মাগুরা শহরে কয়েক দিন আগে আট বছরের এক শিশু তাঁর বড় বোনের (শ্বশুর) বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে গত ৬ মার্চ বেলা ১১টার দিকে শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উক্ত ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুর ছবি দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোর সঙ্গে মাগুরায় ৮ বছর বয়সী শিশুর ধর্ষণের কোনো সম্পর্ক নেই বরং, এগুলো একজন আলোকচিত্রীর ধারণামূলক ফটোশুটের অংশ।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অনিন্দ্য দে নামের একজন আলোকচিত্রীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৩ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

অপরদিকে মাগুরায় ৮ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে চলতি মার্চ মাসে। অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটার আগে থেকেই অনলাইনে বিদ্যমান।
উল্লেখ্য যে, অনিন্দ্য দে কর্তৃক প্রচারিত উক্ত ছবিগুলো এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে এতিম কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার ছবি দাবিতেও প্রচার করা হয়েছে। সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেসময় এ বিষয়ে জানতে আলোকচিত্রি জনাব অনিন্দ্য দে’র সঙ্গে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, এটি কনসেপচুয়াল ফটোগ্রাফি বা ধারণামূলক আলোকচিত্র। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি শিশু অপহরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি ছবিগুলো তুলেছিলেন এবং সে সময় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেন। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ছবিগুলো নতুন করে পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ছবিতে ধর্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অন্তু, আর ভুক্তভোগী কিশোরীর ভূমিকায় রয়েছেন অর্পিতা। তারা দুজনই অনিন্দ্য দে’র ছোট ভাই-বোন।
পরবর্তীতে, অনিন্দ্য দে’র ফেসবুক আইডি থেকে ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্টে একই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, সম্প্রতি মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত দাবি করে একজন আলোকচিত্রীর পুরোনো মঞ্চস্থ ফটোশুটের ছবি প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Anindya Dey – Facebook Post
- Anindya Dey – Facebook Post
- Prothom Alo – বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে শিশু ‘ধর্ষণের’ শিকার, ২৪ ঘণ্টা পরও জ্ঞান ফেরেনি