, তাদের নিবন্ধন বাতিল ও ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা বিজয়নগর মোড় থেকে পল্টনমুখী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় তারা জাতীয় পার্টিকেও রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। মিছিলটি কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলার সময় মব সৃষ্টিকারী একজন হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিকে সেনাবাহিনী আটক করে। পরবর্তীতে তার হেলমেট খুললে দেখা যায় আটক ব্যক্তি একজন শিবির নেতা।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে সামনে সংঘর্ষ চলাকালে সেনাবাহিনীর হাতে আটক এই ব্যক্তি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা নন বরং, তিনি গণঅধিকার পরিষদের সমর্থক। 

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ২৯ আগস্ট মূলধারার দৈনিক ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলে ইট নিক্ষেপকালে গণঅধিকার সমর্থককে আটক করল সেনাবাহিনী শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube 

উক্ত ভিডিওটিতে আলোচিত ওই হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের আটক করতে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও ভিডিওটির শেষের দিকে একজন শাড়ি পড়ুয়া মহিলাকে ওই ব্যক্তিকে আটকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের বাধা দিতে দেখতে পাওয়া যায়। মূলত, উক্ত ভিডিওটি আলোচিত ওই ব্যক্তিকে আটকের ভিন্ন এঙ্গেল থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও। যা ওই ঘটনার একটি বর্ধিত সংস্করণ। তবে ভিডিওর কোথাও কাউকে আটক ব্যক্তিকে শিবির নেতা বলে সম্বোধন করতে শোনা যায়নি। ভিডিওটির শিরোনামে আটক ব্যক্তিকে গণঅধিকার পরিষদের সমর্থক বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ভিডিওটির বিবরণীতে এই ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অন্যকোনো গণমাধ্যমেও আটক ব্যক্তি সম্পর্কিত বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে গত ১ সেপ্টেম্বর ডাকসু’র সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ফেসবুক পেজে প্রচারিত উক্ত ঘটনার একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটির শিরোনামে সেনাবাহিনীকে আলোচিত ওই ব্যক্তিকে আটকে বাধাদানকারী নারীকে তিনি গণঅধিকার পরিষদের নেত্রী বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু তার পোস্টেও আটক ব্যক্তির পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। তবে আটক ব্যক্তি যে শিবিরের নেতা এমনটাও তাকে উল্লেখ করতে দেখা যায়নি। তবে ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া ওই নারীকে আটক ব্যক্তিকে তাদের দলের লোক বলে সেনাবাহিনীকে তাকে ছেড়ে দিতে বলতে আহ্বান করতে শোনা যায়।

অর্থাৎ, জাপার কার্যালয়ে হামলা করতে গিয়ে আটক হেলমেট পরিহিত ব্যক্তি গণঅধিকার পরিষদের সমর্থক। 

সুতরাং, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষ চলাকালে সেনাবাহিনীর হাতে আটক এই ব্যক্তি শিবির নেতা শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img