রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর মৃত্যুর গুজব 

সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ: মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশে গ্রেফতার উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ভিডিও দেখুন কমেন্টে’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘fullmoviedownload76246.blogspot.com’ নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। সাইটে ‘রাষ্ট্রপতি মারা গেছেন — কিন্তু দাফন এখনও হয়নি!’ শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তবে এর প্রকাশকাল উল্লেখ নেই। 

Collage: Rumor Scanner

কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, দেশ যখন ভয়াবহ নিরাপত্তাহীনতা, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন জাতির আশার শেষ আলো হিসেবে তাকিয়ে ছিল রাষ্ট্রপতির দিকে। কিন্তু বাস্তবতা যেন আরও নির্মম। রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু আজও নিশ্চুপ। কোনো বক্তব্য নেই, কোনো নির্দেশনা নেই—বঙ্গভবন যেন এক নির্জন সমাধিক্ষেত্র। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “এই মুহূর্তে যখন দেশের প্রতিটি কোণে অরাজকতা, তখন রাষ্ট্রপতির নিরবতা একধরনের আত্মহত্যা। তিনি বেঁচে থেকেও মৃত।” ফলে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—রাষ্ট্রপতি কি আদৌ জীবিত? ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আজ ব্যঙ্গাত্মক পোস্টার দেখা গেছে—“রাষ্ট্রপতি মারা গেছেন, কিন্তু দাফন এখনও হয়নি!” জনতার ক্ষোভ এখন কেবল প্রশাসনের প্রতি নয়, বরং শীর্ষ নেতৃত্বের চরম ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি। এদিকে রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। তার এই নিশ্চুপতা রাষ্ট্রকে ধাবিত করছে এক ভয়ঙ্কর অনিশ্চয়তার দিকে। বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, যদি খুব শিগগির কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা হয়, তবে এই রাষ্ট্রপতিশূন্যতা বাংলাদেশকে আরও ভয়াবহ সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। দেশের এই ক্রান্তিকালে এই পোস্টটি মহামান্য রাষ্ট্রপতির নজর কাড়তে সর্বোচ্চ সংখ্যক শেয়ার করার অনুরোধ রইলো যেন রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত পৌঁছায়। আশা করি সংবাদটি মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি দেখে তাহলে অবশ্যই কোন ধরনের কঠিন পদক্ষেপ নিবেন। 

উক্ত সংবাদটি পর্যালোচনা করে এতে রাষ্ট্রপতি মৃত্যু দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। সেখানে, মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে দেশের বর্তমান খারাপ পরিস্থিতি উল্লেখ করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির মারা যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে উক্ত বিষয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হতো। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। এছাড়া, আগামী ৬ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় সফরে নিজ জেলা পাবনা যাবেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। 

উল্লেখ্য, ফ্রি ডোমেইনের ব্লগসাইট ব্যবহার করে অপতথ্য ছড়ানোর এই পদ্ধতি গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যাতে বেরিয়ে এসেছে এসব সাইটের পেছনে কারা আছেন, কারাই বা এসব সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এবং কাদের এসব অপতথ্যের শিকার বানানো হচ্ছে। 

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মারা গেছেন শীর্ষক তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img