গত ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের অবসান ঘটে৷ সরকারবিহীন পরের তিনদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক হামলা হয়েছে। হত্যা, ভাংচুর, পুড়িয়ে দেওয়া, লুটপাটের অসংখ্য খবরও প্রকাশ্যে আসে। হামলা হয় বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের বাসা এবং স্থাপনায়ও। এরই প্রেক্ষিতে, নতুন বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষিকার গায়ে হাত শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
উক্ত দাবিতে ফেসবুক পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হিন্দু শিক্ষিকার গায়ে হাত তোলার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর নারী হিন্দু নন বরং তিনি মুসলিম ধর্মের অনুসারী।
উক্ত ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির ইউটিউবে চ্যানেলে ১৬ আগস্ট “অধ্যক্ষের চেয়ারে বরখাস্তকৃত উপাধ্যক্ষ, টেনে নামালেন শিক্ষকরা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
ভিডিও থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে গিয়ে হঠাৎ অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে পড়েন বরখাস্তকৃত উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন। পরবর্তীতে শিক্ষক টিপু সুলতানসহ কর্মচারীরা তাকে সরাতে চেষ্টা করেন।
জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন কলেজে যোগ দিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় তিনি কলেজের শিক্ষক টিপু সুলতানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে সাবিনা ইয়াসমিন উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালে তিনি উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালে কলেজের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অন্যায়ভাবে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। গত ১৪ আগস্ট দুপুরে জেলা প্রশাসনের এক চিঠির আদেশে তিনি স্বপদে যোগ দিতে যান। এ সময় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুল ইসলামসহ বেশ কয়েক শিক্ষক তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। একপর্যায়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষক টিপু সুলতান তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে মারধর করে কলেজ থেকে বের করে দেন।
সুতরাং, হিন্দু শিক্ষিকার গায়ে হাত তোলার দাবিতে মুসলিম নারীকে হেনস্তা করার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।