চাঁদা না দেওয়ায় শাহরিয়ার নাজিম জয়ের রেস্টুরেন্ট ভাঙচুরের দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, ‘চাঁদা না দেওয়ায় শাহরিয়ার নাজিম জয় এর রেস্টুরেন্টে মব চালাচ্ছে ইউসুফ বাহিনী দালালি করেও শেষ রক্ষা হলো না।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ের রেস্টুরেন্ট ভাঙচুরের নয় এবং শাহরিয়ার নাজিম জয়ের রেস্টুরেন্ট ভাঙচুরের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, গত এপ্রিল মাসে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইসরায়েলী পণ্যের বয়কটের ডাক দেয় জনতা। এরই প্রেক্ষিতে কেএফসি রেস্টুরেন্ট ইসরায়েলী অভিযোগ তুলে গত ০৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় এর কুমিল্লা শাখায় ভাঙচুর চালায় একদল জনতা। এটি সেই ঘটনারই একটি ভিডিও। 

অনুসন্ধানে ‘Sharif Al Islam’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৭ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

শরিফ আল ইসলামের ফেসবুক পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি তৌহিদী জনতা কর্তৃক কুমিল্লায় কেএফসি রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর ও লুটপাটের দৃশ্য। 

উল্লিখিত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জাগো নিউজের ওয়েবসাইটে গত ০৭ এপ্রিল ‘কুমিল্লায় কেএফসি ভাঙচুর’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ০৭ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ০৬ টার দিকে কুমিল্লা নগরীর রানীর বাজার এলাকায় অবস্থিত কেএফসি রেস্টুরেন্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলার খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষ কেএফসি বন্ধ করে চলে যায়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে একদল যুবক কেএফসি ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ মিছিল ও ইসরায়েল বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা কেএফসিকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এসময় ভবনটির দ্বিতীয় তলায় উঠে ভাঙচুর করা হয়।

এছাড়া, ঘটনার দুইটির পর গত ০৯ এপ্রিল ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৭ এপ্রিল কুমিল্লার কেএফসিতে ভাঙচুরের ঘটনায় ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের সাফায়েত মজুমদার (২৭), নগরীর কাপ্তান বাজার এলাকার মো. জিহাদ হোসেন (২১), শাসনগাছা এলাকার আবু বকর সিদ্দিক আসলাম (২১) ও আবিদ হাসান (২৩)। গ্রেফতারকৃতরা উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির, তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের রেস্টুরেন্ট ভাঙচুরের কোনো তথ্য গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। এমনকি শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ইসরায়েল আগ্রাসনের প্রতিবাদে কুমিল্লার কেএফসি রেস্টুরেন্টে একদল জনতার ভাঙচুরের ভিডিওকে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের রেস্টুরেন্ট ভাঙচুরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img