শিশু ধর্ষণকারী ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ঘটনাটি দুই বছর আগের

সম্প্রতি “শিশু ধর্ষণকারী ক্রসফায়ারে নিহত!!থানা থেকে আসামিকে নিয়ে গিয়ে প্রকাশ্যেই দিলেন সাজা,আতংকে এলাকাবাসী।” শীর্ষক শিরোনামের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশু ধর্ষণকারী ক্রসফায়ারে নিহতের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২০ সালের ঘটনা।

অনুসন্ধানে SNTV নামক ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ২২ মে “ক্রসফায়ারে নিহত ধর্ষক। পবিত্র রমজান মাসে র‍্যাবের এমন বিচারে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ না আমি মনে করি সারা বাংলাদেশের মানুষ শাস্তি পেলেন।” শীর্ষক শিরোনামের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত শিশু ধর্ষণকারীকে ক্রসফায়ারে নিহতের ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘কালেরকণ্ঠ’ এর অনলাইন সংস্করণে ২০২০ সালের ২২ মে “টঙ্গীতে বন্দুকযুদ্ধে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি নিহত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে প্রদত্ত তথ্য, ২০২০ সালের ফেসবুক পোস্ট এবং সাম্প্রতিক সময়ের প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় ঘটনাটি দুই বছর পূর্বের।

পরবর্তীতে, উক্ত ঘটনা নিয়ে ২০২০ সালে দেশীয় গণমাধ্যম সময় টিভি, সমকালযমুনা টিভি এর অনলাইন সংস্করণে উক্ত দাবিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, ২০২০ সালের ১৬ মে টঙ্গীতে চাঁদনী নামের ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রথম আসামি আবু সুফিয়ানকে গ্রেফতার করতে একই বছরের ২১ মে রাতে টঙ্গীর মধুমতি রেললাইন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায় র‍্যাব। উক্ত অভিযানে র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় অভিযুক্ত আবু সুফিয়ান।

তবে, সাম্প্রতিক সময়ে দুই বছর পূর্বের ঐ ঘটনাটিকে কোনো প্রেক্ষাপট ও তারিখ উল্লেখ ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ও পেজ হতে পুনরায় প্রচার করার ফলে ঘটনাটিকে সাম্প্রতিক ভেবে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ছে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৬ মে টঙ্গী মধুমিতা রেলগেট এলাকার একটি ময়লার স্তূপ থেকে চাঁদনী নামের ৭ বছর বয়সী প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া এক মাদ্রাসাছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই শিশুকে ধর্ষণের পর গলা টিপে এবং দুই পায়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বলে সেসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর করা তদন্ত ও লাশের ময়নাতদন্তের মাধ্যমে জানা যায়।

প্রসঙ্গত, উক্ত ঘটনায় ১৭ মে রাতে টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকা থেকে নিলয় নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরবর্তীতে নিলয় আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছিলো সে ও আবু সুফিয়ানসহ ওই শিশুকে ধর্ষণ করেছিলো।

সুতরাং, ২০২০ সালে টঙ্গীতে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ধর্ষণ মামলার আসামি আবু সুফিয়ানের মৃত্যুর ঘটনাকে প্রেক্ষাপট এবং পূর্বের তারিখ উল্লেখ ব্যতীত অপ্রাসঙ্গিকভাবে সম্প্রতি নতুন করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img