সম্প্রতি, “গণভবনে ভাংচুর, সেনা পুলিশকে পিটিয়ে গণভবন দখলে নিলো জামায়াত বিএনপির নেতাকর্মীরা” শীর্ষক শিরোনাম এবং “লাঠি মিছিল নিয়ে গণভবনে ভাংচুর ভয়ে পদত্যাগের ঘোষণা” শীর্ষক থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গণভবনে ভাংচুর করে বিএনপি – জামায়াত নেতাকর্মীদের গণভবন দখলে নেওয়া কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বিএনপির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট “ময়মনসিংহ মুক্তাগাছায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা পরবর্তী নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, সেদিন জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, ভোলায় পুলিশের গুলিতে নূরে-আলম ও আব্দুর রহিম-কে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে ময়মনসিংহ মুক্তাগাছায় বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ভিডিও এটি।
এছাড়া অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে গণভবনে ভাংচুর, বিএনপি – জামায়াতের গণভবন দখলে নেওয়া কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেটে “গণভবনে ভাং*চু*র, সেনা পুলিশকে পি*টি*য়ে গণভবন দখলে নিলো জামায়াত বিএনপির নেতাকর্মীরা” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২ সালে ময়মনসিংহ মুক্তাগাছায় বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের একটি ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম যুক্ত করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, গণভবন ভাংচুর করে বিএনপি – জামায়াত নেতাকর্মীদের গণভবন দখলে নেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Bangladesh Nationalist Party : ময়মনসিংহ মুক্তাগাছায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা পরবর্তী নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ
- Rumor Scanner’s Own Analysis