কিউবা ও উত্তর কোরিয়াতে কোকা-কোলা নিষিদ্ধ হলেও অন্যান্য কোমল পানীয়তে নিষেধাজ্ঞা নেই

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে কিউবা ও উত্তর কোরিয়াতে কোমল পানীয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে বলে দাবি করা হয়। ভিডিওতে মানব শরীরের উপর কোমল পানীয়ের প্রভাব বিবেচনার পরিপ্রেক্ষিতে জানানো হয় কিউবা ও উত্তর কোরিয়াতে পৃথিবীর যতপ্রকার পানীয় আছে সব নিষিদ্ধ।

কোকা-কোলা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওতে ছয় হাজার নয় শতাধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে পাঁচশত বাহাত্তর বার এবং ভিডিওতে মন্তব্য করা হয়েছে চারশত আশি টি।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কিউবা ও উত্তর কোরিয়াতে সব ধরণের কোমল পানীয় নিষিদ্ধ নয়। তবে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশ দুটিতে কোকা-কোলা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের উপর বিধিনিষেধ রয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জানা যায়, বিশ্বে এখন মাত্র দুটি দেশ আছে যেখানে কোকা-কোলা কেনা বা বিক্রি করা যায় না – অন্তত, আনুষ্ঠানিকভাবে নয়। তারা হল কিউবা এবং উত্তর কোরিয়া, ১৯৬২ সাল থেকে কিউবা এবং ১৯৫০ সাল থেকে উত্তর কোরিয়া উভয়ই দীর্ঘমেয়াদী মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে।

 ১৯০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কোকের বোতলজাত প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে একটি ছিল কিউবা। কিন্তু ফিদেল কাস্ত্রোর সরকার ১৯৬০ এর দশকে ব্যক্তিগত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা শুরু করলে কোম্পানিটি বিতারিত হয় এবং আর কখনো ফিরে আসেনি। 

এছাড়া, ব্রিটিশ গণমাধ্যম The Telegraph থেকে জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার একটি রেস্টুরেন্টে খাবারের সাথে কোকা-কোলা সার্ভ করা হলেও সেটি অফিশিয়াল চ্যানেলের মাধ্যমে নয় বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। বাজারে বিক্রিত পণ্যসমূহ অননুমোদিত তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ক্রয় করা হয় এবং অন্যান্য বাজার থেকে আমদানি করা হয়। 

এছাড়াও উত্তর কোরিয়ায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আদলে নিজের উৎপাদিত কোমল পানীয় বিক্রি করা হয়। 

Image source : website

উল্লেখ্য, চলমান বানিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার কারণে, বর্তমানে কিউবা এবং উত্তর কোরিয়ায় কোকা-কোলা কেনার কোনো আইনি উপায় নেই । তবে এর অর্থ এই নয় যে অন্য কোনও উপায়ে কোকা-কোলা আমদানি বা বোতলজাত করা হচ্ছে না, শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে এটি সম্ভব নয়। 

মূলত, ফেসবুকের একটি ভিডিওতে কিউবা ও উত্তর কোরিয়ায় কোমল পানীয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এই দাবির কোনো সত্যতা মেলে নি। কিউবা ও উত্তর কোরিয়ায় মার্কিন ব্র্যান্ড কোকা-কোলার উপর বানিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা থাকলেও স্থানীয় কোমল পানীয়ের উপর কোনো ধরণের নিষেধাজ্ঞা নেই দেশ দু’টিতে। এছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে না পাওয়া গেলেও দেশ দুইটিতে অনানুষ্ঠানিকভাবে সীমিত আকারে ঠিকই কোকা-কোলা পাওয়া যায়।

সুতরাং, কিউবা ও উত্তর কোরিয়াতে কোমল পানীয় নিষিদ্ধ দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

RS Team
Rumor Scanner Fact-Check Team
- Advertisment -spot_img
spot_img
spot_img