উপদেষ্টা পদ থেকে আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের ভুয়া দাবি 

সম্প্রতি, ‘পদত্যাগ করলেন আসিফ-নাহিদ লাইভে এস বললেন -আসিফ নজরুল’ শীর্ষক থাম্বনেইলে এবং ‘উপদেষ্টা আসিফ নাহিদ পদত্যাগ;লাইভে এসে পদত্যাগের কথা বললেন আসিফ নজরুল’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল লাইভে এসে বলেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, গত ১০ আগস্ট সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের কথা জানিয়ে করা আসিফ নজরুলের লাইভ ভিডিও ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে শুরুতেই ড. আসিফ নজরুলের একটি ভিডিও ক্লিপ দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে ড. আসিফ নজরুলকে বলতে শোনা যায়, প্রিয় দেশবাসী আপনাদের সাথে একটি বিশেষ সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে শেয়ার করার প্রয়োজন অনুভব করছি। কিছুক্ষণ আগেই পদত্যাগ করেছেন। ওনার পদত্যাগপত্র ইতিমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছেছে। এটা উপযুক্ত প্রসেসিংয়ের জন্য আমরা কালবিলম্ব না করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবো এবং আমরা আশা করবো, খুব দ্রুত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’ ভিডিওটিতে আসিফ নজরুলের বক্তব্যের ধারাবাহিকতা ছিলনা অর্থাৎ ভিডিওটিতে অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়। উক্ত ফুটেজটি প্রচারের পরই ভিডিওতে ভিডিওর উপস্থাপককে দাবি করতে শোনা যায়, আমেরিকার নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং দেশে থাকার পরও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আরেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে। লাইভে এসে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এছাড়াও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলামকে তাদের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলেন। তাছাড়া বলেন, পদত্যাগ করে আসিফ মাহমুদ বিদেশে পালিয়ে গেছেন এবং গোপনে রয়েছেন নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি আসিফ নজরুল লাইভে এসে বিষয়টি স্পষ্ট করেন।

দাবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার কোনো গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে আলোচিত দাবিগুলোর পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ড. আসিফ নজরুলের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে গত ১০ আগস্ট ‘প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও’র মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

ভিডিওতে আসিফ মাহমুদ বা নাহিদ ইসলামের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি আসিফ নজরুল।

এছাড়া, ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলামকে তাদের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলেছেন এমন কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল লাইভে এসে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img